হে মাঘ মাসের বহু প্রতীক্ষিত বসন্তপঞ্চমী তিথি,
তোমার ঝরা পলাশে লাল হয়ে উঠতো বনবীথি।
একদিকে আমবাগানে সদ্য বিকশিত নতুন মুকুল,  
অন্যদিকে প্রকৃতিকে সাজিয়ে তুলতো উদাল ফুল।    
শীতের কনকনে অনুভূতি তখন ক্রমশঃ ম্রিয়মান,      
বিদ্যার্থীর কন্ঠে উচ্চারিত হত বাগদেবীর জয়গান।    
মণ্ডপসজ্জা-ভোগের থালা-অঞ্জলীর মন্ত্রোচ্চারণ,
পরিশেষে যজ্ঞের ফোঁটা আর মহাপ্রসাদ বিতরণ।
ঘি-হলুদ-আদা-নুন-পাঁচফোড়ন আর লংকাকুচি,  
পেটপুরে খেতাম বাঁধাকপির তরকারী আর লুচি।
বই-খাতা-কলমের থেকে নিতাম একদিনের ছুটি,    
মুক্তির আনন্দে সহপাঠীদের সঙ্গে বাঁধতাম জুটি।      
পূজো পরিসরে সুগন্ধি ছড়াতো ধূপকাঠি আর অগুরু,
বুকের ভিতরে বিরহকাতর মনটা করতো উড়ু উড়ু।  
দিনে যেহেতু ঘুমিয়ে থাকে গ্রহ,চন্দ্র আর নক্ষত্র;      
প্রেম নিবেদনের মিলতো সকলের অবাধ ছাড়পত্র।    
ইচ্ছা হত দ্বিধা-দ্বন্দ্ব দূরে ঠেলে তার হাতে হাত ধরি,    
সেদিন যে ছিল আমার ভালোবাসার প্রথম হাতেখড়ি।
দিবাস্বপ্নের মাঝে যখন স্মৃতিমধুর ছায়াপথে পা বাড়াই,
মনে হয় সেই সোনালী দিনগুলিতে আবার ফিরে যাই।