মা রে, একথা এখন আমি বলিব কাহারে ॥
খোকা হয়ে গেছি আমি হেন,
ঠিক তেমন, ছোট্ট একটি শিশু যেন,
মোখে যার আধো আধো ভাংগা ভাংগা বোল,
গিয়ে হাটিতে, পড়ে গিয়েও যেন পড়েনা মাটিতে, সারা গায় এমনই খায় দোল,
ভেবে দেখো তাই, আজ তোমরা সবাই, করবে কি এখন লয়ে এই আমারে ॥
তেল ঝাল ভাজা পোড়া আর,
যত শক্ত ও মজাদার পুষ্টিকর খাবার,
সে যেকোন খাবার আর খেতে পারিনা আমি,
বুঝিনা কোনটা স্বাস্থ্যকর ক্ষতিকর, কম কিবা বেশী দামী,
কতযে বাছ বাছাই, তার ইয়ত্তা নাই, বাধা মোর নিত্য দিনের আহারে ॥
কোথা সে গেছে চলে,
এই ঘরে আমারে একা ফেলে,
জানিনা কখন কেনরে সে, কিছইু নাহি বলে,
সে যে সব জানে, পটু সে ছিল সব আয়োজনে, ডেকে আনো তাহারে ॥
এখন কেন আগের চাইতে,
লাগে আমার একটু বেশী সময় সব কিছুতে,
ওরে নাইতে খাইতে শুইতে, উঠতে বসতে ফিরতে চলতে,
এ সময় যে সবকিছু সয়, প্রয়োজন তার, এত দায়ভার যে বহিতে পারে ॥
এই বুঝি মোর কাছে মনে হয়,
মাথা ঘূরে যাবো পড়ে আসলে তা নয়,
পথ চলতে হয়, পা টিপে টিপে ধীরে অতিশয়,
হয়তবা তা আমার, অমূলক ধারনা আর অহেতূক ভয়,
কেউ কেউ কয়, এ বয়সে এমনইতো হয়, ঠিক নয় যা একেবারে ॥
প্রতিরোজ নিদ যাওয়া নাওয়া খাওয়া,
মাঝেমাঝে বাজারে ও পাঁচ বার মসজিদে যাওয়া,
আপনা হতে আপনার মাঝে বদলে যাওয়া এ যেন এক অন্য হাওয়া,
তা যেন আর কিছু নয়, সফর সময়, মনেহয় না চেয়ে মোর সংসার হতে ছুটি পাওয়া,
নেই যেন আর, কোন দায় ভার, যখন হয় আর কেউ নয় কার, এই আমার কূজো ঘারে ॥
কেন হয়েছি আমি অবুঝ এমন,
কেউ আমাকে না বুঝার ইবা কি সে কারন,
হয়েছে আমার সমাপন, যখন তখন তারে করা জ্বালাতন,
কে সহিবে তা কেমন করে, অল্প অল্প করে এখন আমারে, খেতে হয়যে ঘনঘন বারেবারে ॥
নেই কোন মোর দূর্ভাবনা পেরেসানি কিবা তাড়না,
নাই কোন দায়, কোনকিছু নাহি পায়, জানিনা তবু কেনরে, রাতে মোর ঘূম আসেনা,
কখনও রাতের তিন প্রহর যায়,
উঠানে ছাদে, হুতাষে বিষাদে কিবা খোলা আংগীনায়,
ধীর পদে ঘূরে ফিরে, পায়চারি করে করে বাহিরে কিবা সারা ঘরে, জনিনা কোন ভাবনা তাড়ায় আমারে ॥
ভাল লাগেনা ব্যাস্ত লোকজনের দল,
এত রঙ এত ঢং এত সোনালী সাজ আলো ঝলমল,
আসা যাওয়া শুধু খাওয়া আর খাওয়া নাঁচগান হৈচৈ মিষ্টি ও ক্ষির দই কলরব কোলাহল,
খেই খুঁজে পাইনা, কিছু আমি চাইনা, ভাল লাগেনা চঞ্চল চনমন ঝটপট ছটফট বাহারে ॥
সব শোনে কি ভাবছ মা’রে,
গেছ বুঝি কোন এক নতূন আপদে পড়ে,
বাড়তি ঝামেলা, পই পই করে যে দিনভর ঘরের ভিতরে,
বুঝিবে মন, করবে লালন কিশোরের মতন, কেমন করে আদরের এই বুড়ো ছেলেটারে ॥
যেতে তার মন, সারাক্ষণ চায়,
কারে তা বলে হায়, আর কেমনে তা পায়,
জোনাকির আলো, ঝিঝিদের বাঁশরী তার মন ভূলায়,
মিটমিট তারাগুলি লাগে ভালো, যখন গগন হতে জোছনা হারায়,
বসে গাছের ছায়ায় দীঘির ঘাটে, মাছরাঙা পানকৌড়ি বকেরা উড়ে উড়ে যায়,
পাখ পাখালীর দল থেকেথেকে এঁকেবেঁকে লেজ নেড়ে, কাছে দূরে যায় আসে আর ঘূরেফিরে গান শোনায়,
দারুন মজায় সময় কাটে, পাল উড়িয়ে নৌকা যায় মাঝিরা মনের সুখে গান গায়, খেয়া ঘাটে নদীর পারে ॥
চটি দিয়ে পায়, পাঞ্জাবী গায় একটা ছড়ি হাতে,
রোজ সকালে, পড়ন্ত বেলায়, গোঁধূলী সাঁঝে ও জোছনা রাতে,
বেশীক্ষন কোথাও বসে রয়না,
কারো সনেই দুচারখানার বেশী কথা কয়না,
যদিও নেই তার কোন বায়না, তবু সে তাড়নাটা ওতো কমনা,
আহারে কত সে পারে, গুটি গুটি পায়, শুধু চলে যায়, ঝিলের ধারে, চোখে চোখে কে দেখে রাখিবে তারে ॥