কে তুমি হে হরিণী,আমার স্বপ্নচারিণী;
তোমার পানে চেয়ে চোখ ফেরাতে পারিনি।
প্রথম দেখাতেই যে দিয়েছি তোমায় মন,
তোমার পথ চেয়ে থাকব আমি আমরণ।
তোমার ঠোঁটের ফাঁকের মিষ্টি হাসির বিস্তৃতি,
প্রমাণ করে সৃষ্টিকর্তার অনুপম শিল্পকীর্তি।
নয়নাভিরাম তোমার ঐ অপার সৌন্দর্য্য,
বিলিয়ে দিয়েছেন বিধাতা তাঁর অকৃপণ ঔদার্য।
স্নিগ্ধ তোমার দেহকান্তি,লজ্জার শৃঙ্গারে সিক্ত,
তোমার যৌবন জোয়ারের কাছে আমি রিক্ত।
ছড়িয়েছ এ জগতে তুমি রুপের আভিজাত্য,
তোমার সম্মোহনী সুধা আস্বাদনে আমি ব্রাত্য।
তোমার আলুলায়িত কেশের বাহারি বর্ণচ্ছটা,
আমার মনের আকাশে আনে মেঘের ঘনঘটা।
তুমি প্রেমের বীজ করলে বপন আমার ঊষর বুকে,
তোমাকে পাবার ব্যর্থ আশায় মরছি অলীক সুখে।
স্বপ্নে-জাগরনে তোমার স্মৃতি শুধুই মনে জাগে,
যবে হতে দেখেছি তোমায়,ভুগছি পূর্বরাগে।
নিজেকে রামধনুর বর্ণময় সাত রঙে সাজিয়ে,
তুমি চলে যাও এই স্থবির জীবনে মৃদঙ্গ বাজিয়ে।
আমার মুখমণ্ডলে ছড়িয়ে দাও তোমার শাড়ির আঁচল,
দু'চোখে মেখে দিয়ে যাও তোমার ভালোবাসার কাজল।
রুনু-ঝুনু শব্দে নূপুর বাজে তোমার আলতা-রাঙা পায়ে,
সোহাগের মলম দাও মেখে মোর দাম্পত্যের ঘাঁয়ে।
তুমি আমার এই জীবননদের সোনার তরী,
তোমার তরে আজ মোর সকল রজনী কোজাগরী।
তুমি মোর স্বপ্নে দেখা রুপকথার রাজকন্যা,
রুপের গৌরবে,প্রেমের সৌরভে তুমি হয়ে উঠো অনন্যা।
আমি বাতাস হয়ে চুমু খেতে চাই তোমার ঐ গালে,
আমার প্রেম অমর হয়ে থাকুক লোকচক্ষুর অন্তরালে।
ইচ্ছা হয় বিবাহিত জীবনের অস্তিত্ব মুছে ফেলি,
আর তোমায় নিয়ে করি পঙ্কিল পুকুরে জলকেলি।
ওগো প্রিয়তমা,মোর প্রেম কি শুধুই মনের দুর্বলতা?
তবে কেন তোমার লাগি মোর পরাণে এত ব্যাকুলতা?
আমি বিনিদ্র রজনী,তুমি ঘুম পাড়ানিয়া গান;
আমি ছিয়াত্তরের মন্বন্তর,তুমি নবান্নের আঘ্রাণ।
আমি উপক্ষার,তুমি তরুক্ষীর;
আমি ছারখার,তুমি শান্তির নীড়।
তুমি আমার গ্রীষ্মের প্রখর দাবদাহ,
তুমিই আবার বর্ষার মনসামঙ্গলের বেহুলার বিরহ।
তুমি আমার শারদসন্ধ্যার শিউলি সুবাস,
তুমিই আবার হেমন্তের সোনালী ফসলের আশ্বাস।
তুমি আমার শীতের উত্তুরে হিমেল হাওয়া,
তুমিই আবার বসন্তের পলাশকাননে হারিয়ে যাওয়া।
জানি আমি তোমায় পাবোনা,তাই পেতেও চাইনা;
বরং যতদিন বাঁচি মনে মনে ভালোবেসে যাইনা।
তোমার জন্য আমি মরিতে যে পারি শত-সহস্রবার,
মরে মরে তবুও অভিলাষ হবে আবার জন্মাবার।