এইতো জীবন ওরে এইতো জীবন ॥                                                                                      
এই আছি এই নাই,
সবারতো একই দশা দেখি ভাই,
চলে যায় হঠাৎ একটা অদেখা সমন পাই,
নাই বাহক নাইরে বাহন, তাতেই চলে আসা যাওয়ার এই ভ্রমন, লোকে যারে কয় মরন ॥
হঠাৎ নিবর হয়ে সব থেমে যায়,
নতূন জীবন পূরান হিসাব বকেয়া দায়,
দন্দ লড়াই হিংসা ক্রোধ ক্ষোভ,
স্বপ্ন আশা মায়া ভালবাসা বাহাদুরি বড়াই মোহ লোভ,
ছিল কত পেরেসানি তাড়না, এইবার ছাড়না, দৌড় ঝাপ সারাক্ষন ॥
অ বিয়াই,
এসেছে যত বোন ও ভাই,
সব ছেলে বউ আর মেয়ে জামাই,
বাড়ীওয়ালার খবর নাই, পেরেসানি টানটান রইল কোথা যাই,
বাড়ীভরা এত মেহমান, ফিরে যাবে আজ তারা অন্যবাড়ীর খাবার খাই,
সমবেত আমরা সবে আপনার ঘরে, তবে আজিকে কেনরে ভাই এই আসরে আপনি শুধু নাই,
পিতৃকূল মাতৃকূল শ্বশুর বাড়ী ও নিজ পরিবার, প্রতিবেশী ও এলাকার বাকী নেই কেউ আর এসেছি আমরা সবাই,
এলাম যার বাড়ীতে,
চূলা জ্বলেনা, কেন ভাত নেই আজ তার হাড়িতে,
সে কেন গেটের বাহিরে লেকের পারে রাস্তার ধারে হিমগাড়ীতে চুপচাপ রয়েছে ঘূমাই,
এ কেমন কথা, ভাবিতে মনে পাই ব্যাথা, হলো ব্যাপারটা এমন ॥
কষ্টের আবেগে বিহ্বল ,
ছেড়ে গেল সংগী সাথী সব দলবল,
সবার কন্ঠ ভারি, কারো চোখে নাই কারো চোখে জল,
প্রতি মাসে, ভাড়া নিয়ে যায় একবার আসে, এখন থেকে সবকাজে হবে রদবদল,
বাকহীন মলিন বদন বিষন্ন মন, শত জনে করে, ব্যাস্ত ঘরে ও বাহিরে, একজনেরে শেষ বিদায়ের তড়িঘড়ি আয়োজন ॥
ছেড়ে নিজ বিছানা বাড়ীঘর,
হলো ঠিকানা ভিজা মাটির এই কবর,
সবারে করে জনমের তরে নিজেও হলো পর,
আর হবেনা দেখা, পড়ে রবে একা, কেউতো লবেনা পাবেনা খবর,
বউ ছেলেমেয়ে,
হয়েছে পাথর যেন সে বেদনা সয়ে সয়ে,
কষ্ট পায়না এখন আর,
কথা শেষ বিদায়ের ঐ দিনটার,
তেমন আর হয়না স্বরন, যেন সবাই এমন পর, যারা ছিল অতিশয় আপন ও অতী প্রিয়জন ॥
বন্ধ আঁখি আর দেহটা নিথর,
সটান শুয়ে গায় জড়িয়ে, শুধু একভাজ সাদা কাপড়,
ছিটিয়ে মাখিয়ে গোলাপজল, জালিয়ে আগর লোবান আতর,
করিয়ে শেষ স্নান সমাপন, পরাল কাফন, এখনই হবে জানাজা তারপর,
স্বজন আর এলাকার সব ভাই নিয়ে যাবে কাধে করে, যেন ওরে পালকিতে চড়ে আপন ঘরে যাবে নাইয়র,
বড় ছেলে বিদেশ হতে এলে আজই আছরের পর হবে তার দাফন,
মরন নয় সে যেন এক আজব ভ্রমন,
জীবনের আর এক নব অধ্যায়, অন্য এক নতূন জীবন আজ যার হলো উদ্বোধন ॥
যদিও সবাই বলে,
আবু হকে নয় তাদের দলে,
বড় বাড়ীর মিয়ার বেটা আজ সকালে,
ল্যাবএইড হাসপাতালে করেছে মৃত্যু বরন,
এলাকায়,
জানিল সবায়,
