বেঞ্চিটা পড়ে আছে উঠোনের এক কোণে,
সময় যাচ্ছে দ্রæত অনন্তের দিন গণে।
দাদু আজ বসে নেই, বেঁচে নেই আর!
ঘামে ভেজা দেহে সাঁটা মালকোঁচা ধূতি তাঁর।
জলচৌকিতে রাখা পিতলের গড়গড়িটা,
একপাশে হেলান দেয়া দাদুর হাতের ছড়িটা।
তামাক সাজিয়ে দিত জমশেরালী কামলা,
কৈবর্ত দুলুর মাথায় মাছ ভর্তি গামলা।
দলবেঁধে সকল ছেলে ঝাঁপ দিত নদীতে,
বিকেলবেলা দাদু যেত সদরের গদীতে!
বারান্দায় ছিল ঢেঁকি, ডাল-ভাঙার জাতা,
খড়ম ছিল কাঠের তৈরি, মাথালের ছাতা।
তামাকের গন্ধ নেই, নেই গড়গড় শব্দ,
পরিশ্রম ভুলে চাষী তাতেই যেন জব্দ!
আঙিনায় ধানমাড়াই গোরুর লেজে ধরা,
চক্কর খেতে খেতে কভু মাথা ঘুরে পড়া!
কাঠের পিঁড়িতে বসি ভাত খাওয়া গেল কই?
পাটের তৈরি শিকায় নাই গামছাপাতা দই!
লালি দিয়ে তামাক মাখা, তাফালেতে ধান,
পালেরনৌকা সারি সারি, মাঝির মুখে গান।
বীজতলায় ফুটবল খেলা বৃষ্টিমুখর দিনে,
ছেলেরা সব ব্যস্ত এখন মোবাইলের স্কীনে!  
সুপারি গাছের ডগায় শালিকের ছানা,
প্রখর রোদেতে এখন বের হতে মানা!
জংধরা লাঙ্গল পড়ে আছে গোহালে,
কঞ্চির কলমে লিখা হয়না রাত পোহালে।