ষোলো দিনের সফর অবশেষে হলো শেষ,
মনের কোণে রয়ে গেছে তার আবেশ।
কাটিয়ে উঠে ট্রেন আর সড়কপথের ধকল,
ভ্রমণের অ্যাপগুলি করলাম একে একে আনইনস্টল।
নিয়ে অসুস্থ শরীর আর নরম মন,
বিপদের ঝুঁকি নিয়েই বেরিয়েছিলাম করতে পর্যটন।
নিজেকে নতুন করে আবার করতে আবিষ্কার,
প্রথমে গিয়ে পৌঁছালাম মন্দির নগরী হরিদ্বার।
হরিদ্বারে আমাদের থাকা আর খাওয়ার মাধ্যম,
পূজনীয় গুরুদেব শ্রী রাম ঠাকুরের আশ্রম।
ভীমগড়ায় অটো রিক্সা থেকে নেমে হেঁটে,
এসে দাঁড়ালাম হর কি পৌরির ঘাটে।
সন্ধ্যা নামার সঙ্গেই বেড়ে গেলো আকর্ষণ,
মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে করলাম গঙ্গারতি দর্শন।
এই সংসারের পাপপঙ্ক থেকে পেতে পরিত্রাণ,
মা গঙ্গার পবিত্র জলে করলাম পুণ্যস্নান।
সতীপীঠ আর আনন্দময়ী আশ্রম ভ্রমণ শেষে,
গিয়ে উপস্থিত হলাম যোগ নগরী ঋষিকেশে।
প্রথমে যখন প্রবেশ করলাম পরমার্থ নিকেতন,
গঙ্গার স্রোতে শিবমূর্তি দেখে হলাম অচেতন।
গীতাকে আরো ভালো করে করতে অনুধাবন,
গিয়ে হাজির হলাম সশরীরে গীতা ভবন।
মানুষের পায়ের ভারে বারবার দিয়ে দোলা,
ভীষণভাবে কাঁপছিলো ঝুলন্ত সেতু রাম ঝুলা।
আগের দিন বেড়ে যাওয়ায় ব্লাড প্রেসার,
পরের দিন ট্রেনে ডাকতে হয় ডাক্তার।
জপ করে হরে কৃষ্ণের মধুর সুর,
উপস্থিত হলাম ইস্কনের হেডকোয়ার্টার শ্রীধাম মায়াপুর।
চৈতন্য ভবনে মিললো মাথা গোঁজার ঠাঁই,
গীতা ভবনের মহাপ্রসাদের কোন তুলনা নাই।
একদিকে নির্মীয়মান চন্দ্রোদয় মন্দিরের অনুপম ভাস্কর্য,
অন্যদিকে রাধা মাধব মন্দিরের বিগ্রহের মাধুর্য।
একদিকে পুষ্পসমাধি মন্দিরের উপর বিশাল ছাদ,
অন্যদিকে গর্ভগৃহে অধিষ্ঠিত ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ।
পরের দিন গঙ্গা পেরিয়ে নবদ্বীপ গেলাম,
গলিতে গলিতে চৈতন্য মহাপ্রভুর দর্শন পেলাম।
তীর্থ দর্শন শেষে যখন দেহ-মন প্রশান্ত,
বাড়ি ফেরার কথা উঠতেই হলাম ভারাক্রান্ত।