সুউচ্চ পর্বত' পরে দাড়ায়ে বৃক্ষদলে
প্রবলও ঈর্ষাভরে রহিছে হিমাচলে ৷
পর্বত পাদদেশের বিটপী সকলে,
করিয়া ম্লান বদন দাড়ায়ে ভূতলে ৷
প্রবল হর্ষভারে কহে বৃক্ষদলে-
দাড়ায়ে রহিছে যারা সিন্ধু– অচলে,
ওহে ভূতল বৃক্ষশ্রেনী," কী নিঠুর—
তব প্রতি এ মোহিত অবনী! !
আমরা থাকি হেথা রাজকীয় চালে
তোমরা কষ্ট পাও লুটায়ে ভূতলে,
কভু বা পিষ্ট হও মানবপদ'তলে
কভু বা ভাসো বাণের জলে ৷
পরক্ষণে পূর্রবৎ কহে,"—
সহিতে পারিনা তব এমনও ব্যাথা,
কী দোষে করিল দোষী জীবনবিধাতা!!
ভাগ্য তব প্রতি অতি নির্দয়,
তব গাত্রে তাই মলয় ও নাহি বয়!
আবারও কহে,"—
আমাদের শিরঃ সে ত পর্বত সমুন্নত,
তোমরা ধরাতলে নিত্য অবনত ৷
আমরা যদি না করি দয়া তব প্রতি;
মরবি মরবি তোরা শীগ্রই অতি ৷
সূর্য্য কীরণ যবে পতিত হেথায়,
পল্লব প্রসারিয়া তাহা পাঠায় সেথায়;—
সে নির্মল কীরণ করিয়া গ্রহন
তোমরা অভাগারা করো জীবন ধারন ৷৷
যদি না করি মোরা অংশু সমর্পণ,
কেমনে বাঁচবি তোরা ! অতি ক্ষুদ্র প্রান ৷
হ'তে না শেষ সেই অতি কটু বচন-
হঠাৎ পর্বতগাত্র কম্পিত ভীষণ ৷
কাঁপিয়া শৈল অচল প্রবল ভূ–কম্পন,
পর্বত বৃক্ষদলে লভিল পতন!!
প্রবলবেগে যবে ভূতলে শয়ান,
লজ্জিতচীত্তে খুলিয়া নয়ান;
দেখিল সম্মুখ্যে ভূতল বৃক্ষসকল
দাড়ায়ে রয়েছে দৃঢ় অবিকল!
স্বীয় শিরঃ লভিয়াছে ভূতলবৃক্ষ পদতল ৷
ভুতল বৃক্ষদল যত বলে তত দোলে,"—
খুব ত বলিলে পর্বতবৃক্ষদল!
তবে কেনো লভিয়াছো বিষাদ-ভুতল?
বিরূপ নহে মোদের প্রতি এ ধরনী;
বিরূপ তব প্রতি বুঝিছ এক্ষনী?
খুব ত বলিলে শিরঃ পর্বত সমুন্নত,
কোথা গেল সে মান কোথা উন্নতি!!


উচ্চাসনে বসে যারা নিচে নাহি চায়
অপরে ভাবে দুঃখী,অতি অসহায়
যতই থাকো না কেন পর্বতগাত্র চুমে,
একদিন পতিত হবে এভাবেই এ ভূমে ৷
করো স্নেহ, সবারে দাও সম্মান,
পতিত হলেও তুমি পাবে না অসম্মান ৷
প্রচুর সম্পদে যে জন না করে বড়াই
না ভাবে দুঃখী কাউকে না অসহায়,
সম্পদ যবে চলে যাবে—
সে জন তাহার যোগ্য মান পাবেই পাবে ৷


দিলে আঘাত,করিলে দৃঢ় অবহেলা
তাহার তরে সে জন পাবে শুধু হেলা ৷
                             সংক্ষেপিত............।