পা-হা-ড় ॥
কত জীব ও প্রানীর,
অভয় শান্তির নীড়, সুখ সুনিবিড়,
কোন টা পাথর আবার কোন টা মাটির,
এত সুন্দর যা দেখার পর, হয়ে যাই আবেগে অধীর,
কেমনে দেখাই, যার ঐ চোখ নাই, অপরুপ কি শোভা তার ॥
ঝর্নার ফটিক জল,
ঝড়ে বহে ঝরঝর কলকল,
কোথাও বা ঘন কোথাও বিরল,
গাছগাছালী কত পাখপাখালীর দল,
পাহাড়ী ছোট নদী ভাটিতে বয়ে চলে ঢেউহীন স্বচ্ছ নীল মৃদু টলমল,
ঘন সবুজ ও কি তার মায়াবী বাহার, চারপাশ সতেজ ভরপূর একাকার ॥
সূদুর গহীনে,
গিয়েছিনু একবার ভ্রমনে,
অচেনা অজানা পথ চিনেচিনে,
জীবন চলে বিজলী বাতি ও শোধিত খাবার পানি বিনে,
পুকুর নদী চাপকল র্ঝনা নেই, তবু কত সুখ হেথা রাতে কিবা দিনে,
নাই পথঘাট হাটবাজার দোকানপাট, তাই সংগে করে নিয়েছি পানি ও শুকনো খাবার কিনে,
নাই খেতি চাষবাস, এমন ইতো বারমাস, তাতেই বসবাস, কি আছে হেথা আর, ছাড়া শুধু প্রকৃতির শোভা ও সুধা সম্ভার ॥
দুচারটে বাড়ীঘর,
ছাড়া ছাড়া অনেক দূর পর পর,
দেখিতে স্বজন কিবা বেড়াতে তাদের বাটীতে,
চড়াই উৎড়াই কোথাও ছিন্ন কোথাও গুচ্ছ কেমনে থাকে তারা যায় হাটিতে,
পাহাড়ের ঢালে আনাচে কানাচে কোন টা মাঁচানে কোন টা মাটিতে, ঘনঘন হয় মাটি কাটিতে,
হলেও ঐ ঘরবাড়ী গুলি বাঁশ বেত ও পাতার তৈয়ার, দেখতে লাগে যেন বেশ চমৎকার ॥
কেউ জাত পাহাড়ী,
কেউ অভাবে পড়ে নেই বলে ভিটাবাড়ী,
স্বজন ও নিজ এলাকা জনমের তরে এসেছে ছাড়ি,
কেউ জীবে প্রেম, কেউ অগ্নি কিবা মূর্তির উপাসক, কেউ এক বিধাতার পূজারী,
কারো সনে কারো নেই আড়ি কিবা বাড়াবাড়ি, এমনি অসহায় আর যাযাবর কত লাখো পরিবার ॥
কি কাজ করে, কেমনে চলে খায়,
ঝড় তুফান আর শীতে কিবা বরষায়,
গাছের শুকনো পাতাডাল ঢের পাওয়া যায়,
তা্ই সারা বছর তারা আছে শুধু এই খড়ির সুবিধায়,
এমনই পাহাড়ী জীবন, কার কি আসে যায়, পড়েছে দায়,
কত সাপ জোঁক কীটপতংগ, কেমনে করে দিন কাটে রাত যায়,
নাই টিভি নাই মোবাইল, কজনে তার সে খবর রাখে কিবা আর পায়,
কত জীবন এমনি নিরুপায়, কোথায় জবাব পায়, ঘূরে মাথায় অগনিত সে প্রশ্নের সমাহার ॥
শতকরা পাঁচজন,
সামান্য স্বচ্ছলতায় হয়তবা রয়েছে এমন,
যারা গরু ছাগল হাস মুরগী ও কবুতর পোষে,
নাইবা হোক, নহে তবে কেহ কোন আক্ষেপ কিবা রোশে,
কই কেউতো তবু তারা আপন ভাগ্যটারে একেবারে নাহি দোষে,
রবি শশী শুধু সময়ের স্বাক্ষী যার, চুপচাপ বসে, কষ্টে কিবা হরষে খোশে করিছে জীবন পার ॥
বন্য হাতী কিবা হনূমানের পাল,
দল বেঁধে এলে, হলে নাকাল বেসামাল,
সব কাজ ফেলে পড়শীরা সকলে মিলে, মিলিয়ে তাল,
তারা বাঁচায় বাঁচে, পরে খুশীতে গায় নাঁচে, বাজিয়ে ঢাকঢোল জ্বালিয়ে মশাল সমস্বরে করে কলরোল চিৎকার ॥
জী-ব-ন,
কোথায় কেমন,
কত রুপ কত রঙ, কার কোন অনটন কষ্টবেদন,
বসে বসে ভেবে বিষন্ন হবে, আর সে খবর লবে তার, এত সময় কিবা এমন মন বলো আছে কজনার ॥
কেউ করে জুম চাষ,
সে কপাল কি হয় সবার সুখ হবে বারমাস,
কেউ আনারস লেবু পেয়ারা কলা তাতেই শান্তির বসবাস,
তবে তাতে ইবা আর কয়দিন, কারো ফুরায়না সমিতির ঋন, ভাবে এভাবেই যাবে দিন, হয়ে নির্মম নিয়তির দাস,
আবু হকে বলে,
এভাবে বলো কদিনইবা চলে,
কষ্টের ভাগ নিতে কে থাকে কার দলে,
তীর ধনূ দিয়ে করে বধ কিবা শিকার, বন মুরগী খরগোশ কিবা বন্য ষাড়, হয়ত কদিন খায় মজার খাবার ॥
নিত্য জীবন সে যেমনই হোক,
জানিনা তাই ভাবনা আমার, কি করে ঐ পাহাড়ী লোক,
হয়ত প্রকৃতি লয়েছে তাদের সেবার দায়,
আর গোপনে তাদেরে সুস্থ্য থাকার মন্ত্র দিয়েছে শিখায়,
নাহলে তারা যায় কোথায়, ঐ দূর্গম এলাকায়, হলে দরকার তাদের চিকিৎসার ॥
কত অনটন আর,
যদিও শত কষ্টের সমাহার,
তবু ঐ মানূষগুলিই এমন, নেই যাদের তেমন, চাওয়া কিবা আশা ও না পাওয়ার কষ্ট অভিযোগ হাহাকার ॥
নদী সাগর বন,
পাহাড় ও আকাশ প্রসন্ন বিশাল ও গহীন করে মন,
পেতে বিণোদন ও অমূল্য রতন, গোপনে হেথা কর বিচড়ন,
খুলে দেয় সব বাঁধা ও বন্ধন, তৃতীয় নয়ন আর দেহমনের যত জানালা দুয়ার ॥
একদা গেলাম বেড়াতে,
সে কি আর বাকী আছে বলতে,
প্রকৃতির সনে হলো আলাপন পথ চলতে চলতে,
শোভা দেখে লও, মনভরে কথা কও, সময়টারে কাজে লাগাও সে নয়ন আছে যার,
সেতো আর কিছু নয় প্রকৃতি আর জীবনের কোটি রুপের চমক ও বাহার, বিশ্ব প্রভূ বিধাতার ॥
বিশ্ব জগতটার অপার এ রুপ সুষমা আর,
তার ভিতরে অজানা লুকানো শত কষ্টের গল্পটার,
দেখা ও লেখা শেষ না হতে যেন না ফুরায় মসি মম প্রিয় কলমটার ॥