বাংলা কবিতা ডট কম এর উদ্যোগে ২৮ শে এপ্রিল,২০১৮ তারিখ শনিবার কলিকাতায় যাদবপুরের “শহীদ সূর্য সেন মঞ্চে”  অনুষ্ঠিত হয়ে গেল “কবিদের মিলন উৎসব ও সাংস্কৃতিক আড্ডা”। ভাবা যেতে পারে পুরো অনুষ্ঠানের আয়োজক ও পরিচালক শ্রদ্ধেয় কবি ও আবৃত্তিকার সৌমেন বন্ধ্যোপাধায় মহাশয় ও শ্রদ্ধেয় কবি বিকাশ দাস মহাশয়।বহু গুনী জ্ঞানী কবি ও সাহিত্যিকগণের সমাবেশে অনুষ্ঠিত হল এই অনুষ্ঠান। এই মিলন উৎসবে যাওয়ার আগের মুহূর্তে বিশেষ অনুভূতি জাগে মনে।
   এই অনুষ্ঠানের অনেক আগে থেকেই সৌমেনদার সঙ্গে মোবাইলে এই ধরনের একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য বলি।যদিও মনে হয় এই ভাবনা অনেক আগেই সৌমেনদা ও আরও অনেকের মনে জাগে। যখনই কবিতা আসরে দাদার পোষ্ট দেখি তখনই মনের মধ্যে একটা অজানা অনুভুতি উপস্থিত এবং আশা জাগে অনুষ্ঠানে এক মিনিটের জন্য যোগদান করবই। প্রায় প্রতি রাতে অফিস থেকে ফেরার পর সৌমেনদার সাথে আলোচনা হয়। দুই দিন আগে দাদার কাছে জনে নিই ধর্মতলা থেকে যাদবপুরের “শহীদ সূর্য সেন মঞ্চে” যাওয়ার পথ নির্দেশিকা।
   ২৭-০৪-২০১৮ তারিখ ফোন করলাম মান্নার ভাইকে( তিনি দীর্ঘদিন ধরে কলিকাতায় কর্মরত)।তিনি যেন থাকেন এবং যাদবপুরের “শহীদ সূর্য সেন মঞ্চে” পৌছে দেন। তিনি প্রায় সব রাস্তায় চেনেন। তিনি আশ্বাস দিলেন থাকবেন। তাই মনের সাহস বেড়ে গেল। অফিস থেকে বাড়ি ফিরে মাত্র কয়েক ঘণ্টা বিশ্রামের পর আর ঘুম আসেনি। কখন কলকাতার ভোর ৪.১০ এর গাড়ি ধরবো। রাত্রি ১.০০ টায় ভেঙে যায় আর ঘুম আসেনি। ফজরের নামাজ পড়ে রওনা দিলাম ঘন কালো আঁধারের পথ দিয়ে বাস স্ট্যান্ডের দিকে।শুধু আমি একা। শ্যালক আগেই বাসে উঠেছে এবং জানালো বাস পেয়েছে আর স্ট্যান্ডে থাকতে।
  ভোর ৪.১০ টা গাড়ী “সুমন সাবীর” ধরলাম। গাড়ীর দায়িত্বে স্বপন ভাই আমার অনেক দিনের পরিচিত। সকাল ৮.১০ মিনিটে মান্নার ভাইকে ফোন করলাম। জানতে পারলাম তিনি আনেক আগেই ধর্মতলায় হাজির এবার ফোন করলাম সৌমেনকে। সৌমেনদা বুক ভরা ভালোবাসা মিশ্রিত কন্ঠে চলে আসুন বলে স্বাগত জানালেন। মনে আনন্দের জোয়ার উঠল। এক সঙ্গে সাক্ষাৎ পাবো না দেখা,অজানা অনেক কবিগনকে। ৮.৩০ টায় নামলাম ধর্মতলায় অনেক আগে দেখা জায়গা। বেশ পরিবর্তনের ছাপ চেহারায়। নেমেই দেখি মান্নার ভাই । চললাম পাতাল রেল দিয়ে অটো ধরে নামলাম ৪৩২,আনোয়ার রোড এর “শহীদ সূর্য সেন মঞ্চে” এ। সময় দেখলাম সকাল ৯.৩০ মিনিট। গেটে দাড়িয়ে দেখি কয়েক জন বিদেশী, দেশী মানুষ। জিজ্ঞাসা করতেই দুতলা যেতে বললেন। দেখি জনশূন্য, কবি শূন্য গৃহ। মান্নার ভাই ফোন লাগাতে বললেন। ভাবলাম সৌমেনদাকে না বিকাশ বাবুকে ফোন করবো। সৌমেনদা খুব ব্যস্ত বিকাশ বাবুকে করি। কিন্ত ফোনটা সৌমেনদাকে করলাম।
আমি- সৌমেনদা চলে এসেছি আপনারা কোথায়?