মসজিদের মাইকের ঘোষনায়,
সেই শোক সংবাদ,
ভাল মানূষ ছিল বলে, জড়ালো সবারে ভরালো বাতাস ছড়ালো বিষাদ, করিল যখন পরিবেশন ॥
চুপিসারে কার ইশারায়,                                                                                                  
অবিরত সারাক্ষন, কেউ আসে আর কেউ চলে যায়,
কেউ আগে কেউ পরে, কোথা হতে আসে আর যায় কোন ঠিকানায়,
রবে কি তা চীরদিন, বয়ে বেড়াবে কত ঋন অজানায়,
কেন এ জীবন, কিবা তার কাজ, আর কিবা দায়,
কেন এ ভ্রমন গমনাগমন, কি চায় জীবন দাতা বিধাতায়,
কিভাবে কবে, হয়েছে কি হয় নাই,
হবে কি না হবে তা কজনে ভাবে, বসে হিসাব কষে তাই,
যে যাহা পায়, ঐ মহা রাজার দায়, নাই কেন ভাবনায়, কেমনে করা যায় তা পরিশোধ ও সমাপন ॥
তার করুনায় জীবনে মরনে কেউ না চেয়ে কতকিছু পায়,
একি কেউবা আবার দেখি ষোলআনা যা ছিল তার সব হারায়,
কায়া বদলায়, সব স্মৃতি সে ভূলে যায়, অন্য দুনিয়ায় করে গমন,
তারপর শাস্তি পূরস্কার হলে সমাপন, হবে সাধন নব জীবনের আস্বাদন,
বোঁকা মানূষগন, রাখিও স্বরন, ওরে ভাই মানূষের নাই মরন, কভূ হয়না তা নহে এই ভ্রমন ॥
যতই হোক, রঙ মাখানো সুন্দর,
মানূষের প্রান, বিধাতার সহস্র সত্তার এক নগন্য ক্ষুদ্র অনূদান, অবিনশ্বর,
মানূষতো তার বহু রুপের রুপান্তর, প্রতিনিধি যূগেযূগে দেশেদেশে হয় মুসাফির যাযাবর,
মাটির দুনিয়ায় দুদিনের এ জীবন, যেন মজার খেলায় মত্ত বিভোর এক সুখের স্বপন, দেখার মতন নেশার ঘোর, মাত্র কিছুক্ষন ॥
জীবনের বহু রুপ রঙ ধাপ,
বুঝিতে হলে ও করিতে পরিমাপ,
মরনের আগে এ জীবন যেন এক বিন্দু,
আর পরে, যা অসীম অকূল যেন এক মহা সিন্ধু,
বুঝিবে যখন ওরে মন, মহারাজা মহাজন তব সব ধন করিবে হরন,
আছে কি তোমার, নাহলে নিশ্চিত হার, আলোয় ভরা দিন অন্ধকার, তারে চেনা অতী প্রয়োজন,
পঞ্চ পরান ভরে ভাল করে দেখা জানার, ওরে আর কিছু নয় তা যেন কানার অাঁধারে আলোর সমাহার এমন একটা শুধু তৃতীয় নয়ন ॥
মানূষ যারে মরন কয় সেতো মরন নয়,
মানূষের এক জীবন, আগুনে পূড়িয়া, নতূনে গড়িয়া, ঘূরিয়া ঘূরিয়া হয়ত বহু দুনিয়া বিচড়ন, ভীষন রহস্যময়,
মিথ্যা মন্দ ভূল আপদ শংকুল কত শত বিভিষিকাময়,  
না জানিলে না বুঝিলে, দায়দেনার হিসাব না কষিলে, মানূষ কেমনে মানূষ হয়,
যেটুকু দেখি জানি করি বরন কিবা নিকট দরশন শুধু সেটুকু নয়, আছে সুখশান্তি দুঃক্ষকষ্ট ভয় কান্না হাসি জয় পরাজয়,
না করিলে তাই, কে আমি ভাই আর কেন এ জীবন, তা যাচাই বাছাই গবেষন ও নিরুপন, শুধু একবার তা করা প্রয়োজন ॥
কত সুন্দর এ বিশাল ভূবন,
তবে কেন বলো, এত ছোট হলো এ জীবন,
