পর্ব - ০১


এইতো জীবন, পরকে করিতে হয় আপন আর নিতেও হয় কিছু দায় ॥
তাদের সবারে বলে দিও,
যারা অনটনে ও কষ্টবেদনে তারা সবাই আমার আত্বীয়,
যদিও সাধ আছে মোর সাধ্যতো কিছু নাই,
তাই কারো ভালোর তরে আমি কিছুই করিতে পারি নাই,
আমার দোয়া তাদের সংগে রহিল আমি সবারই পরম ভালো চাই,
আমি কেমনে বলো তাদের নাইগুলি ভরে দেই আর ঐ সবারে একবেলা খাওয়াই,
ইচ্ছাতে কি ওরে কিছু হয়,
সাধ্য বিনা সাধগুলিযে বড় অসহায়, আজীবন কোণঠাসা হয়ে রয়,
অভিমান দীনতা কিবা রাগ,
ধনীরা তাদের রঙমাখানো হর্ষ ও সুখের ভাগ একটুও দেয়নি দিলোনা তাদের যারা দুঃক্ষ-বেদনায় ॥
দেখিনি অঘ্রান পৌষ মাসে,
মৌ মৌ ঘ্রান যখন নতুন ধান উঠান ভরে আসে,
ফাগুনের আগুন ঝরা চৈতের দারুন খরা ও আকালের হুতাশে,
দেখিনি মদির নেশায় ভরা বাসন্তি বায়,
কিবা রিমঝিম বৃষ্টি যখন টিনের চালে বাজনা বাজায়,
পানির পাখীরা যখন জলে ভেসে বেড়াতে আসে শ্রাবণ-ভাদরের বরষায়,
দেখিনি কারো মোখ আমি মোর আংগীনায়, জীবনের বারোমাস স্বপ্ন আশায় কষ্ট হতাশায় ॥
সবাই আমার রক্তের,
তার উপর মোহাম্মদী বন্ধনের ঘের,
একই স্রষ্টা আর এক পরিবার মা হাওয়া ও বাবা আদমের,
তা নহে এমন,
কেউ পর কেউবা আপন,
আমার মাথার দায়,
মনেতো আমার কত কিছুই বলে ও চায়,
আমার সীমানাতো কিছু গবেষণা, সাধনা ও কিছু চেষ্টা করা যায়,
তবে সাধন পূরণ সেতো আমার ইচ্ছে নহে, তা সবে পায় পরম দাতা প্রভুর করুণায় ॥  
কত ব্যস্ততা শত আয়োজন,
পেরেশানি তাড়না কত প্রস্তুতি প্রয়োজন,
অপার আনন্দ খুশীতে ছেলেমেয়ে নাতীনাতনীগণ,
শহর থেকে গ্রামের বাড়ী বেড়াতে যাবার সে এক হর্ষ লগন,
দেখোনা ঈদের ছুটিতে, কেমন উল্লাসের লুটোপুটিতে সবাই ছুটোছুটি করে বাড়ীতে যায় ॥


