আঁখি তার জলহীন ছলছলে,
নিজেরে হারায় স্মৃতির অতলে,
পূতেরে তার ফিসফিস করে বলে, এক বুড়ো বাবায় ॥
আমার বড় খেতে ইচ্ছে করে,
এক টুকরো গরম ইলিশ মচমচে কুড়মুড়ে,
গরম ভাতে, দূপূরে কি প্রাতে, দিলে তার সাথে জুড়ে, খেতে মন চায়, বলেছিল মনেপড়ে হায় তার পিতায় ॥
পেয়াজ কুচি শশা কিবা মূলা কাঁচা মরিচ একটু গরম মাছের তেল ঘূরিয়ে ভাতের উপড়ে,
আর সামান্য আমড়ার আঁচার রসুন ও সরষে বাটায় আজও মন চায় উপচে পড়ে স্বরনের ডালা ভড়ে,
খেতাম আগে বাবার ঘরে খাওয়াতো মায়, তাই আজও জাগে রসনায়, সবই তার এক থালায় বেড়ে, দেবে কি আমায় ॥
সে ইতো সুখে,
রয়েছে এ জগত সংসার বুকে,
যার নাই সখ সাধ, বাধা কিবা কোন বাধ অনটন ও দায়, এ সারা দুনিয়ায় ॥                
মন বলে কিছু নেই,
পোয়া বারো তার সব কিছুতেই,
শুধু ধন হলে আবু হকে বলে, ভাত নেই জাতে, খাসা তাতেই,
ক্ষতি নেই না থাকিলেও কেউ তার দলে,
শুকনাতে যার নৌকা চলে, যেন ছলছল টলমল জলে,
আহারে জলে স্থলে ও পাহাড়ে, ঠেলাগাড়ী তার চলে ধায় বিনা শ্রমে বিনা ঠেলায় ॥
কেউ পাবেনা,
শোন, কাউকে দেবেনা,
খবরদার, যেন আজ থেকে তা আর কেউ না খায় ॥
আমি করছি মানা,
না, তা কেউ খাবেনা,
মনে থাকে যেন, তা খাবে শুধু আমার দুঃখীনি মায় ॥
ইলিশ মাছের ডিম,
স্বাদে গন্ধে তা অতূলনীয় অপরিসীম,
সারা বছরের কিবা শুধু আজিকার,
খাবারে বড় অরুচি ও বাছাবাছি তার,
আর এটাই তার কাছে শ্রেষ্ঠ খাবার, সব দিন সব খাবারের তালিকায় ॥
ফ্রিজে তুলে রাখা,
খাবারের টেবিলে থাকা,
কিবা ওরে রান্না ঘরে হাড়িতে ঢাকা,
যতকিছু চোখে পড়ে মনে ধরে আর, রয়েছে সারা বাড়ীতে তার হাতের সীমানায় ॥
যখন ইচ্ছে হয় মনে লয়,
যতক্ষন তা এই বাড়ীতে রয়,
কোন নিষেধ কিবা বাধা বারন নয়,
খাবে তাহা যেটুকু যাহা আর যেভাবে যখন তার খেতে মন চায় ॥
কারো কাছে যে খাবার রুচিতে অনন্য,
খেতে পেলে ভাবে এ জীবন বুঝি তার হলো ধন্য,
মম বাসনা জাগে সবার আগে এ যেন মহৎ কাজ কিছু করিতে তার জন্য,
কোন কোন জন যেন এমন সাধ লয়ে আছে থাকে মরম পীড়ায়,
সাধ যেন হয়ে পড়ে হেন দায়, হায়রে কারো কাছে যেন তা বলা নাহি যায়,
সাধ্যের কাছে সে হেরে গিয়ে আপনি যেন আপনার মাঝে ভয়ে লাজে হয়ে পড়ে বড় বেশী অসহায় ॥
ঐ একই খাবার,
কারো কাছে হয়তবা তা ভীষন অনীহার,
কারোবা ভাগ্যে আবার জুটেনা সামান্য তার,
সারা বছরেও হয়তবা শুধু একদিন কিবা একবার,


০৮
