—ব্যর্থ পিতার অনুতাপ—


আমি এক ব্যর্থ পিতা সংসারে
ধরিত্রীকে ধরেছি আঁকড়ে—
কখনো কর্মকে করেছি ধর্মজ্ঞান
আলসের ব্যস্ততায় সময় করেছি ক্ষেপণ।
আজ অযথা ব্যস্ততার মাঝে—
"আব্বু তুমি কি ব্যস্ত আছো কোনো কাজে?"
আমি অফিসে, কেন কিছু প্রয়োজন?
"না ঠিক আছে" —বিরক্তির চিহ্ন নেই
কেটে দেয় লাইন;
রাজধানী থেকে কন্যা'র ফোন।
একই কণ্ঠ ভেসে আসে কিছুক্ষণ পর
একই কথন রেখে দেয় ফোন,
কাজে ব্যাঘাত না হোক পিতার
এমন নিঃস্বার্থ প্রত্যাশা কন্যার।
বেলা শেষে ফেরা কর্ম থেকে
ভাবি মনে,আত্মজার কী টাকার প্রয়োজন!
ফোন দেই,জানতে চাই তাকে—
"না এমনিই" শুধায় মমতায় পিতাকে।
সম্ভিত ফিরে আসে কিছুক্ষণে
দাঁড়িয়ে  আছি, কাঠ গড়ায় আসামীর!
আমি এক অবোধ ব্যর্থ জনক,
হায়!আজ আমার রাজকন্যার জন্মদিন।
ভুলেগেছে, সংসারে অযোগ্য এক পিতা
কন্যার জন্মদিনে দিতে পারনি মমতা
আশীর্বাদ স্নেহসিক্ত আদর
বুকভরা ভালোবাসা উপহার।
মা-বাবা কর্মযজ্ঞে ডুবে থাকা নিরন্তর
বেড়ে ওঠে এমন পরিবেশে
আত্মজার একমাত্র সহোদর
কর্ম থেকে নিত্য ফিরে খুজি
খালি বাড়ির এধার ওধার
কোথায় কিশোর দুলাল আদরের।
দেখি স্কুল থেকে ফিরে—
নীরবে একাকী খেলা করে
বাগানে বৃক্ষ ছায়ায় বা পুকুর পাড়ে
দৃশ্য বড় যাতনাময়
কষ্টে বুক ভারি হয়
যতটুকু সঙ্গ দেয়া অপত্যরে
তা' না দিতে পারার বেদনায়
রক্ত ক্ষরণ ঘটে পিতার হৃদয়।
এমন পিতা!অপরাধী দায়িত্ব জ্ঞানহীনে
সংসারে বেড়ে ওঠা দু' ভাই-বোনে।
শৈশবে তাদের মানসিক বিকাশে
কর্ম দোহাইয়ে অকর্মন্য এক পিতা
সন্তান ভবিষ্যত ফেলে নিরাশে।
আজ বড় হয়েও দেখছে তারা
মমতার আদালতে আসামীর কাঠ গড়ায়
স্নেহ অপরাধী দায়িত্বহীন অযোগ্য এক পিতাকে।


   রচনাঃ২৪/০৪/২০২১
  (একমাত্র কন্যার জন্মদিনে)