পর্ব - ০২


কত যানজট শত ক্লান্তি,
পৌছানো যায়না বেলাবেলী তবু সে এক আনন্দ ও প্রশান্তি,
কিযে ঠেলাঠেলি,
কি নিয়ে যাই, ভুলে রেখে কোনটা ফেলি,
এক পথচারি ধাক্কা খেয়ে গিয়ে অন্যজনের গায়ের উপর পড়ে, ক্ষিপ্ত হয়ে সে করে গালাগালি,
সবে হয়ে ঢের নিয়তির ফের সময়ের বিলম্ব ও বিড়ম্বনার যাত্রী,
কত মধুর ঐ ভ্রমণ, উল্লাসে আমোদিত ছোটবড় সবার মন ঐ পুলকে যেন নাঁচেগায় ॥
গ্রামে ছিল বাবার ছোট্ট বাড়ী,
আমিও ভাগিদার, হকটা আমার দেইনি ছাড়ি,
তিনযুগ আগে কি আশায় কোন তাগিদে আমি শহরে দিয়েছিনু পারি,
ব্যবহার আচরণ ব্যস্ততা নাকি অনটন,
জানিনা কি কারণ, কেন হয়েছিল মোর গোপনে সবার সনে অঘোষিত আড়ি,
ভাইয়েরা নিজেরাই ভাগ করে নেয়,
বাড়ীতে জায়গা কম বলে আমাকে বাড়ীর পাশের জমিতে দেয়,
শেষে মাবাবা মারা গেলে,
কে যেন আমারে দেয় আরও দূরে ঠেলে,
আজও আমি পড়ে আছি সেখানে, মোর পরাণে সেইযে বাড়ীর টানে পড়েছিনু আমি ভাটায় ॥
শেষে আর বাড়ী করা হয় নাই,
ভাড়াটে বাসায় সেইযে হয়েছিল কবে মোর ঠাই,
বুঝিবা তাই ছিলনা কাঁচা পয়সা আর আমার কোন বাম হাতের কামাই,
সবার কি আর তা সাজে, বলো সবাইকি পারে তাই,
দেখি ভাই তারই বড়াই, বাকীরা যেন সবাই কোনঠাসা লাজে, আমারতো নাহি তাই,
আবু হকে কহে,
কোন পাপপুণ্য কিবা হালালহারাম নহে,
কজনে সে টানাপোড়ন আর কষ্টের ভার বহে ও সে যাতনা সহে,
দেখি সবে শুধু জাহির করে বেড়ায় তাই,
এ সমাজে কার আছে বাড়ীগাড়ী আর কার নাই ঘরে স্বর্ন ও ব্যাঙ্কে টাকা বোঝাই,  
ঘুরে ঘুরে নানা শহরে বিচরে পরের সনে মিতালী করে কেটেছে আমার প্রায় সবটা জীবন বিভিন্ন জেলায় ॥
বউ ও ছেলেমেয়েদের লাগি,
হয়েছিনু আমি যাযাবর মুসাফির ও বিবাগী,
কত কাজ করেছি জীবিকার লাগি নীদহীন অগনিত রাত্রী জাগি,
ঐ সে অক্ষমতা ও ব্যর্থতার রোগ,
দীনতা হয়ে অনেক কষ্ট লয়ে বুকে ও দেমাগে করে বাড়তি চাপ যোগ,  
আজও তাদের ঐ সে অভিযোগ, আক্ষেপ ও অভিমান ক্ষোভ নিয়ত অনুক্ষণ নাজেহাল করিছে আমায় ॥


পর্ব - ০৩


কেন হলোনা আমার বাড়ীটা কই,
আমিকি তার এটুকু পাওয়ার যোগ্য গোলাম নই,
মাঝেমাঝে তাই, এই ভাবনায় নিজেরে হারাই ও অধীর আকুল হই,
সব টাকা ব্যাঙ্কের আর এ সমুদয় সম্পদ আমার দেখি তার হাতেই বড় হবার মই,  
ভেবে অবাক হই ও কষ্ট পাই,
তাদের মত পরের ধনে বড় হতেতো, কভু আমি নাহি চাই,
যেজন এমন কথা কয়,
মানেনা বাণী ও বচন জানেনা এ জীবন, জগত ও নিজ পরিচয়,
ঐ আসামীরা যখন যাবে আদালতে দাড়িয়ে কাঠগড়ায়,
কি হবে তাদের উপায় আর কই পাবে মিথ্যার ঝুড়ি ও ঝাড় উকিল-মুক্তার ও ব্যারিষ্টার কে লবে দায় ॥
সব ধন যত রঙ শত সুখ তার,
জানি কোন দোষ নেই ঐ দাতা বিশ্ব বিধাতার,
কিসের কানুন বিধান কি মূল্য আছে এ যুগের কাছে সততার,
বলে এ হার নাকি আমার অযোগ্যতা ও অদক্ষতারই পুরস্কার,
আমার অতি কাছের মানুষেরাই বলে বারবার,
আমি নাকি বুদ্ধিমান ও স্মার্ট নই আর তাই আমার হয়েছে এই পরাজয় হার,
দাতায় না দিলে কেমনে পাই আর,
সে অপবাদ বলো আমি মেনে লই কেমনে আর করি তা স্বীকার,
ওরে ভাই যে যাই বলুক,
এ অনটন আর পরাজয় হারই আমার সাফল্য সুখ,
বিশ্বাস ভালোবাসা আশা ও নির্ভরতায়, আমি তার গোলাম হয়ে ঐ মোখপানে রয়েছি তাকায় ॥
দেখেছি ঢের এ জীবনে আমি কথা মিথ্যে নয়,
বিত্তশালীরাই এ সমাজের সবার সেরা ও দামী হয়,
তাদের শক্ত পেশী চাহিদাও বেশী পরের পাওনা কেড়ে লয়,
জেনেছি এ যুগের হালে মানেনা কপালে ধীমান ও স্মার্টযে যাহারে কয়,  
তারাযে অকুতোভয়,
মিথ্যা মন্দ ঘুষ ফাঁকি প্রতারনা অভিনয়,
কুটিলতা কপটতা চটুলতা বাচালতা সব ঘাটেই সফল ও আনে জয়,
এ সাফল্য তার ও জয়জয়কার নহে আপনার, শুধু বাহিরের রঙ মাখানো পসার হবে সহসা লয়,
পরের বাড়ীতে মোর যতনে গড়া বাসা,
কেনা বা গড়া সেতো জানি শুধু দুদিনের তরে আসা,
কভু মনে হয়নিতো পর, ঐ ছোট্ট ঘরই ছিল মোর পরম আপন ও খাসা,
কতনা স্বপ্ন আশা, কত মধুর এক শান্তিপুর মায়ার জালবোনা ও কাছে টানা ভালবাসা,
চড়ই পাখীর নীড়, যেন এক ষান বাধানো ঘেরা প্রাচীর, তবু আপন তার অধিবাসীর সুখের কুটির যাদুর ছায়ায় ॥