দেখেছি এইতো হিসেব জীবনের চাওয়া কিবা পাওয়া না পাওয়ার,
আবার যেন দেখি কারো কারো,
ষোলআনা কানায় কানা একেবারে পোয়া বারো,
পড়ে ফাঁদে কারো মন নিরবে গোপনে কাঁদে না পাওয়ার হাহাকার,
কেউ ঢেলে দস্তরখানে দেয় ফেলে, কে তার খবর রাখো জানকি বুঝিতে পার ভেদ তার,
কেউ পায়না খেতে কেউ অপচয়ে রয় মেতে, উঠেনা আবার কারো হাতে কিবা পাতে মোটেও তার রুচি না হওয়ায় ॥
কত মজাদার,
হাজার রকম রয়েছে খাবার,
আহা কতবা রঙ স্বাদ আর খুশবো তাহার,
শক্ত নরম ঠান্ডা গরম শুকনো তরল জমাট কতনা তার বাহার,
তিক্ত নোনতা অম্ল মধূর শত মজায় ভরপূর অদৃশ্যমান অসীম অপার তার সম্ভার সমাহার,
আবু হকে বলে, আকাশে জমিনে জলে, বিশাল ভূবনে লক্ষ নেয়ামত তার রয়েছে ছিটায় ও ছড়ায় ॥
যার সৃজন যার দান,
কেরামতি মালিকানা কার কোন সে মহান,
এ বিশাল ভূতল, সাত সাগর ভরা জল, খুটিহীন সাত আসমান,
নিজে নাহি খায় তবে আহারে কমবেশী সবারে খাওয়ায়, আর এটা যেন শুধু তারই দায় ॥  
সে এক অবাক বিস্ময়,
হলে দেখাশেখা চেনাজানা সেইতো শুধু মানূষ হয়,
ভাবিলে ভাবায় তবে নিশ্চিত কিছু পায়, কিবা তার তূল্য কি আছে কার ভাবনায় কেবা তা জেনে লয়,
সত্য নহে আবু হকে কহে, কারো কাছে সে তার বিনিময় অধিকার প্রতিদান উপহার কিবা মূল্য কে বলেছে নাহি চায় ॥
কেউ চেয়েও পায়না,
কেউবা অঢেল পায় যদিও সে চায়না,
কানার লাগি সকলই অজানা, কভূ তার ভেদ বুঝা যায়না,  
কেউ ঢের আছে বলে একসের খায়, কেউ নাই বলে কিবা থেকেও বেশী খায়না,
কোথা এ ভূবন তল, সাগরে কত জল, কি আছে তাতে একাকার হয়ে মিশে জাতে, এক আকাশের সীমানা কোথায় ॥
কেউরে দেয় অঢেল,
কেউ চুপ করে চেয়ে থাকে ফেলফেল,
কেউ হাতের কব্জি আর কিবা তার নাক ডুবিয়ে খায়,
যেন কারো গাল বেয়ে কিবা থালা হতে উপচে গড়িয়ে পড়ে যায়,
কতনা ওরে অপচয় করে মন যখন যেমন চায়, হরষে রঙে রসে তারা দুহাতে বাতাসে টাকা উড়ায় ॥
বছরেতো শুধু একদিন একবার,
তা ও কেনরে সামান্য একটু ভাগ করে দিলে আবার,
লেজ হতে মুড়ো কেন সবটা নয়,
শুধু মাথা ও ডিম, পেটি কিবা পিঠটা নাহয়,
তোমার কি আছে কম, বলো পূরোটা একজনেরে দিলে কি ক্ষতি হয়,  
বিধিরে তুই খেতে দিলে যেন ওরে,
যেন তা খাওয়া হয় পেট পূরে এ মনটা ভরে,
হায়রে মজার ইলিশ,
তাই পূরোটাই একই দিনে একজনেরে একসাথে দিস,
যেন সব মজার খাবার ওরে, মজা করে অন্ততঃ একদিন পেট ভরে, খেতে পায় সকলে সবায় ॥
যেন সবাই কিনতে পারে, দোকানী ইলিশ বেঁচে তাই কেটে তিন ভাগ করে,