সৌমেন- এইতো নিচে চায়ের দোকানে, আপনি কোথায়? আমরা সবাই আছি চলে আসুন।
আমি-এই তো আমি?
আমি এবার ফোন নয়,গলা শুনলাম। বাম হাতে মোবাইল ডান হাত দুজনের হাত। সৌমেনদার সাথে আমার ব্যবধান মাত্র দুই ইঞ্চি।
বুকে জড়িয়ে ধরে বললেন – দাদা খুবই খুবই খুশি হলাম। কত সময় লাগল, বাড়ির সবাই ভালো আছে কিনা ইত্যাদি। উপরে হল ঘরএ কাজ চলছে। একটু পরেই আমরা প্রবেশ করবো। এবার ঐ দিকে চলুন সবাই আছেন।
গিয়ে দেখলাম অনেকই আছেন, মাননীয় পল্লব (এডমিন,বাংলা কবিতা ডট কম) অবদানে অনেকই চিনি মনে হচ্ছে।
সৌমেনদা আমার দিকে আঙ্গুন দেখিয়ে বললেন- বলুনতো কে?
সবাই একসঙ্গে বলে উঠলেন- মুর্শিদাবাদের মোমিন ভাই,
সৌমেনদা- একেবারে ঠিক, ইনি মহঃ সানারুল মোমিন। সানারুল দা আপনি বলুন এরা কারা?
এঁকে এঁকে সবাই বুকে জড়িয়ে ধরে নিজেদের নাম বললেন। যেন অচেনা অজানা মানুষগুলোর হৃদয়ের ভালোবাসাব আদর স্নেহ আমার হৃদয়ে প্রবেশ করল আর আনন্দের জল চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ল। আছেন যাদব স্যার,তমাল স্যার, বিকাশ বাবু, চিত্তরঞ্জন  বাবু, পরে এলনে অজিত বাবু, জয়শ্রী ম্যাডাম, হাসিদি, সমীর দা, সুমিত্র বাবু,পরিতোষ বাবু, রক্তিম বাবু, বোদরুল সাহেব আরও অনেক কবিগণ ।  
অনুষ্ঠানের অগেই চায়ের দোকানে একটা ছবি তুলি। চা বিস্কুট খেলাম কিন্ত কে কখন  টাকা পয়সা দিলেন কিছুই জানিনা। জানলাম এই আসরে শুধু ভালোবাসা আর ভালোবাসা। মাঝে একবার সমীরদার সঙ্গে চা খেতে খেতে মনোজ দার সঙ্গে মোবাইলে কথা হল কী আনন্দ লাগল ।আমি ভেবেছিলাম তিনি  হয়তো কাছে আছেন।  সমীরদার কাছে জানলাম তিনি বাইরে আছেন।
২৮ শে এপ্রিল,২০১৮-“কবিদের মিলন উৎসবে ও সাংস্কৃতিক আড্ডা” হল হৃদয়ের আকাশে ও নিশ্বাসের বাতাসে দাগ এঁকে দেওয়া একটা অনুষ্ঠান। জানিনা আগামীতে এই ধরনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারবো কিনা, আর যদি পারি সবাই এক সঙ্গে পাবো কিনা। এটাও অনুভব হয়েছে যে আমাদের মধ্যে স্বশরীরে মাননীয় পল্লব সাহেব (এডমিন,বাংলা কবিতা ডট কম)ও ওপার বাংলার অনেক কবিগণ উপস্থিত আছেন। দিনটি আজ স্মৃতি, ভুলে যাওয়ার নয়, সময়টিকে মুছে দেওয়ার নয়,স্মৃতি--আর—স্মৃতি।
১১.৩০ মিনিটে শুরু হল অনুষ্ঠান-------
জয় হোক বাংলা কবিতার,
জয় হোক বাঙালী কবিদের।
ছবিতে বাম দিক থেকে সৌমেন বাবু,তমাল বাবু,আমি(সানারুল),পারামিতাদি,যাদব বাবু,চিত্তরঞ্জন বাবু,  প্রশান্ত কুমার ঘোষ ও আমার মান্নার ভাই।