পর্ব - ০৪


কেন বলিশ তোর নাই বাড়ীঘর,
কেনরে ভাবিস, মনটা কেনযে এমন হয়েছে তর,
যদিও ভাড়ায় থাকিস, তবুতো তা ইমারত দেখতেও খুব সুন্দর,
নেই ঝামেলা হয়না দিতে তার ছানি, পড়েনা পানি করতে মেরামত বছর বছর ।
চারিধারে ঘের ছাউনি মাথার উপর,
কখনও পায়না তোরে কোন রোদ বৃষ্টি ও বাদল ঝড়,
থাকিস কত সুখে হেন পরিবেশে যেন মায়ের পেটে ও বাবার বুকের ভিতর ।
এক মুসাফির যাযাবর,
পরদেশে পরবাসী বানিজ্য সফরে আসি দখলে পরের বাড়ীঘর,
খেলাপী ঋনদার অপরাধী আসামী সবে, সবইতো ছাড়তে হবে, আর মাত্র অল্প কয়দিন পর ।
কেউ গাছের কোটরে,
তুই থাকিস মহাসুখে অট্টালিকা পরে,
যারা বন বাদারে সারা বছর কষ্ট পায় রোদ বৃষ্টি ও বাদল ঝড়ে,
বুকে নিয়ে শিশু সন্তান, উপরে খোলা আসমান, গাছের ডালে পাতার ফাঁকে বাসা তৈয়ার করে,
দেখনা ওরে চক্ষু খুলে,
একটু ভেবে আছিস ডুবে তুই কোন সে ভুলে,
আমার সোহাগ সৃজন কত অসহায়,
তবুতো তারা গুনগান গায় আর নিত্য সবে পেটভরে খায়,
লক্ষ কোটি পোষ্য পরিবার, কেউতো কভু করেনা হাহাকার, যদিও জনমভর তারা এত কষ্ট পায় ॥
সাধ আছে সাধ্য নাই,
রাজার কাছে কাঙালের মত তাই,
একই চাওয়া হয়নি বলে পাওয়া তবু তা নিত্য চাই,
এই মাটির দুনিয়া ছাড়ি,
নাকি বিণামূল্যে আমিও পেতে পারি,
আকাশের ঐ ঝিল বাগানের এক বিশাল প্রাসাদ বাড়ী,
পাই বা না পাই সে আশা কভু ছাড়েনা আমায়, যদিও মোরে ঝাপটে ধরে কাবু করিতে চায় হতাশায় ॥
সে পাওয়াতো ইজারা নহে,
সাফ কবলায় পায় আবু হকে তা জানে ও কহে,
দয়া হলে রাজার দিলে, পাশ করিলে তার সব পরীক্ষায়, মিলবে সে বাড়ীতে ঠাই চীরস্থায়ী মালিকানায় ॥
বাবামা এখন কোথায় কেমন আছে,
সে চল বা সুযোগ নেই, দেখতে যাবো চিঠি দেবো তাদের কাছে,
হয়না দেখা কোন কথা পাইনা খবর,
ঘুমিয়ে আছে একা নিঝুম ছোট্ট একটা মাটির ঘরের ভিতর,
যা ছিল সব ছেড়ে বিত্তধন সোনাদান টাকাকড়ি বাড়ীঘর ও আপনজন সবারে করে পর,
জানিনা তাদের কি প্রয়োজন বা কি খেতে চাহে মন, কেমন করে কি পাঠাবো তাদেরে কোন ঠিকানায় ॥


