কই সেই,
আজ আর কেন নেই,
জোয়ারভাটার নদীটা টলমল,
স্বচ্ছ সরোবর ঐ ফটিক দীঘির জল,
পিপাসায় অধীর, মাটির কলসীর পানের পানি ॥
গোমতীর ঐ বাঁকে,
ষোড়ষী রুপসীরা কলসী কাঁখে,
সখীদের সনে দলবেধে দাড়িয়ে থাকে,
ফিসফিস করে কি যেন বলে, হাসিতে পড়ে ঢলে, ধরে গলে করে কানাকানি ॥
কে আছো কে পার,
যদি আদলের কাছে আসল না হার,
চকচকে দেখে গেলাম ঠকে যূগের বাহাদুরি ছাড়,
বড় দেখতে ইচ্ছে করে স্মৃতির ঝুলিটা খুলি, হারানো সে দিনগুলি দাওনারে আবার আমারে আনি ॥
আগে কত ভাল ছিলাম,
ছিল কথা ও কাজের মূল্য ভাল মানূষের দাম,
আজ কেন নাই পাপপূন্য ভেদ হালাল ও হারাম,
চাই বেশী ধন ভোগ বিনোদন রঙ মাখানো আরাম,
সুজন সুবচন গেল কই, মান লয়ে তার চিন্তায় মানী, কোনঠাসা যেন যত গুনী ও ঞ্জানী ॥
খোলা বায়ু মাটির পরশ,
ঊষা ও সাঁঝের রবির কিরণ কত সরস,
জোয়ারের জল রাখে সুস্থ্য সবল দেহমন সুনাম যশ,
হতো কূটূম্বিতা স্বভাব আর, আচড়ন ব্যাবহার মাথায় রাখি ও জাতবংশ জানি ॥
র্নিবাসনে ভক্তি শ্রদ্ধা আদব ও বিনয়,
আকিদা ও আখলাক বইয়ে বন্দি থাক কালের কাছে তার হয়েছে পরাজয়,
সেইতো আমার ভয়,
আধূনিক সভ্যতার নামে না জানি আসিছে ধেয়ে এ কোন অবক্ষয়,
নারী কিবা নরে, ঘরে ও বাহিরে কথা বলা নীচূ স্বরে, পথ চলা পাশ কেটে ঘার নীচূ করে, সব কাজে গুরুজন মানি ॥
হরেক রকম খানা,
কোনটা নিরাপদ নাই জানা,
মায়ের হাতের সেই মজাদার রান্না,
জানি আর ফিরে পাবনা তবুও তা ভূলিতে পারিনা,
দেখি চারিধারে মোর,
কতনা মধুর স্মৃতির ঘের নতূন পাওয়ার নেশার ঘোর,
নিতে চায় আমারে, যেন জোড় করে ধরে, দুষ্ট বিভোরে করে টানাটানি ॥
মাটির হাড়ি,
ভাত দে মা তাড়াতাড়ি,
জমে থাকা কই মাছের তরকারি,
খেয়ে দেখতে যাবো, খেতে দিত মায় মাটির হানকে ভাত বাড়ি,
পূব চকে চরের জমির হালিক্ষেতে এলো কিনা জোয়ারের পানি আর কিবা দশা গাঙের টেকের মাছের ঘেরখানি ॥
ভিতরে বাহিরে উঠান,
ধানের পাড়া খেড়ের টাল কাড়িকাড়ি ধান,
পথের মাথায় ঐ দেখা যায়, মাঝিবাড়ীর খেয়াঘাট,
পুকুর পারে সারিসারি রসের কলসহাড়ি তারপর পাকা ঘাট,
তালগাছ বারমাসের তেরফলের ঘন গাছগাছালি বাঁশঝাড় পার হলেই বিশাল খেলার মাঠ,
আজ আর ঐ জায়গাটা তার চেনা যায়না,
আমিই বানিয়ে ছিলাম, দুই কামড়ার গাছের পালার টিনের পায়খানা,  
ঢাকনা খুলে স্মৃতির পাতায়,
আমারে হায় টেনে নিয়ে যেতে চায়,
আজও মন থেকে মুছে যায়নি দূর হতে কুয়াশায়,
এ ভবে তা আরকি হবে, যদিও আবার হেথা যেতে চায়,
