আমার জন্ম হয়েছে মাটির ঘরে ,
মাঝ রাতের অন্ধকারে।  
জন্মের পরেই দেখেছি অন্ধকার।  
তার পরে কেটে গেছে ৩০ ঋতু।  


২০০০ সাল ,
খুব মনে আছে  সেই  দিন গুলো ,
বরকইট  সানরাইজ কিন্ডার গার্টেন এ নার্সারিতে পড়তাম তখন।  
২০০১ সালে কেজি তে , ২০০২ সালে কেজি ওয়ান।  
বেশ সুন্দর ছিল সেই দিন গুলো।  


২০০২ সালে যখন বড় ভাই মারা যায় ,
তারপর থেকে আবারো অন্ধকার নেমে এলো -
অমাবস্যার রাতের মতো।  
তখন আস্তে আস্তে বুঝতে শিখেছি।  
সংসারের দীনতা প্রতিদিন চিৎকার চেচামেচি -
ভালো লাগছিলো না কিছু।  


খুব মনে পরে ,
আমাদের ক্লাসের প্রায় সব ছেলেরা স্কুল ব্যাগ নিয়ে আসতো।  
আব্বুর কাছে সেই ছিল প্রথম আবদার ,
আমার একটা স্কুল ব্যাগ চাই।  
কিনে দেয়নি।  


একদিন রাতে আব্বু বলেছিলো -
বাজার থেকে আসার পথে আমার জন্য স্কুল ব্যাগ নিয়ে আসবে।  
সারা রাত ঘুমাইনি।  
একটু পর পর চোখ মেলে দেখতাম
এই বুঝি আব্বু এলো আমার স্কুল ব্যাগ নিয়ে।  
পরের দিন সকাল থেকে আর স্কুলেই যাওয়া হয়নি।  
চার্ বছর লেখা পড়া অফ ছিল।  


২০০৫ সালের শেষে ,
আমার যারা ক্লাসমেট ছিল
তারা ওই বার ক্লাস ফাইভে ( ৫ম শ্রেণীতে  )  উঠে গেছে।  
আমাকে আবারো স্কুলে ভর্তি করানো হলো ক্লাস টুতে ( ২য় শ্রেণীতে )


২০০৬ সাল,
যখন বড় বোন মারা গেলো -
তারপর থেকে আবারো লেখা পড়া অফ হয়ে গেলো।  
এদিক সেদিক করতে করতে লেখা পড়া আর হলো না।  


২০০৬ সালের জুলাই মাসে ,
আমার স্কুলের প্রধান শিক্ষক এসে আমাকে আবার স্কুলে নিয়ে গেলো।  
খুব কষ্ট করে ৫ম  শ্রেণী পর্যন্ত পড়ার সুজুগ পেলাম।  


২০০৮ সালে ,
যখন আব্বু মারা গেলো , তারপর থেকেই কর্ম জীবন।  
খুব সুন্দর একটা মন ছিল ভালোবাসার  ,
পছন্দের মেয়েও ছিল।  
কখনো সামনে গিয়ে ভালোবাসি বলার সাহস পাইনি।  
কারন একটাই দীনতা।  


২০১১ সাল ,
আমার জীবনে আনন্দ নিয়ে এলো মায়া।  
খুব ভালোবাসতো আমায়।  
আমার খুব অবাক লাগতো ,
আমার মতো সর্বহীন একটা ছেলেকে - একটা মেয়ে ভালোবাসে।  
ভাবতেই আবেগী হয়ে যাই।  


২০১৩ সাল ,
সেই মায়ারও বিয়ে হয়ে যায়।  
কি সুন্দর ভাগ্য আমার .....
সমস্ত সুখ আমার বিরুদ্ধে প্রতিদিন যন্ত্রণার মিছিল নিয়ে আসে।  


আজকাল আর সেসব কথা মনে পরে না।  
সব কিছু ভুলে গিয়েছি।  
ভালোই আছি আজকাল।