পর্ব - ০৫


জানি আমিও হেথা যাবো,
নতুন দেশে গিয়ে নাম পরিচয় স্মৃতি সব হারাবো,
খুঁজেও তাদের দেখা আর, কভু আমি জানিনা পাবো কি নাহি পাবো,
দুনিয়ার ধনজন আর,
যত সব নেয়ামত ও দান বিধাতার,
জোয়ার ভাটায় আসে যায়, যদিরে হায় তা একবার হারিয়ে যায়, খুঁজেও কেউ আর ফিরে কভু নাহি পায় ॥
আমি বড়তো হলাম,
কই সে মোর বড় হবার দাম,
ধনেজনে ও বিদ্যায় তবে কিইবা পেলাম,
নগদে বাকীতে কোনটাযে ফাঁকিতে কিবা হয়েছে নিলাম,
লোকে যে যাই বলে, জানিনা আমি আসলে, কি পেলাম আর কোনটা হারালাম ।
হয়েছ বয়সে যতই বড়,
মনরে নিরালে বসে তুমি হিসাবটা কর,
বলো করেছ তুমি কোথায় কবে ওরে কোন সে ভাল কাম,
মহান কোন সে দান, অন্তরে বাহিরে ফেলেছ রাজার তরে তোমার এ দেহটার কয় ফোটা ঘাম ।
বুঝিলাম সব মিছে অকারণ,
যার পিছে ছুটছে মানুষ ও দুনিয়ার এ জীবন,
দিনেদিনে শত ঋনে শুধুই বাধা পড়িলাম, হয়নিতো কোনই সাধন,
ওরে মন কে তোর মহাজন ও আপন জনা,
কে কি আশা করে ও পায় আর পায় বলেইতো চায় তা আছেনি জানা,
দেনাপানার ঐ হিসাবখানা কেমনে কানার হবে জানা, ঠিকঠাক ষোলআনা আর মানুষ হবারযে কত দায় ॥
আমি হেথা যাবো কবে,
এক বৈঠকে মিলবো আবার সবে,
কেমনে বুঝাই ছিল কতযে নাই আর অনটন,
তবু ছিল ঐ ঘরে, বাবামার আদরে কতযে সুখ বিনোদন,
এক ঘরে গাদাগাদি করে জীবনের বিশ বছরে, ছিলেম আমরা এগারজন ভাইবোন বাধা পড়ে এক সূতায় ॥
আমার ওতো মন চায়,
আর দশজনার মত চলে ফিরে খায়,
ব্যাগভরে বাজার করে ঐ বাড়ীতে বেড়াতে যায়,
সাধ্য আমার সাধ গুলিরে কেন দিয়েছে ভরে আহা দীনতায়,
তবু কোনঠাসা মনমরা নয়, দেখে চড়ে বসে সাদাকালো ঐ মেঘের ভেলায়,
এ ভুবনে বিধাতার ছড়ানো রুপ আর, কার জীবন কেমনে যায় কষ্টে দুঃখে আপদে নিদানে কে কেমন রয়েছে কোথায় ॥


