ঝরাপাতা-পর্ব-৪
**********
তীরের বেগে ছুটে চলে সাইকেল
তখনও ডুবে যায়নি গোধূলির বিকেল।
আঁকা বাঁকা রাস্তা পার হয়ে যায় টিলার পানে চেয়ে
লক্ষ্য ভ্রষ্ট হয়ে বেচারা পড়ল গিয়ে খাদানের এক কোনে।
গড়িয়ে গিয়ে পড়ল নীচে
বেদনা ক্লিস্ট শরীরে তাকিয়ে দেখে
তিন কিলোমিটার রাস্তা কমে গেছে।
মুখ তুলে তাকিয়ে দেখে
দামি আবাসের পিছনে
উঁচু উঁচু দেওয়াল আর সেই পাঁচ নেড়ি কুকুর
দাঁড়িয়ে সমুখ সনে।
হৃদপিণ্ডের ধুকপুক যন্ত্র বেজে ওঠে বাদ্য যন্ত্রের মতো
হাঁ করে তাকিয়ে  আছে
সারমেয়র দল তাদের স্বভাব মতো।
আমতা আমতা করে বললো
এবারের মতো যেতে দে
আর ছুড়বো না কখনো পাথর
আর কখনও ধরবো না এই পথ।
কুউউ করে শব্দ করে পাঁচ জনে একসাথে নাড়লো লেজ
কিছুই বললো না
বিশেষ কিছুই দেখালো না হুঙ্কার বা তেজ।
মনে মনে ভাবলো এরা কি বশে এলো?
না অন্য কিছু হলো!


দেখতে দেখতে ঝড়ের হওয়া
আর বর্ষা গেল বেড়ে
টিলার পানে তাকিয়ে দেখে
এক রাজ কুমারীর রূপের ছ্বটা
ছড়িয়ে আছে সারা ঘর জুড়ে।
বর্ষা ভিজা তনুদেহে
গেল উঁচু দেয়ালের ধারে
দূর থেকে যদিও বা দেখা যাচ্ছিল
এখন সবই ডুবে গেল অন্ধকারে।
পায়ে পায়ে চুপিসারে এগিয়ে গেল টিলার আরো কাছে
মস্ত বড় গেটের সামনে দুটি বিশাল মূর্তি দাঁড়িয়ে আছে।
ওরা কি ছদ্মবেশী মানব না কি শুধুই পাথরের দেহ ধারী।
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছে আকাশ
এ নয়তো কোনো মায়াপুরী।
হঠাৎ কানে এলো মন বিহ্বল করা গান
শীতল হয়ে যায় শরীরের
কলাকোষ মন হিয়া আর অশান্ত প্রাণ।


"ঝরা পাতা ঝড়কে ডাকে
বলে তুমি নাও আমাকে
আমায় কেনো একটি বারো ডাকলে না।
লতা যেমন ফুল শাখাকে
ভালোবেসে জড়িয়ে থাকে
আমার হয়ে তেমনি কেন থাকলে না"।


আকাশ বৃষ্টিতে ভিজে মন্ত্র মুগ্ধের মতো শুনছিলো গানখানি
গান যে কখন শেষ হয়ে গেছে
তার কোনো খবর সে রাখে নি।
ভাবছিলো এ তো গীতশ্রী 'র গান
এত মিষ্টি গলা এতো সুন্দর গায়।
সম্বিৎ ফিরলো-
যখন কানে চিৎকার এলো কে ওখানে?
আমতা আমতা করে কাঁপা কাঁপা গলায় বললো
আমি আমি আকাশ
খাদান থেকে গড়িয়ে এসে পড়েছি
এই প্রাসাদের সামনে।


ক্রমশ.......