মাথা ও পিঠ, কলিজা ও ডিম আর থুতনী ও পেট, যার যেমন সাধ্যে কুলায় মনে ধরে,
তিন জনে কিনে আর খায় তিন পরিবারে,
এমনি করে একটি ইলিশ যদি ওরে যায় তিন ঘরে,
তবে কে কি আর বলো ভাগে পায় তার, ছোট্ট এক টুকরা মাছ যদি দুতিন জনে ভেংগে ভাগ করে খায় ॥  
দেখতে কেমন যেন লাগে,
শোনলে মরমে মমতার ঢেউ জাগে,                                                                                      ০৯
যদিও ব্যাথিত হই,
তবু আমি তাই মেনে লই,
করব কি, আমিতো আর দেবার কিবা খাওয়াবার কেউ নই,
কেননা এ বন্টন ফয়সালা,
তার খেয়ালের খেলা নিশীদিন সারাবেলা,
যার সংসার সেইতো যোগান আহার, মালিকানা দায় আর কারো নয়, করেছেন করুনাময় মহাবিশ্ব শাহানশায় ॥
হায়রে ইলিশ, যেন আজ সোনার হরিন,
তারে আমি কত ভালবাসি, দেখে চলে আসি, আর মনেমনে হাসি, যেন ওরে কমছে বাজারে দিনকে দিন,
তাই শুধু সে ইতো খাবে ভাই, যার আয় বেশী আর নাই, কোন ভাবনা ঋন কিবা কোন পিছুটান দায় ॥
অন্নদাতা ঐ সে রাজার,
মতি গতি ও ভেদ বুঝা অতী ভার,
সৃজননিধন লালনপালন জীবনমরন প্রার্চুয্যঅনটন সবই তার,
আকাশে ভূতলে জলে ইশারায় সব নিখুঁত চলে তার এই বিশাল পরিবার,
এমনই মহৎ উদার, যত মন্দ ভাল অবাধ্য অবিশ্বাসী অনূগত সবারই যোগান আহার,
নিজে খায়না সবারে খাওয়ায়, কেননা সবারে ঐ বিধাতায় দিতে খাওয়াতে ভীষন সুখ ও আনন্দ পায় ॥
কে তাহা জানে,
মনে রেখো বলি কানে কানে,
মেয়েটি আমার বিবাহের বন্ধনে,
হয় ভাবনা ও ভয় নিয়তির অমোঘ লিখনে,
যায় কোন ঘরে, কেমন সংসারে গিয়ে সে পড়ে, দোসর হয় তার কোন মানূষের সনে,
তাই শুনে রাখো হিরার মায়,
তার পছন্দের খাবার খেতে আর সে পায় কি না পায়,
দিওনা আমারে, পেটভরে খাওয়াবে তারে, সাধ্যের সীমানায় যখন যেটুকু পার তার পঞ্চ পরান ভরায় ॥
কেউ কেউ বলে যারে সময়ের ফের,  
কঠিন দিনগুলো যদি আসে টানা পোড়নের,
চারিধারে রয়েছে রেখেছে ঘিরে সীমানার এক লৌহ প্রাচীর ঘের,
বলছে মেয়ের মায়েরে মনের আকূতি ঢের, অল্প আয়ের পারেনা তবু মন চায়, বড় পরিবারের অসহায় এক বাবায় ॥
ইলিশ কেন সবাই এত ভালবাসে,
দেখি যেন সবে খুশীর জোয়ারে ভাসে,
অজান্তে অগোচরে সবারই নয়ন বদন হাসে,
যদি কখনও আস্ত একটা ইলিশ আসে, কোন বাঙালীর আংগীনায় ॥
ইলিশ বাঙালীর রসনায়,
কবে তার শুরু তা মোর অজানায়,
বাঙলার ঘরে, গন্ধে মন ভরে এলে আংগীনায়,
আহা কে ভূলায় তাহা, চলছে চলবে বংশ পরম্পরায় ॥