সহস্র রঙ আর রুপের সম্মোহন, তার দেখা জানা না হতে শেষ,
বিধিরে এ মিনতি তোমারে আমার, হয়না যেন মম এ জীবনটার দেশান্তর ও নিরুদ্দেশ,  
না যেন হয় অপবাদ ও ধিক্কার, অক্ষমতা অার দীনতার অভিযোগ ও অভিশাপ,
নহে যোগ, করো ত্রান ও অবসান কাল রোগ, ধন আর বিনোদন ভোগের ঐ সে দারুন মোহ চাপ,
বোঝার উপর শাকের আঁটি কেমনে লয়,
চক্ষু বাধা কেমনে হাটি, লুকিয়ে থেকে বন্ধু হতে কেমনে কয়,
এত ভয় লয়ে রাজার সনে, বলো গোলামের কেমনে, মিতালী হয়, সাধ্য কি আমার, বহি এত ভার, হতে চাই পার ও পাশ করিতে সকল ধাপ,
দাওনা শুধু একবার, সবারে ঐ উপহার, এমন জীবন যেন অনায়াসে সব শুভ বাসনা আর সাধনার হয় সাধন ॥
চোখ দিয়েছ তবু কেন রেখেছ করে কানা,
আমি আর ক্ষনিকের তরে তার মালিক হতে চাইনা,
যেথা সবই বাকী, সবই ফাঁকি, ষোলআনা ধোকা আর শুধু প্রতারনা,
যার কিছুই নহে আমার,
আসলে তা শুধু, দুদিনের ধার,
নহে মালিকানা, এক বোঁকা ইজারাদার,
বেঁচাকেনা সে ও এক মজার খেলার প্রতারনা, শুধু ভোগ দখলের অধিকার,                                                            
এমন ধন এমন মালিকানা, যেন এক অবুঝ কানার সান্তনা ছাড়া আর কিছুনা, বলো তার ছিল কি প্রয়োজন ॥
চড়ে তব হাওয়াই রথে তাই, যা আমি আজও দেখি নাই, তা দেখিতে হয় বড় সাধ বাসনা,
যেথা যত মনোহর, অরুপ সুন্দর, অ নিপূন কারিগর, আপন হাতে সখ করে যাহা গড়েছে ঈশ্বর তুমি করোনা মানা,
অতল সাগর তলে খুটি ছাড়া আকাশে, আর ঐ বিশাল তারার দেশে, এমন স্থায়ী আবাসন মন্দহীন এক ঠিকানা,
যেথা নাই কোন দায় ঋন কিবা ক্ষতি,
আছে র্আত আর অসহায়ের সেবা উপকার করিবার সাধ্য ও সুমতি,
চাহিলে তব মন,
কি আছে কোথায় হে মহাজন,
দিও মোরে এমন এক জীবন, নাহলে মন ভরে ঐ সুধা, মিটিয়ে সকল তৃঞ্চা বাসনা ক্ষুধা, করিতে দরশন ॥
মনরে তুই বিবেকের চোর,
কবে তুই হবি মানূষ আর, কাটিবে তোর যাদুর নেশার ঘোর,
একটা বিভোর প্রাণ, পালাবার টান, এমন খাঁচা,
তোর কাছে, এখনও সময় ও সুযোগ আছে, জলদি ওরে তুই নিজেরে বাঁচা,
অন্তরালে ছোট্ট ঘর,
তুমি কেন তার রাখনি খবর,
সকলই যার রেখেছ তারেই করে পর,
উড়াল পংখী মন, যখন তখন মুক্ত বিচড়ন, পথ ভূলায় এক দূষমন অচেনা গুপ্তচর,
এই মনেরে সুপথ দেখায়, সকল ভাল চায়, সুবাধ্য সুহৃদ হলে লয় সব দায়, গোপনে বসত করে তার ভিতর,
কেমনে পসিবে আলো, হবে সোনালী ভোর,
ঘটিবে সকল ভালো, যে ঘরের বন্ধ সকল জানালা দ্বোর,
কবে হবে তোর জাগরন, হবি সচেতন আর, হবে সব দায় সমাপন,
বলিবে সবায় ভাল মানূষ আর বিধাতার এমন প্রিয় গোলাম ছিল সে একজন, রাজ সিপাহীরা যারে গোরের পারে জানাবে সাদর সম্ভাষন ॥
আজব এক বানিজ্য বসতি,