ঐ যেন আবছা দেখা যায়, মধুময় স্মৃতি দিয়ে ঘেরা খিরাই ক্ষেতের নাড়ার ডেরাখানি ॥
নরম মরমে,
কত র্হষ তিক্ত বিষাদ আঁধার কোনে গহীন গোপনে রয়েছে জমে,
কেন মন চায় তবু,
জানি হারানো দিন আরতো ফিরে পাবনা কভূ,
কত অনটন, প্রানপণ রণ বিষাদ লগন, নিরব রোদন,
কত র্হষ বিনোদন  সেই মধুক্ষন, তবু আর চাহেনা মন পূরনো গ্লানী ॥
মন করে ক্রন্দন মাটির কলসীর মায়ায়,
পল্লী বালার কাঁখে মাটির কলসী মানায়,
নদীর ঘাটে তার রুপলাবন্যের শোভা বাড়ায়,
কাজে যেতে সবাই যেমন বধূ কিবা মার হাসি মোখ দেখিতে চায়,
পথের মাথায় ভরন কলসী তেমন দেখিলে কারোকারো মন যেন খুশীতে ভরে যায়,
সিক্ত বসনে উদাসী মনে ভরাকলসী কাঁখে নদীর বাঁকে ¯œানের ঘাটে দাড়িয়ে থাকে ঠায়,
প্রকৃতি প্রেমিক রসিকা কবির চোখ সে রুপ দেখিতে যেন হন্নে হয়ে নিশি দিন ঘূরে বেড়ায়,
রমনীর দল বাতাসে উড়ায় আঁচল উজানের মাঝিও তা দেখে খুশী হয়ে যায়,  
বঁকের সারি এপারে ওপারে আড়াআড়ি দেয় পারি,
পেটভরে মাছ ধরে খায় করে কাড়াকাড়ি টানাটানি, যেখানে পাতা আছে বড় খড় খানি ॥
মাটির কলসীর জল,
সুপেয় বিশুদ্ধ ও গ্রীস্মে শীতল,
সেকালে পানীয় জল ফুটাতে হতোনা,
তা নিয়ে ছিলনাতো কারো মনে এত আজিকার মত ভাবনা,
এত রোগ বালাইও ছিলনা, সে ছিল প্রকৃতির উপহার লও বা না লও তাহা মানি ॥
ঐ কলসী,
আমিযে তরে দারুন ভালবাসি,
তবে তা নয় যা হয় ডুবিয়ে মারে সরলা পল্লীবালার গলার ফাঁসী,
অ আমি তার লক্ষ হাজার রুপের অরুরাগী দাস,
ঐ রুপ দেখা আর ছবি আঁকা তার সে যে আমার বিনোদ বিলাস,
মেটাতে প্রকাশে গোপনে মম পোড়া মন আর খরায় পড়া আধমরা দেহটার দারুন পিয়াস,
তাই, আমি ঘরে নিতে চাই চক্ষু জুড়াই, আমার সোনার মাটির কলসীখানি ভরে জল দিয়ে কাঁখে সাজিয়ে সহ¯্র নাতনী ॥
অ মাটির কলসীরে Ñ
দুহাতে ঝাপটে তরে,
এ বুকে মোর জড়িয়ে ধরে,
সে কথা যখন ভাবি মনে পড়ে,
আমারযে বড় কানতে ইচ্ছে করে,
দেখতে পাবনা আর হয়ত শত বছর পরে,
জানি ঠাই হবে তোর, হয়ত যাওয়া হবেনা মোর, শুধু যাদুঘরে,
খুঁজেও আর পাবনারে এ সমাজ সংসারে গঞ্জে গেরামে কিবা কোন শহরে,
তাই এখনই ওরে, শুনে দেখে লহ পড়ে, শিখে জানি সঞ্চয় ভরে আহরণ করে, আকাশের নেয়ামত সুধার অমোঘ বাণী ॥
ঐ মানূষগুলি, যারা ছিল আজও আছে সহজ সরল,
মনে রয়েছে ঠাসা আলো ও ভালোর আশা ভালবাসা আর অসীম অপার সততার বল,
যূগের বদল যেন করছে তল তাদেরে কাবু করে হীনআশা র্কম্মহীন কোনঠাসা ও অভিমানি ॥