তোমার ওই আলোকিত স্পর্শকাতর স্ক্রিনের মধ্যে
কত কিছু আছে —
ফোন কল, ক্যামেরা, গ্যালারি, সোশ্যাল মিডিয়া।
জীবনের প্রতিটা সময় তোমাকে নিয়েই কাটে।
তোমার মধ্যেই হয় সব কথাবার্তা, মতবিরোধ,
গ্যালারিতে ফোটো-ভিডিও স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে সেভ করা,
লেখালেখি, দেখাশোনা, ব্লাহ্ ব্লাহ্ ব্লাহ্...।
এখন কজন আর বই পড়ে, খাতায় লেখে?
খেলাধুলো করে?


তোমার ওই ক্যামেরায় ভেসে আসে
সেলফি, পাহাড়-অরণ্য-ফুল-পাখির ছবি,
ফ্যামিলি ফোটো, পার্সোনাল ফোটো,
Vlogging, YouTube, Reels...
তোমার ওই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে চলে
সত্যি-মিথ্যে কথা বলা, কটাক্ষ,
মজা, হাসি, কান্নার সমুদ্রে ভেসে যাওয়া,
গান, কবিতা, নাটকের ছড়াছড়ি, বা
গোপন প্রেমের কিছু ভাষা।
মোবাইল, তোমার তো ভালই লাগে এটা জেনে —
সমস্ত কিছু তোমাতে হয়, তাই না?


লক্ষ্য করেছি—
আজকাল খারাপ জিনিসেরও ছড়াছড়ি
লেগে আছে তোমার ভিতরে।
তোমার মধ্যে থেকেই চোখের সামনে আসছে
খুন, ধর্ষণ, হত্যার খবর,
রণক্ষেত্রে, বস্তিতে, বাড়িতে অগ্নিদহনের খবর,
সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু লিক হওয়ার খবর,
অশ্লীলতা — ছাড়ো।


একটা বাচ্চা মেয়ে খুন হয়েছে,
একজন মহিলা ধর্ষিতা হয়েছেন,
যে কোনো সময়ে মানুষ হত্যা হচ্ছে—
তোমার চোখ থেকে কি অশ্রু ঝরে, নাকি রক্ত?


ধর্মে ধর্মে যুদ্ধ, মানুষে মানুষে যুদ্ধ—
বোমার বিস্ফোরণ, মানুষের আর্তনাদ,
মানুষের শরীরে, মাটির বুকে রক্তস্রোত—
তোমার কি ইচ্ছে হয় যুদ্ধের ময়দানে নেমে
তর্জন-গর্জন করে যুদ্ধ থামানোর?
অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়ার?


সোশ্যাল মিডিয়ায় চলে একই প্রকারের রাজনীতি—
Influencers অন্যদের troll করে,
Roast করে, গালি দেয়, ভুলভাল কথা বলে,
ভুলভাল কাজ করে,
প্রজন্মকে ভুল শিক্ষা দেয়, বিপথে নিয়ে যায়—
তোমার কি ঘেন্না লাগে ওদের প্রতি?
তুমি কি চাও ওদের ব্যান করা হোক?


তুমি কি কখনো অশ্লীল কিছু দেখেছ?—
তোমার কি কখনো ইচ্ছে করেছে বমি করতে?


তোমার মধ্যে সব কিছুই exposed হয়ে থাকে।


বড়রা প্রায়ই বলে থাকেন—
তুমি বাচ্চাদের খারাপ করে তুলছো,
তুমিই খারাপ।
না। তুমি খারাপ নও,
কিন্তু অসৎ লোকেরা তোমাকে খারাপ করে তুলেছে।
কাউকে যদি খারাপ বলতে হয়
তো তোমাকে নয়, তাদেরই বলা উচিত।
তাদের বিরুদ্ধে কোনো অ্যাকশন নেওয়া হয় না।
নিরাপত্তার কোনো বালাই নেই।
স্বাগতম দাস সঠিক বলেছিলেন:
"ফোন আছে, নিরাপত্তা নেই"।
তুমি মোটেও খারাপ নও, তুমি ভালো,
কিন্তু এ সমাজের কাছে তুমি গুরুত্বহীন —
বলতে বাধ্য হলাম।


(০৭/০৪/২৪)
মালদা