কি অবাক এই পৃথিবী!
কি অবাক এই মাতৃভূমি!
বিষ্ময়ে আজ নির্বাক,
বাংলার সকল জ্ঞানী-গুণী!
অবাক এই পৃথিবী!
আর অবাক তার বিশ্ববাসী,
নিজের দেশে থেকেও আজ,
আমরা হয়েছি পরবাসী!
আমরা তো চেয়েছিলাম পেতে,
শুধু এতটুকু সুখ,
মিলেমিশে থাকতে সবে,
ভুলে ওগো সর্ব-দুখ।
তোমরা তো নিয়েছো সব কেড়ে,
তবু বলিনি কিছু,
আমরা তো গিয়েছি অন্যত্র,
যখন এসেছো পিছু পিছু।
তাতেও তো করিনি কোন রাগ :
কিন্তু কেন আজ চাও,
বাংলা ভাষাকে কেড়ে নিতে
কি এমন সুখ পাও ?
বলো কি মোদের অপরাধ?
নিজ ভাষায় পরভাষী :
নিজের মায়ের অসম্মান ;
বলো আর কত কাল সইবো ?
মোরা এমন বলিদান!
তাই তো আজ উঠে রেগে,
ছুটে চলি উল্কা-বেগে,
আকাশ-বাতাস ধ্বনিত করি,
বর্জ্র হানি মেঘে-মেঘে!
বাংলা মায়ের সকল ছেলে,
হিন্দু ও মুসলমান :
ভাষার তরে লড়বো সবাই,
যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ!
মা, মাগো, চেয়ে দেখ মা,
তোমার সকল বীর সন্তানেরা,
শপথ নিয়েছে আজ ;
কভু মায়ের ভাষা ছাড়া,
কেউ ফিরবে না ঘরে,
তাই তো বেরিয়ে রাস্তায়,
বাংলা ভাষার সংগ্রামী ঝাণ্ডা,
বোঁও-বোঁও শূণ্যে উড়ায়!
আজ তাদের মিছিলে,
সারা আকাশ মুখরিত,
বিক্ষুব্ধ আজ জনতা !
বাংলা ভাষা চির অক্ষত,
ছিল, আছে ! রবে চিরকাল!
মায়ের ভাষার তরে,
একটা কেন, লাশে ভরে যাবে গোটা বাংলা!
তাই ক্ষোভে ফেটে পড়ে।
বাংলা আজ চির উন্মাদ ;
চেয়ে দেখ মা,
তারা কত সাহসী,
তাজা তাজা খুনে সিক্ত হ'বে বাংলার মাটি ;
যবে গগনে না ওঠে বঙ্গশশী!
পৃথিবী'--- আজ তুমি অবাক তাকিয়ে থাক,
চোখে আনো বিস্ময়!
তবে আজ কেন তুমি কাঁদো ;
কে'ন করো এত অনুনয়?
আজ যে তাদের করবো মোরা বধ,
মানবো না আর কোন বাঁধা বিপত্তি;
বাংলা ভাষকে ফিরিয়ে আনবো,
যতই থাকুক না কেন আপত্তি,
তাইতো আজ বারে বারে দিই স্লোগান ;
সদায় শপথ করি,
বুকের রক্তে রাঙাবো বাংলা ;
রাঙাবো একুশে ফেব্রুয়ারি!
ওমা, তোমার ভাষা ফিরিয়ে দিয়ে,
রাখতে তোমার মান,
আজি দৃপ্তকণ্ঠে প্রতিধ্বনিত হয়,
ছালামের আহ্বান :
'মাগো, আজি চির উন্নত,
হল তব শির,
তব হিম্মতে আজি নত সে শির
ওই শিখর হিমাদ্রির '!!