আপনি আপনার বারান্দাটা ঘুরিয়ে উলটো দিকে নিয়ে গেলেও
আমি কিন্তু পাল্টায়নি।
আপনার বাড়ির পেছনে যে আবর্জনা জমেছে,
আমি সেখানেও রোজ দেখি বনফুল। বরং ভালোই লাগে।
আগাছার ফাঁকে ফাঁকে ফুটে আছে হরেক রকম বাহারি ফুল,
ঠিক যেন শৈশব থেকে যৌবনের যুগল হওয়ার আগ মুহূর্তের ছোট ছোট টুকরো টুকরো স্মৃতির মতো।
আমি আপনার বাড়ির পিছন দিকে মুখ করে
আগের মতোই আমার শ্যাওলা জমা বেলকোনিতে দেখতে পাই আমার পুরানো অতীত।
আপনার বেলকোনিটা যখন এদিকে ছিল!
রোজ আপনি দোলচেয়ারে বসে কবিতার বই পড়তেন
আর ফাঁকে ফাঁকে আমার বেলকোনির দিকে তাকাতেন!
ঢং করে আমাকে দেখে জোরে জোরে সুনীল'দার কবিতা আবৃত্তি করতেন!
যাতে আমি শুনতে পাই। কখনো কখনো ইশারা করতেন।
আপনার চারতলা বিল্ডিয়ের নিচে আমাদের আধমরা বাড়িটিও
ঐসময় আপনার প্রেমে স্বর্গ হয়ে উঠতো।
আজ বেলকোনির দিক পরিবর্তন হয়েছে, বদলে গেছেন আপনিও,
আপনি এখন উল্টোদিকে অন্যের কাঁধে ভর দিয়ে রৌদ্রের কবিতা পড়েন।
দেখতে পাই না, শুনতে পাই না,
কিন্তু এখনও অনুভব করি আপনার সেই পাল্টে যাওয়া পরিচিত কণ্ঠস্বর।
আমার বেলকোনিটা এখনও আছে।
আমি আজও সেখানে ভাঙা কেদারায় বসে তাকিয়ে দেখি
আপনাদের সুউচ্চ ইমারতের দিক পরিবর্তন।