আছে হেথা কত, ভালমন্দ ও শত লাভক্ষতি,
আবু হকে বলে,
যে বিধান ও নিয়মে চলে,
ছোট্ট সোনার জীবন না যায় বিফলে,
দেখোনা, নিজে খায়না সবারে কতকি খাওয়ায়,
সবকিছু দেয় শুধু এইটুকু চায়, যেন সবায় তার পরিচয় পায়,
জানে, তুলে লয় মাথায় ও পরিশোধ করে জীবনের যত তার দায়,  
যেজন রহে আশায় ও র্নিভরতায়, ভক্ত বিনয়ী বিশ্বাসী ও অনূগতের দলে রয় গুন গায় আর করুনা চায়,
বিধাতার নাই কোন দোষ,  
তার মনমত হলে সামান্য দান কিবা কথায় ও কাজেই হয় খোশ,
ভূল একচূল কিবা আপন র্কম্মদোষে গোলামের উপর এসে পড়ে রাজরোশ,
নিয়তি বলে কিছু নেই,
সাদা কালো আঁধার আলো আছে সব কিছুতেই,
ভোগের নেশায় হয়না কভূ রাজ দরশন, কিবা র্অজন ও আহরন, তাই কর, আমার কথা ধর, বেশী পেতে আর হতে বড় চাই অল্প বিসর্জন ॥
কেউ টাকা পয়সা করে আয়,
মজার খাবার খায় আর নাক ডেকে ঘূমায়,
ভাল কাপড় পরিধান করে, ভাল চলে ও র্ফূতিতে দিন যায়,
তবেকি তারা সবাই জানে,
জীবনের শুধু এই র্অথ মানে,
ভয় পায়, যদি ধন কমে যায় দানে,
সেইতো সুখ, নাহয় কাটুক সময়, নাঁচে আর গানে,
বেশী ধন উর্পাজন, সঞ্চয় সম্পদ সম্বল আর শুধু ভোগ বিনোদন,
বলো তবে আর, এ ভূবন কে ভরিবে, হবে শান্তি সুখের বসবাস, করিবে আলো ও ভালোটার চাষ ও বিতরণ ॥
আমি বলে চলে যাই,                                                                                                  
এই বারতা ও বচন বলিও তোমরা সবারে ভাই,
রাজার রাজ্যে করছ বসত, গোলামী মেনে যারা সবাই,
সত্য বাণী, যে যেটুকু আমরা জানি আর, যা বলে গেলাম তাই,
শূন্য হাতে আঁধার রাতে, অচিন পথে চড়ে হাওয়াই রথে, এ কোন সফরে আমি এলাম,
সংগে নাই কেহ, এই মাটির দেহটা আবার হলো মাটি, এই বুঝিরে মানূষের জীবনের দাম,
যেজন আসল মালিক মহাজন,
আমার জীবন, আর তোমাদের সব ধন,
সপ্ত জমিন, সপ্ত সাগর ও সপ্ত আকাশের রাজন,
তারে চিনিলে, হয়ত আমি আগে বুঝিলে, আরও বেশী দামী হতাম ও মূল্য পেতাম,
তার ঐ আরশ কুরসি সিংহাসন খানি, সত্য সঠিক খাটি আকাশবাণী যা আমি আজ বুঝিলাম,
ছেড়ে গেলাম, সব হারালাম, বাড়ী গাড়ী জায়গা জমি সবই আমার কেন আজ বিনাদামে হলো নিলাম,
কি হারিয়ে কি আমি পেলাম, ছিলেম বলে কানা মিথ্যে মালিকানা, আরও কত অপরাধ ভূল অপবাদ কলংক বদনাম,
কই আমার ঐ এত ধন,
ছিল যার দান তবেকি সে ই আবার তা করিল হরন,
আর দুনিয়ার যত ধন, তা ওতো এখন আমার নহে মালিক অন্যজন,
যে ধন আজ আছে কাল নেই শুধু কিছুক্ষন, বলো তাতে কি লাভ আর কি প্রয়োজন,
থাক বা না থাক স্বরন মম এই নিবেদন, কর কি নাইবা কর তা পালন, একদিন সবারই দশা হবে ঠিক এমন ॥