হিঃ হিঃ হিঃ হাসির দমকে পেট বুঝি যায় ফেটে
মাস পড়েছে, মাস পড়েছে ডাকো পুরোহিত
পূজো অর্চনা করা চাই জম্পেশ,
মসলার কমতি মানবো না, বেশী করে নিয়ে আয় বেটে।
ইংরেজীতে কথা কয়ো নাকো বাপু, এটা বাংলার মাস,
আচারে বিচারে বাঙালি আমি বুক ভরে নেই শ্বাস।
ধুত্তুরি ক্যাবলাকান্ত, চলবে না তোমার সাহেবী কালচার,
বাংলায় কও না বাপু, বাঙলার কপাল খুলে গেছে আজ,
তাই অধীর আগ্রহে চেয়ে আছে সব জানতে
ভাষা আন্দোলনের অতীত ইতিহাস আর সমাচার।
মরেছিল রফিক, শফিক আর না কি আব্দুল জব্বার!
থুড়ি, মার্জনা করবেন-ওরা যে শহীদ, জানা ছিল না আমার!!
মিছিলে মিটিং এ আমার নামে পুড়ছে পুত্তলিকা,
বাহবা দিচ্ছো তোমরা সবাই মর ব্যাটা, পাঁজির পাঝাড়া
যত্তসব নচ্ছাড়, লক্ষী ছাড়া।
আহা রে আমার প্রাণের বাঙলা, মায়ের মুখের ভাষা,
তাঁকে নিয়ে চলছে দ্যাখো রঙ ভরা খেল তামাশা।
ঢাকা শহরের দোকান পাটে বিলেতী সাইনবোর্ড
ক্যাফেটোরিয়া, রেস্টুরেন্ট সাথে পিজ্জা হাট,
থরে থরে সাজানো, শাড়ীর ভাজ যেন তাকিয়ায় পাট পাট।
বাঙালির বিবেক কোন ইঞ্জেকশনে হয়েছে অবশ?
এখনও সুধা পানে খোঁজে সেই পুরোনো বিলেতী রস।
বাড়ীর নাম রজনীগন্ধা,
দীনতায় ডুবে মরি, আশ্রয় সেই ইংরেজী হরফ,
বাঙালির অক্ষরে আজও কেন এই মন্দা?
পোড়াবি আমার পুত্তলিকা? পোড়া
করজোড়ে মিনতি, ওরে ও বাঘা বাঙালি
একটু মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়া।
মাস পড়লেই খোঁজ খোঁজ ভাষা সৈনিক
ভাষা শহীদের বন্দনায় মুখিয়ে ওঠে
যত আছে সব দৈনিক।
অথচ কোর্ট কাচারিতে "হেয়ারিং" চলে
হয় না সওয়াল জবাব,
মূর্খ চাষা বোঝে না পেল কি না ন্যায্য বিচার
ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে,
উকিল হেঁটে যায় ধরে সে এক বিশাল ভাব।
রাস্তায় নেমে দ্যাখো কোথায় তোমার ভাষা?
ইংরেজীর ছড়াছড়িতে কোণঠাসা ব্যাকডেটেড বাংলা,
শহীদের রক্তে রঞ্জিত রাজপথ, ছিল কি তাঁদের এই আশা?