চার-দেয়ালের জীবন
       ক্রমিক-নংঃ ২৪৫
   ______ শাহাদাত সোহেল নীল.(কাকতাড়ুয়া)


জানালার এপাশে দাড়িয়ে, পর্যবেক্ষণ করেছি পৃথিবীকে
বহুবার-বহুরূপে। ঐ চার-চারটে দেয়াল ছিল,
যেন আমার জীবনের অতিগুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ।
বহুবার চেয়েছি নিজেকে উন্মুক্ত করতে
কিন্তু, সাহস ছিলো একেবারে।
অতঃপর, শিরা-ধমনীতে পচনধরার পরে বুঝিলাম,
আর পারব না এভাবে বাঁচতে।
কাটাতে পারব না চার-দেয়ালের জীবন।
তবুও পারিনি ভাঙ্গতে সেদিন
সমাজের ঐসব অদ্ভুত যুগের অনুপযোগী নিয়ম।
অতঃপর, বাধ্য হয়ে বাস্তবতা ভুলে গিয়ে
সুখ খুঁজতে লাগিলাম কল্পনাতে।
তার পর থেকে কাটাতে লাগলাম চার-দেয়ালের জীবন।।


কখনো নিজেকে ভেবেছি আনমনে
হিমালয় বিজয়ী নিশাত মজুমদার।
কল্পনায় অনুভব করেছি, মাথার উপরে সু-বিশাল আকাশ
পায়ের তলে জমাট বাঁধা বরফের আস্তরণ।
আবার, কখনো ভেবেছি নিজেকে অতিথি পাখি
এদেশ হতে ওদেশে ঘুরে-ফেরি। যদিও বাস্তবতায় আমি
কখনো মাড়াতে পারিনি দোরের চৌকাঠ।
মনে ছিল সর্বদায় ভয়, মাড়ালে যদি লোকে মন্দ কয়।
তাই তো নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলাম, চার-দেয়ালের মাঝে।।


গাছ-পালা, নদ-নদী এভাবে দেখতে থাকি
জানালার ঘিল হাতে বাহিরের পৃথিবীকে।
ওপাড়ে গিয়ে পৃথিবী দেখার স্বাদটাকে
হত্য করেছি গলাটিপে, সেই অনেক দিন আগে।
যখন জানতাম না স্বাধীনতা কি! জানালার এপাশে দাড়িয়ে
নদীর কূ-কূ শব্দের গান শুনি। শুনি আমার আঙ্গিনায় বসবাসরত চড়ুই-শালিকের মন ভোলানো মধুর ডাক।
এভাবে হারিয়ে ফেলেছি নিজের অধিকার,
অস্তিত্ব অতঃপর স্বত্তাধিকার। তাই তো আজও হচ্ছি
লোভ-লালসা আর নির্যাতনের শিকার।।


রচনাকালঃ ২৩--০৯--২০১৭ইং
বাগবাড়ী, লক্ষ্মীপুর।


[যেকোন ভুল-ত্রুটি মতামত অবশ্যই জানাবেন
এবং ভাল লাগলে শেয়ার করবেন]


প্রকাশিতঃ {যৌথকাব্যঃ দুঃখওয়ালা ২০১৮ইং}