অভ্রভেদী শৈল হ'তে আসিয়াছে ডাক,
এবার আমায় হ'তে হবেই নির্বাক ৷
স্তব্দমাঠ,সুস্কতৃণ,দন্ডায়মান গুবাকসারী-
নিরবে মম যাতনে না করিবে আহাজারী !


কতকাল হতে আমি এই পথের পথিক,
হাটিতেছি পথ অপার,অসীম নানাদিক ৷
আমারে চিনিয়াছে সবে;  আমি বর্বর!  
মম শোণিতমাঝে বর্বরতার ঘনঘোর রব ৷


এ দিঘী, বৃক্ষ,কাননপ্রান্তর সকল,–
সেদিনও রহিবে জানি অসার অবিকল!
শুধু রহিব না আমি এ পথে আর—
মম পদস্পর্শণ এ পথ না লভিবে পুনর্বার ৷


পবনদ্বার মোরে করিবে না আহবান,
কাঁদিবে না কেহ লাগি মম তিরোধাণ ৷
অবগুন্ঠন টানিবে না কোনো বধু মম লাগি;
মম প্রাণও প্রস্থানে কেহ হবে না বিবাগী ৷


মম স্মৃতি কারও মনে করিবে না বিরাজ,
ডাকিবে না কেহ মোরে প্রসারি হৃদিদেরাজ ৷
কিন্তু পদধুলা দলিত মলিন তৃণসকল–
জানিবে রহি'ছি তব মাঝে সেদিনও অবিকল ৷


যেদিন মোর নেত্রপত্র মুদিবে ঘোর নিদ্রারবে!
পাবে না ফিরিয়া মোরে ডাকিলে স্ব- রবে ৷
মমপদ মলিন পরশ ধূলি' পরে,
তাহাও লুপ্ত হবে ক্রুদ্ধসমীরক্রোড়ে ৷


এই নীলাম্বর,দিঘীউৎপল,অভ্রআবির,–
সকলে ফিরাবে দৃস্টি, যবে হব স্থবির ৷
মোর মর্মআর্ত্বী ধ্বণীবে না কারও স্বরে,
মম হৃদিবীণা বাঁজিবে না নবসুরে ৷


অবলুপ্ত হবে মম শিঃর কোমল মৃত্তিকা' পরে–
মোর মগজকোঠরে বাধিবে নীড় পোকামাকরে!
মোর অক্ষিপত্রে তবু,আসিবে জানি নীর,
করুণবেদন মোরে করিবে অধীর ৷


পাথরচোখে আমি দেখিব না আর!
জাজল্যমান চন্দ্র,সূর্য্য,নক্ষত্র বিহার ৷
ধ্বণীবে না মম কন্ঠে বেদনার বাণী;
হরশে আহিত কোনো স্নিগ্ধ সুরাগমনী ৷


কোনো অক্ষি রহিবে না চাহি মম পথপানে,—
আমারে ডাকিবে না কেহ স্বীয় চেতনাধ্যানে ৷
হয়তো কাহারো অক্ষি বহিয়া ঝরিবে নয়ননীর!
ক্ষণিকের তরে মম স্মৃতে হইবে অধীর ৷


কিন্তু হায়!  সময় কোথায় ভাবিবে সর্বক্ষণ–
যে ধরায় সতত প্রাণের আলোড়ন,
ঠাই! কোথায় এই হীন,অধমের?
দেহচ্যুত এক প্রান............।