পূর্ব দিগান্তে রবির আলো
জানালার পর্দা ভেদ করে ঘুম ভাঙ্গালো ।
চারি দিকে পাখিদের গুনজন
ঝিরি ঝিরি বাতাসে কোন সে ফুলের গন্ধ ।


কেউ যেন কানে কনে বলে যায়
এলো ঋতুরাজ বসন্ত ।
আমি আবেগের টানে নগণ পায়ে
বাড়ির উত্তর পাশের পথটা ধরে
ছুটে যায় বসন্ত আহরণে ।


শান্ত পরিবেশে,
চলেছি যেন স্বর্গীয় কোন দেশে ।
কোন সে গাছের ডালে,
ডাকছে মহুয়া ।
ঝির ঝির বাতাসে
ঝর ঝর ঝরছে বৃক্ষের পাতা ।


আমি যেন অচিনপুরের রাজা,
নয়-তো কোন জমিদার বাড়িতে
বিবাহের জন্য আসা।
তাই হয়তো পাপড়ি ছড়িয়ে
বরন করছে ওরা ।


আমি আনন্দে দিশেহারা
দুহাত বাড়িয়ে করেছি ঝরা পাতা ধরার চেষ্টা।
হঠাৎ পায়ের তলায় গেঁথেছে বিষাক্ত কাঁটা,
এ যেন অসহ যন্ত্রনা ।


লুটিয়ে পড়েছি মাটিতে
নিচে যেন ঝরাপাতার বিছানা ।
তখন কানে বাজে
অচিন সুর ভাসা ভাসা।


বলে বসন্তে ঝরাপাতা!
আমারো তো ছিল জাতি সত্তা,
বৃক্ষের মাথায় জন্ম আমার
তবে কোথায় তার পূর্ণতা ?


সহেছি গ্রীস্মের উত্তাপ বর্ষার বারি ধারা
প্রবাল ঝড়ো হাওয়া।
কনকনে শিতের কাপন ঘন কুজ্ঞঝুটিকা ।
দিয়েছি জাতিকুলের নিবিড় ছায়া ,
ধরনীর বুকে এক স্যামল সোভা ।


আজ পাদুকার নিচে মড়মড়ে শব্দ,
তোমাদের কাছে কি মধুর বাজনা ।
এ আমার বুকের পাজর ভাঙ্গা আর্তনাদ
বেদনা দায়ক যন্ত্রনা ।


আমি বসন্তের ঝরা পাতা ।
এখন নির্ভিন্তে সর্বহারা
ধুলিকনার বুকে লুটিয়েছি মাথা ।
তবুও পায়নি স্বস্তি পাই-নি বসন্তের মায়া।