হঠাৎ একদিন খুব ভোরে ঘুম ঘোরে পাশ ফিরে যদি দেখো আমি আর নেই,
তুমি কি কোল বালিশের ওপারে আলতো করে হাত বুলিয়ে দেখবো ?
নাকি লাফিয়ে উঠে ভয়ার্ত চোখে আমাকে সারা বাড়ি তন্ন তন্ন করে খুঁজবে ?
খুঁজতে খুঁজতে হঠাৎ যদি তোমার পাশে রাখা কোল বালিশের নীচেই,
দেখো টাটকা রক্তে খোদাই করা হলুদ খামের একখানি চিরকুট,
তুমি কি হাতে তুলে তাড়াতাড়ি খুলে পড়তে চাইবে ?
নাকি বুকে জড়িয়ে আমাকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে যাবে ?
যদি খুলে দেখো গোলাপের  সাথে কাঁচা হাতে লেখা একখানি প্রেমপত্র,
তাতে যত্ন করে লেখা, একটু চোখের দেখা, " এবার তবে যাই "!
তুমি কি বাদামী রক্তে নোনা জলের স্বচ্ছ স্ফটিক বিন্দু এঁকে দেবে ?
নাকি অভিমান সুরে করিডোর ঘুরে বিদায়ের শেষ পেরেকটি পুঁতে দেবো ?
তারপর মাসখানেক পরে তোমার ঘুম ঘোরে আবার যদি ফিরে আসি,
একটা কঙ্কাল, পিশাচ, কিংবা অশরীরী আত্মার বায়বীয় রূপ ধরে,
হে প্রিয়তমা তুমি কি আমায় চিনতে পারবে ?
নাকি ভয়ার্ত কন্ঠে আমাকে আবার প্রশ্নবিদ্ধ বারবার করবে," কে তুমি ? "
পচা-গলা দুর্গন্ধ রক্তাক্ত দেহটা যদি ধরো ঝুলে থাকে গেস্ট হাউসের এক কোণে,
তুমি কী আমার কথা বিশ্বাস করে একবার ঘুরে দেখবে ?
নাকি তুমি আমায় ভ্রান্ত, অলীক, মনের ভুল ভেবে,
ব্যস্ত শহরের নগ্ন খেলায় আবার মেতে উঠবে ?
আচ্ছা আমার কি কোনদিন তোমার হাত থেকে মুক্তি হবে না ?
নাকি সত্যিই খুব করে ভালোবাসো বলে আমায় মুক্তি দিতে চাওনা ?
যদি ভালোই বাসো তবে কেন করলে এইরকম ?
বলো প্রিয়তমা আমার কি দোষ ছিল? -- শুধু একটি বার বলো ?
কী চেয়েছি জীবনে আর বিনিময়ে কি দিয়েছো তুমি আমায়,
যদি সম্ভব জীবনের শূন্য অঙ্কটা একবার মিলিয়ে দেখো,
দেখতে পাবে, অবহেলা, ঘৃণা, লাঞ্ছনা আর গঞ্জনা ছাড়া,
আর কিছুই দাওনি আমায় ! -- তবুও তোমাকেই ভালোবেসেছি,
আর তোমার সুখের জন্যই আজ আমি না ফেরার দেশে,
হাজার চাইলেও এখন আর তোমার কাছে ফিরতে পারবো না,
তবে আজও তোমায় ভালোবাসি বলেই প্রতিশোধের আগুনটা সুপ্ত লাভা !