অফিসের মধ্যাহ্ন বিরতির অবকাশে,
যখন চোখের দুপাতা এক হয়ে আসে।
স্বপ্নের ফ্রেমে ভাসে এক উজ্জ্বল প্রতিকৃতি,
সে যে আমার মামার বাড়ির অমর স্মৃতি।    
এই বধির যান্ত্রিক সভ্যতার হুংকারের ফাঁকে,
সে যেন আমায় করুণ সুরে হাতছানি দিয়ে ডাকে।
মনে পড়ে বড় উঠান-লেপা দেওয়াল-ফেনার পুকুর,
সেই পাখী-ঝিঁঝিঁ পোকার সংগীতে মুখরিত দুপুর।
মনে পড়ে টিনের চালে বৃষ্টিফোঁটার ছন্দ,
সেই ভিজা ঘাস-মাটির সোঁদা সোঁদা গন্ধ।
মনে পড়ে সকালবেলার নিমের ডালে দাঁতমাজা,
সেই গরম গরম ডালভাত আর আস্ত মাছভাজা।
মনে পড়ে বিকালবেলার খেলাধূলা-গড়াগড়ি,
সেই অভিভাবকসুলভ শাসন আর কড়াকড়ি।
মনে পড়ে রাত্রিবেলার নকসী কাঁথা আর বালিশ,
সেই চোখে-মুখে হাত বুলানো ঘুমপাড়ানি মালিশ।
মনে পড়ে ডালে ডালে জুঁই-শিউলি আর জবা,
সেই ভোরের প্রথম সূর্যকিরণের রক্তিম আভা।
মনে পড়ে আম-জাম-কাঁঠাল আর তালের মিষ্টি গন্ধ,
সেই গ্রীষ্মের ছুটির এক মাসের আত্মহারা আনন্দ।
মনে পড়ে দুর্গাপূজোর সপ্তমী-অষ্টমী-নবমীর মজা,
সেই পেটপুরে খাওয়া মুরালি, খাজা আর গজা।
মনে পড়ে শীতকালে ভেসে আসা মাইকের হরিনাম,
সেই লুটের বাতাসা সংগ্রহের জন্য করা সংগ্রাম।
আজ সবকিছু যেন অন্ধকারে কোথায় হারিয়েছে,
মামার বাড়িও যেন আমাকে বিদায় জানিয়েছে।