কৌমুদী ছড়ায় ঝলমলিয়া  বাড়ির উঠোন জুড়ে,
নিশি ক্ষয় রোজ দাদুর গল্পে করুণ মজার সুরে।
করছি শ্রবণ কয়েক মোরা বসিয়া তাহার পাশে,
আড়ালে হইয়া রসপ্রিয় দাদী খিলখিলয়া হাসে।


কহিলো যখন  যুদ্ধ কাহিনি   বুক কাঁপিছে ডরে,
দাদু লুকিল ঘরের কোণে খোদার জিকির ধরে।
ভাবলো দাদু   গাঁও পুড়িবে  পাক-বাহিনীর দল,
দাদুর সাড়ায়  গাঁও গেরামেই উঠলো টলোমল।


গাঁও পুড়িলে কোথায় হইবে মাথা গোঁজার ঠাঁই!
ভাবছে দাদু অসুরের থেকে কিভাবে রক্ষা পাই।
আঁধার নামিতে পচ্চিমে ঐ ডুবিয়া গিয়াছে রবি,
ধীরে ধীরে হয়  থমথমে রাত  নির্ঘুম কাটে সবি।


ঘরের অদুর তৃণের পালায়  শব্দ শুনিয়া রোজ,
কহিলো দাদু আসিল কেবা,করছে বুঝি খোঁজ!
কাতরে তাহার জুটেনা খাবার রিক্ত উনান হাসে,
তার মাঝেঐ হুড়মুড় ধ্বনি কর্ণে আসিয়া ভাসে।


চুপসে দাদুর মুখখানা তার- লুকছে ধীরে ধীরে,
দুই-নয়নে  মরণদশার   উঠিলো ছাপিয়া ঘিরে।
দাদুর মুখের নিদারুণ গল্প শুনেছি ধীরতা ধরে,
জানতে অধীর দাদুর মুখেই  কি হইয়াছে পরে!


বললো হেঁসেই  রসিক দাদু  শুনরে নাতির দল,
ভয় পেয়েছি মিথ্যে শুধুই  আঁখিতে মোর জল।
ডরের ত্রাসে  গিয়াছি ভুলে তুলিতে গাভী মোর,
গাভীর পায়ের আঘাত হানি  তৃণ করে হুড়মুড়।


হাসিয়া উঠিল নন্দ-মদন,আমরা কয়েক মিলে,
প্রবল ভয়েই  থরথরিয়া  কাঁপছে  দাদুর পিলে!
বড্ড রসিক  মিষ্টি দাদু  কাহিনী শোনায় রোজ,
পাড়ার লালু, মদন, কালু করিয়া সবার খোঁজ।