বিংশ শতকের দ্বিতীয় দশকে
১৭ মার্চ কোন এক ক্ষনে,
ক্ষণজন্মা আসিলো ধরায়
ফুটিলো গোলাপ ঘরের কোনে।
এ কোল সে কোল, মায়ের কোলে
খালা ফুফু সাথে দোলনায় দোলে,
নানার পিঠে বাবার কাঁধে
কত যে খুশি কান্না ভুলে।
হাঁটি হাঁটি পা পা সাতটি বছর
সাতাশ সনের শুরু,
গিমা ডাঙার ঐ প্রাথমিক স্কুলে
মন করে দুরু দুরু।
তিনটি বছর কাটলো সেথায়
দশেতে দিলে পা,
শীতানাথ একাডেমির তৃতীয় শ্রেণীতে
রাখিয়া আসিতো মা।
চৌত্রিশ সনে মাদারীপুরে
ছিলনা মনে শোক,
হঠাৎ করে ঘাড়ে চেপে বসে
বেরি বেরি এক রোগ।
দুই তিন সন কাটিল তাতে
মুক্ত হলো রোগ,
স্কুলে যাওয়া হইল শুরু
কাটিল মনের শোক।
স্কুল ভিজিটে ফজলুল হক
তার সাথে পরিচয়,
বড় হও বাবা করিল দোয়া
তোমার হবে জয়।
জয় জয় গুরু,জয় হলো শুরু
অন্যায়ের প্রতিবাদ,
উন চল্লিশের কারাবরণে
জোয়ারে ভাসিলো বাঁধ।
ন্যায়ের পক্ষে বজ্র কঠিন
আপোষহীন এক নেতা,
সমাজে যারা আপদ ছিল
পাইল মনে ব্যথা।
বিদুষী নারী ফজিলাতুন্নেসা
খানদান ঘরের ঝি,
মা বাবার চাপেতে বিয়ে
ছিল বা করার কি।
সহধর্মিণী সহচার্যে
বাড়িয়া গেল মান,
চুয়াল্লিশ সনে নিখিল বঙ্গ মুসলিম লীগে
করলো যোগদান।
এক এক করে চলছে এগিয়ে
কে করে তা রদ,
ফরিদপুর ডিষ্টিক্ট এসোসিয়েশনে
পেলেন সম্পাদকের পদ।
সাতচল্লিশে বি এ পাশ করে
রেজাল্ট ছিল ভালো,
ন্যায় নীতিতে ধন্য জীবন
দেশের জন্য আলো।
দেশের জন্য কারাবরণে
টলিত না তাঁর মন,
সহস্রাব্দের সেরা বীর পুরুষের
এটাই ছিল পণ।
রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই
নইলে পাবেনা পার,
আট চল্লিশ এগারো মার্চ
তাই হলো গ্রেফতার।
পনেরো মার্চ মুক্তি পেলেও
থেমে নেই কাজ তাঁর,
কর্ডন প্রথার বিরুদ্ধে গেলেই
পুনরায় গ্রেফতার।
থেমে নেই কিছু বীর পুরুষের
দুর্ভোগ যত হোক,
৫৫ সনে আওয়ামী লীগের
যুগ্ম সম্পাদক।
এমনি ভাবে দিন কেটে যায়
বাড়িয়া চলিল মান,
বীর বাঙ্গালীর প্রাণ পুরুষ হয়ে
ভরালো সবার প্রাণ।
তেপ্পান্ন সনের ১৬ নভেম্বর
সাধারণ সম্পাদক,
পাক হানাদের নড়িল টনক
বাড়িলো দুর্ভোগ।
সত্তরের ঐ নির্বাচনে
২৯৮ আসনে জয়,
গোপাল গঞ্জের আসন জিতিলে
শক্তি অটুট রয়।
পাক হানাদার হায়নার বেশে
ক্ষমতা রাখিল হাতে,
জনগণ সাথে দাবি আদায়ে
ছুটিল দিনে রাতে।
বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধূ
মুখরিত সারা দেশে,
পাক হানাদার দিশাহারা তাই
হইল পাগল বেশ।
এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম
বজ্র কঠিন ডাক,
বীর সেনানী ঝাঁপিয়ে পড়িল
দেশ হয়ে গেল ভাগ।
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি
আমার দেশের গর্ব,
নিজের কাছে যা কিছু ছিল
বিলিয়ে দিতেন সর্ব।
যতদিন তিনি জীবিত ছিলেন
দেশের জন্য কাজ,
শততম জন্ম দিনে
স্মরণ করি আজ।
আমার বন্ধু তোমার বন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমান,
ধন্য তুমি, স্বার্থক তুমি
বীর বাঙ্গালীর মান।
(তথ্য সূত্র: বঙ্গবন্ধু অনলাইন আর্কাইভ )