এই যে নন্দিনী দাঁড়াও তুমি,
কোথায় চললে এভাবে হনহনিয়ে ?
কোন আকাশের চাঁদ দেখেছো শয়নে ?
কোন কাননের ফুল হয়ে ফুটতে চাইছো ?
কোন ভুবন সাজাতে চাও আমরণ?
না নন্দিনী না,
তুমি কিছুতেই পারোনা এভাবে চলে যেতে।
এবুকের মাঝে একটা হৃদয় আছে,
সে হৃদয়ে বোধ আছে!
আর তাতে জাগ্রত আছে পবিত্র ভালোবাসা।
সেই ভালোবাসার প্রতিটি নিঃশ্বাসে,
প্রতিটি স্পন্দনে মিশে আছো তুমি;
তুমিতো এ জীবনের প্রাণ।
যে আকাশ কালো মেঘে ছেয়েছিলো,
একাকী অনমনে লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদতো,
অঝরে ঝরতো দু'চোখের জল !
বেদনার সেই অশ্রুজলে প্লাবিত হতো জীবন,
দুঃখের ভেলায় ভাসতে ভাসতে এক সময়,
অচেনা অজানা
কোনো তীরে পেতো ঠাঁই।
সেই বেদনাময় আকাশে তুমিই ছিলে চাঁদ!
জ্যোঁছনায় ভরিয়ে ছিলে বিষণ্ণ প্রহর,
নিমগ্ন আঁধারে নিমজ্জিত প্রদীপের দীপ্তি।
ভুলে কি গেছো সেই সব দিনের কথা ?
দু'চোখের দৃষ্টি স্বপ্নের চূড়া ছুঁয়ে দেখিয়েছিলে,
বিবর্ণ সময়ের এক টুকরো সুখ।
বিষণ্ণ খরায় চৌচির হৃদয়ে এঁকেছিলে স্বপ্ন,
তৃষিত বুকের পিপাসায় এনেছিলে অমেয় স্নিগ্ধতা !
বিষাদের দগ্ধ তিক্ত মনে সাজালে বাগান,
ভালোবাসায় রোপিলে আগামীর বীজ,
অঙ্কুরিত হল ভবিষ্যৎ।
পারবে ছুঁড়ে ফেলতে সদ্য ফোটা কলি ?
পারবে সাজানো অঙ্গনে অগ্নি জ্বালাতে?
সুবাসিত সমীরণে কলঙ্কিত কু ছড়াতে ?
ভালোবাসায় ফুটিয়ে ফুল বিরহে ঝরাতে ?
দু'হাত ধরে দেখানো পথে বিষের কাঁটা বিছাতে ?
পারবে বাঁচার শক্তিটুকু কেড়ে নিতে?
পারবে হৃদয় ভেঙ্গে চূর্ণ বিচূর্ণ করতে ?
তবে কি শুধুই কল্পনা ছিলো ভালোবাসা ?
তুমি কি ছিলে মাত্র মোহমায়া ?
নাকি কোনো কাল্পনিক ছায়া ?
কিছুই কি ছিলো না বাস্তবিক উপলব্ধি ?
তুমি ভালোবাসা ছিলে নাকি দুঃস্বপ্ন ?
আমার আজও তা একেবারেই অজানা!
আমিতো শুধুই বিবেকের অন্তরালে গণিত কষেছি,
অন্তর-দৃষ্টিতে দেখেছি তোমায়,
আত্মবোধে খুঁজে পেয়েছি তোমার মমতা!
ভাবনার আকাশে অজস্র নক্ষত্রের মাঝে,
তুমিই ছিলে সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র ।
হৃদয় স্ফুলিঙ্গে কতবার ছুঁয়েছি মৌনতা,
অনুভবে শিহরিত হয়েছে জমানো আবেগ,
বিশ্বাস জুড়ে খুঁজে পেয়েছিলাম ভরসা !
জীবন পেয়েছে মৃত্যুর কোলে ভালোবাসা,
তাইতো এঁকেছে এ জন্মের প্রেম!
ভেবোনা নন্দিনী বলবো না যে যেও না,
শুধু জানতে চাইবো তোমার কাছে,
কি ছিলো এ প্রেমের মূল্য?