দুই অক্ষরে নামটি তব, হয়না কাহারও সহিত তুলনা;
আদর-সোহাগ, মায়া-মমতার গুণে তুমি পরিপূর্ণা।
ধারণ করিয়া মোরে গর্ভে, নাভিদেশে করিলে বন্ধন;
এই নিথর দেহে তুমি জাগাইলে জীবনের স্পন্দন।
তব লহুতে পুষ্ট হইয়াছে মোর ধমণী, শিরা, স্নায়ু;
সর্ব বাধার সহিত লড়িয়া লাভ করিয়াছি প্রাণবায়ু।
চক্ষু মেলিয়া দেখিয়াছি সংসারের মায়াবী আলো,
তব উষ্ণতায়, স্নেহের সিক্ততায় ছিলাম ভালো।  
ক্রোড়ে শয়ন করাইয়া পান করাইলে তব দুগ্ধসুধা,
মোর লালন-পালন হেতু ত্যজিলে নিদ্রা-তৃষ্ণা-ক্ষুধা।
স্বপন দেখিতাম তব ঘুমপাড়ানি গান শ্রবণ করিয়া,
বারংবার হোঁচট খাইয়া দাঁড়াইতাম তব তর্জনী ধরিয়া।
তুমি ছিলে মোর ছায়াসঙ্গী প্রভাত হইতে অপরাহ্ন;
মম ক্ষুধা মিটাইতো তব হস্তে পরিবেশিত পরমান্ন।
তব মাঝারে পাইয়াছিলাম জীবনে প্রথম নারীর স্পর্শ,
মম স্মরণে-মননে-চিন্তনে তুমি যে মোর আদর্শ।
তব সান্নিধ্যে অতিক্রম করিলাম শৈশব-কৈশোর-যৌবন,
তুমি যেন মম গুরুকূলের পাঠশালা আর তপোবন।
দিবস-শর্বরী তব পরশমণির প্রাঞ্জল পরশে,
শত বিরহাবর্তের ঘোরেও আমি থাকি হরষে।
তুমি মোর গার্হস্থ্য আশ্রমের আরাধ্যা গুরুজন;
শ্রদ্ধা-ভক্তির পুষ্প দিয়া নিত্য করি তব পূজন।    
তুমি যদি হইতে এ জীবনে প্রথম নারী এবং শেষ,
তবে কি আমি পোহাই অসহনীয় দাম্পত্যের ক্লেশ?