অরন্যের আদি অকৃত্রিম সৌন্দয নিয়ে যে মেয়েটি আমার দরজায় এসে সেদিন দাঁড়িয়েছিল , তাঁকে হঠাৎ করে দেখতে পেয়ে
মুগ্ধ না হয়ে পারলাম না ।
পরনে তাঁর গোলাপ রং শাড়ি দু হাঁটুর উপরে দোল খাওয়া । গায়ে দোপাটি নীল ছুঁইছুঁইখাটো হাতা ব্লাউস !
কৃষ্ণ কালো দীঘল চুল খোঁপার বন্ধনে বাঁধা উঁচু করে!
গলায় রুপোর সরু হার, নাকে ভারি নাকছাবি কানের লতি জুড়ে টুকরো বন ফুল !
তাঁকে দেখে সত্যি সত্যি থমকে গেলেম , ইট –পাথরের এই মরুময় শহরে সে যেন বড়ই বেমানান ! বড়ই বেমানান !


আমার সে চোখের ভাষা চটজলদি পড়ে নিয়ে বাড়ীর
দারোয়ান সাহস করে বললে ; মেম সাহেব, কাজ করার জন্য মানুষ চেয়েছিলেন
পথ দিয়ে যাচিছল , ধরে নিয়ে এলাম !
আমার সে মুহূর্তে বাহিরে যাবার বেজায়
তাড়া ছিলো ।লেবারদের মান্থলি স্যালারি দিতে হবে,
সামনে ফ্যাকটরির বোর্ড মিটিং , নতুন দুজন বায়ারের সাথে মিট করতে হবে ইত্যাদি , ইত্যাদি !
তাই ছুটতে হবে গাজীপুর ! জ্যাম, সময়
ওয়েদার এসবের কথা মনে পরতেই, বেশ একটু কঠিন সুরেই দারোয়ানকে বললাম;
তুমি জানো না ফ্যাকটরিতে যাবার সময় আমি বাহিরের কাউকে এন্টারটেইন করি না ?


ব্যাস এটুকুই যথেষ্ট !
মেয়েটি ভয়ে ভয়ে দাড়ালো গিয়ে দেয়ালের গভীর বুক জুড়ে দারোয়ানের ভয়ার্ত দু চোখ --- !
এসব আড়চোখে দেখতে দেখতে এক অদ্ভুত তৃপ্তিবোধ  নিয়ে বসলাম গাড়ির পেছনের সিটে !


পথচলা শুরু হলে , নির্ভার মনটা হঠাৎই যেন
প্রশ্ন কোরল নিজেকে; ঐ দেহাতি মেয়েটির অপার  সৌন্দরযের কাছে  হার মেনেই কি
একটু বেশী কঠিন হোয়ে গেলেম আজ ?মন বললো -হবে হয়তো , হয়তো বা না ------!


চলতে চলতে গাড়ির জানালার কাঁচ গড়িয়ে দেখি , যুবক দারোয়ানএকটা হলুদ গাঁদা গুঁজে দিচ্ছে মেয়েটির দোলন খোঁপায় ।
বড়ই কষ্ট পেলাম মনে ; আহা , মেয়েটি ক্যামেলিয়া হতে পারতো
না হয়ে হোল করুন গাঁদা ফুল !!