সাইডুলি নদীটির কথা নিঃশ্চয়  মনে আছে
হয়তো জান সেই নদীটির উচ্ছলতার কথা।
তার স্রোতের বুক ছিঁড়ে সর্পিল গতিতে সাঁতরানো
নৌকায় মাস্তুল তুলে মাঝির ভাঁটিয়ালী সুর।
এখন সেই স্রোত সেই উচ্ছলতা, আর মাঝির
হৃদয় নিংড়ানো গান চোখে পড়েনা
শুধুই ধু ধু চিক চিক বালি।
বালির বুকে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বর্ষার অপেক্ষা দীর্ঘকাল
বর্ষাও নামেনা আগের নিয়মে,
কংঙ্কালসার দু'পারে গজিয়ে উঠা কাশফুলে মুখগুজে
চল্লিশ বছরের অতীত খুঁজি শুধু।
এভাবে পার হয় স্মৃতিময় জীবন
এভাবেই পার হয়ে যাবে জীবনের প্রতিটি ক্ষণ।
অনিলার বয়স তখন কতই'বা ছিল?
টেনেটুনে ষোল কি সতের ভীষণ ডানপিটে
উচ্ছলতায় মাতিয়ে রাখত ঠিক যেনো সাইডুলির মতো।
হিজলের নাকফুল সরিষা ফুলের মালা
খোঁপায় গুজে কচুরির ফুল,ভীষণ লাগত!
আজ নদী তার উচ্ছলতা হারিয়ে ভুলে গেছে অনিলাদের
এখন শুধু দু'পার বেয়ে নেমে আসে বর্ণহীন দাহ্।
তবুও দু'পারে চেয়ে, ছলাৎ ছলাৎ ঢেউয়ের পাড়ভাঙা শব্দ খুঁজি,
আর তার যৌবন ফিরার অপেক্ষা মহাকাল ধরে।
না সে আসেনা---
এখন বার বার তার বুকে ফিরে ফিরে আসে
শীর্ণ ক্লান্ত দেহের নেতিয়ে পড়া বুক থেকে তপ্ত বালুকাময় দীর্ঘশ্বাস।
তবুও কেন জানি স্মৃতির অস্তিত্ব সাথে নিয়ে
অপেক্ষার প্রহর গুনি গত চল্লিশ বছরের নির্নিমেষ চোখে।