ভাল নয় কাউকে মারা, দেওয়া চড়চাপড় ॥
আসলে তা মোটেও নয়,
ঐ লোকটাকে দেখে যেন মনেহয়,
ব্যাবহার আচড়ন তার যদি ভালই না হয়,
সব নাজানা ভূল ধারনা মিথ্যে প্রমান হোক,
তবে সে কিসের মানূষ, কে বলে তারে ভদ্রলোক,
হাজার রকম মানূষে ভরে আছে এই ঢাকা শহর ॥
চকচকে বদন,
এক বড় শিক্ষিত জন,
সেইকি পরিচয় মনের আলোক,
রঙীন চশমায় ঢাকা যার দুই চোখ,
রিক্সার আরোহী, আধূনিক সাহেব বাবু,
আপন দোষে পড়ে জনতার রোশে হলেন কাবু,
অহরহ কত শত ঘটনা ঘটে,
কতনা মজার আধূনিক সভ্যতার এ পটে,
লাখো জনতার মাঝে বলো কে তার রাখে খবর ॥
এক সন্ধা কিবা রাত্রি,
পোষাকে ফিটফাট এক যাত্রী,
তর্কবিতর্ক শোরগোল কথা কাটাকাটি,
না থামালে হয়ত যেন এখনই হবে হাতাহাতি মাথা ফাটাফাটি,
উগ্র মেজাজ ও কথার ভাষায়, পরিস্কার বুঝা যায়, যাত্রীটা এক ভদ্রবেশী ইতর ॥
তার এ জীবন বিদ্যা ও ধন একেবারে মূল্যহীন,
মূর্খ সে তাই, জানেনা জগতের কাছে তার কত ঋন,
কবে তার ঝুলি দেখিবে সে খুলি, মনের জগত হবে পসর ॥
মহল্লার চার পথের মোড়,
হেথা কত লোকজন ভালমন্দ বাটপার চোর,
মসজিদ হতে, ঘরে ফিরার পথে, ঘটিল ঘটনাটি তার ভিতর ॥
রুঢ় অশোভন আচড়ন,
কেউ কোনদিন করেনা সমর্থন,
হোক সে বালক বুড়ো, মূর্খ পন্ডিত যতই আপন কিবা পর ॥
জড়ো হলো কত লোকজন,
শত জিঙ্গাসা কৌতূহল কথোপকথন,
ভাড়া তার ত্রিশ টাকা, উঠেছে না বলে বললো রিক্সাওয়ালা,
টাকা কি গাছের পাতা, বিশ টাকার স্থলে ত্রিশ টাকা তোরে কে দেবে শালা,
যাত্রী হঠাৎ ক্ষেপে গিয়ে, এসে লম্ফ দিয়ে, রিক্সাওয়ালাকে মারল কষে এক চড় ॥
যাত্রী ছিল বয়সে বড় ও বিদ্যান,
অশিক্ষিত রিক্সাওয়ালার যেন জড়সড় প্রাণ,
যদিও ছিল তার দেহখান, যেন এক যূবক পাঠান হেন শক্তিধর ॥
ছিল তারা এক দল,
কিশোর তরুণ ক্ষিপ্র ও চঞ্চল,
যাদের আছে দুঃসাহস আর আছে বাহুবল,
কাছেই ছিল এলাকার ছেলেদের সংগঠন, একটা ক্লাবঘর ॥
লেখাপড়া কিবা কোন কাজকাম নেই,
দিন কাটে তাদের পথে পথে ঘূরাফিরাতেই,
রিক্সাওয়ালা তার আর্ত আকূতি করুন চোখের জলে,
মার খাওয়া আর, ভাড়া না পাওয়ার, কথা বলছিল দাড়িয়ে শোনছিল সকলে,
যাত্রী বেটা ভাড়া দেবেনা তা বলে,
হনহন করে গলির ভিতরে যাচ্ছিল হেটে চলে,
ঝটপট বদলে গিয়ে দৃশ্যপট, অন্য ঘটনা ঘটিল তারপর ॥
কে একজন ডাকলো তাকে,
ফিরে তাকিয়ে ফের যাচ্ছিল সাড়া না দিয়ে সে ডাকে,
এই ধরতো বেটারে,
বলতে দেড়ী তিনচার জন ছুটে গিয়ে উড়ে,
জোড় করে, যেন টেনে হেঁচড়ে আনলো ধরে তারে,
কাছে মাফ চা, ঐ রিক্সাওয়ালার,
বলল পঞ্চাশ টাকা তার ভাড়া দে আর,
বাঁচতে হলে, অতী তাড়াতাড়ি দুহাতে তার পায়ে ধর ॥  
চারিদিকে জনতার ঘের,
হঠাৎ শুরু হলো ঐ বখাটে ছেলেদের,
কোন ইশারায় অপরাধী ঐ যাত্রীর উপর, কিল ঘূষির এক তুমুল ঝড় ॥
থামলো তাহা তারপর,
যাত্রী তার, রিক্সাওয়ালার পায়ে ধরার পর,
হরষে চুপিসারে বলল আমার মন, বাহ্ চমৎকার, কি সুন্দর ॥
লোকে বলে হয় সফল,
সেইতো অসহায় মজলুমের বল,
কষ্ট পাওয়া আঘাত খাওয়া দোফোটা চোখের জল,
তাইতো আবু হকে বলে,
কখনও কখনও নাকি পাথরও গলে,
করুনায় আর সমবেদনায়, বিধাতার আরশ যখন হায় কাঁপে থরথর ॥
সব পাড়া মহল্লায় চাই,
গন আদালত, মজলিশ, সালিশি দরবার, যেথা কোন অবিচার পক্ষপাত নাই,
এ সমাজের তৃণ মূলে,
কভূ যেন না পায় কোন অপরাধী ছাড় কিবা ছাড়া কোন কৌশলে কিবা কোন ভূলে,
হতে প্রতি ঘর, বাড়ী ও পাড়া মহল্লা গ্রাম,
না হয় কভূ কোন বিচারক বা কাজীর কলংক বদনাম,
হয় নায্য রায় ন্যায় বিচার, সকলে পায় সুবিচার,
পায় যথা সাজা, প্রজা কি রাজা, হোক সে অপরাধী রাজ পরিবার,
এই জাতি রয়, তাই যেন হয়, তড়িৎ কিবা তাৎক্ষনিক ন্যায় বিচারে সদা তৎপর ॥