প্রিয় দুর্গাপুর,
আশা করি তুমি বেশ ভালোই আছো,
আমাকে কি একেবারেই ভুলে গেছো?
আগরতলা আমার জন্ম আর কর্মভূমি,
কিন্তু ছুটি কাটানোর ঠিকানা শুধু তুমি।
প্রতিবছর মামার বাড়ি বেড়ানোর ছলে,
তাই ছুটে যেতে যাই তোমারই কোলে।
যখন অবতীর্ণ হই দমদম বিমান বন্দরে,
অনাবিল আনন্দধারা বয়ে চলে অন্দরে।
যখন সামনে পড়ে এসবিএসটিসির বাস,
মনে তখন জেগে উঠে বাঁধনহারা উল্লাস।
চলতে চলতে যখন উপস্থিত হয় সিঙ্গুর,
লগ্নভ্রষ্টা কন্যার মত সে যে বিরহবিধুর।
মুভির ইন্টারভ্যাল রূপে আসলে শক্তিগড়,
ল্যাংচা-সীতাভোগ-সরভাজাতে দিই কামড়।
যখন কনডাক্টর ডাকে মুচিপাড়া মুচিপাড়া,
পথের ক্লান্তি ভুলে হই খুশিতে আত্মহারা।
যখন সিটি সেন্টারে নেমে মাটি স্পর্শ করি,
সপ্তর্ষি পার্কের উদ্দেশ্যে অটোরিক্সায় চড়ি।
মায়ের মন্দিরে গেলে কেউ ফিরেনা খালি,
সব ইচ্ছা পূরণ করেন ভিড়িঙ্গী শ্মশান কালী।
গেলে ইস্কন মন্দির ও শ্রী চৈতন্য গৌড়ীয় মঠ,
আধ্যাত্মিকতার আবেশে আবিষ্ট হয় হ্রদয়তট।
ফ্যাশন-ফাস্টফুড-পরিধান-বিনোদনের উৎসস্থল,
আমায় যেন হাতছানি দিয়ে ডাকে জংশন মল।
টিকিট কেটে প্রবেশ করলে কুমার মঙ্গলম পার্ক,
মনে হয় অর্জন করেছি প্রাপ্তবয়স্কের ল্যান্ডমার্ক।
অন্তরে ধারন করে সর্বসুবিধাযুক্ত শহুরে সংস্কৃতি,
আলিঙ্গনের উষ্ণতা নিয়ে স্বাগত জানায় বেনাচিতি।
আমিষ-নিরামিষ-ফলমূলের পসরা সাজিয়ে হাজার,
সুলভ মূল্যে ক্রেতার চাহিদা মেটায় মামড়া বাজার।
বিলাসবহুল ফ্ল্যাট চাইনা, বাস্তুভিটা চাই সাদামাটা;
তোমার বিশাল বুকে জায়গা দেবে আমায় দু'কাঠা?