পর্ব - ০৬


নিজের হাতে কিছু গড়ে,
মন ভরে দীনজনে অঢেল দান করে,
নিজেরে পরের তরে অন্ততঃ ঐ দুটোদিন শুধু প্রতি বছরে,
মিশে তাদের সনে গিয়ে হারায় দেবো উজার করে যার নাই তাকে ভরে অকাতরে মোর দুহাতে বিলায় ॥
কত রঙমাখা ছবি আঁকা বিধাতার এ সাজানো ভুবন,
মধুভরা হেন এক মৌচাক যেন মধুলোভে মৌমাছিরা সারাক্ষণ করছে ভনভন,
পেতে খুঁজে জীবনের সপ্ত স্বাদ,
ছড়ানো শত সুখ, তাড়িয়ে যত সব কষ্ট দুঃক্ষ বিষাদ,
বরফের তলদেশের ভুতলে,
কিবা অতল গহীন ঐ সাগর জলে,
অসীম ঐ নীল আকাশে, যেথা আঁধার রাতে কোটি তারকারা হাসে, বিজন বন মাঠঘাট তপ্ত মরু বালুকায় ॥
সাজানো এ মহাবিশ্ব ভুবন,
ছড়ানো ছিটানো বিছানো কত মানিক রতন,
কে তার কারিগর এত সুন্দর কার শতকুটি ঐ বাহারি সৃজন,
ধৈর্য্য ধারণ হোকবা না হোক পূরণ পেতে তব ঐ সব চাওয়া কিবা প্রয়োজন,
একেবারে তা ভুলে গিয়ে,
কোন মূল্য কিবা তার প্রতিদান কিছু না দিয়ে,
কে দেবে জবাব এ প্রশ্নটার,
আমি পোষ্য গোলাম কার কেবা মনিব পালক প্রভু আমার,
কি পেয়ে তাহলে কোন সে রশদের বলে, বেঁচে আছি তবে আমরা সবে কেমনে তার সংসারে কার করুনায় ॥
বাড়ী-গাড়ী বেশী বিত্তধন জীবনের জৌলুস নেই বলে,
ওরে কে বলেছে তোরে এ জীবন ওরে হয়েছে মিছে কিবা গিয়েছে বিফলে,
এ জীবন বিত্তধন ভোগবিলাস বিনোদন চিরস্থায়ী হলে, নাহয় যুদ্ধ করেই তা নিতাম দখলে,
এ সংসারে কেউ খোশ আর,
মানুষের মন বুঝা আর তা পাওয়া যে অতিশয় ভার,
কেউ না পেয়েও খুশী কেউবা আবার অনেক পেয়েও গোপনে রয় অসুখী বেজার,
কারো নেই কারো আছে হাহাকার,
এমনি করেই দিন চলে যায়, বিরস কিবা সোনালী জীবনটা কোন্ ফাঁকে হয়ে যায় পার,
গোঁধূলী বেলায় কজনে আছে হায় পারে তার,
নিরবে নির্জনে বসে ঐ হিসাবখানা কষে ও মিলায়, সব তার দেনা-দায় লোকে ও মহারাজায় কে কত তার কাছে পায় ॥


পর্ব - ০৭


আছে হারজিত লাভক্ষতি,
কেউ মন্থরে কারোবা অতিশয় ক্ষিপ্র গতি,
কেউ পায়ে হেটে সোজা পথে,
কেউবা চলছে আবার চড়ে সোনার উড়াল রথে,
সব ভালো তার হয় শেষটা তেমন যার, রায় হবে যার শেষ পরীক্ষায়,
জীবন মেলায় দৌড়ে কেউ জেতে কেউবা হেরে যায়, চাওয়া পাওয়ার ঐ কঠিন তিক্ত বিরস প্রতিযোগীতায় ॥
মাটির দুনিয়ার এইতো জীবন,
মনেহয় কত বড় আসলে অল্প সময় কিছুক্ষণ,
যেজনার কষ্টের রণ, দিন যেন তার কিছুতেই ফুরায়না,
কেউ না চেয়ে অনায়াসে পায়, কেউবা শত চেষ্টায়ও যেন কিছুই পায়না,
বিধাতার ভেদ বুঝা ভার,
দেওয়া না দেওয়া ইচ্ছা ও করুণা তার,
কেউবা আবার আরও চায় মন ভরেনা পেয়েও এক পাহাড়,
বুঝি ভুলে আছে ভুলে গেছে সবে, সবকিছুই ছেড়ে যেতে ও হিসাব দিতে হবে অবশেষে সবাই তার সকলই হারায় ॥
কোন কষ্ট নাই,
খুউব ভালো আছি আমি ভাই,
সুখেই আছি তাই সব ভালোতে জড়াই,
হয়ে পরের ধনের এক ইজারাদার কেমনে সে করে বড়াই,
কিছু কিছু ধন নাহয় আমি পাইনি বলে,
যা পেয়েছি তা সামাণ্য কিবা অতি তুচ্ছ নগন্য হলে,
ওরে বোঁকার দল, তবেতো তোরাই কানা জীবন দেখি তোদেরই তাহলে,
ষোলআনা বিফলে, বুঝিবে যখন সব হারাবে, অন্ধকারে পথ নাহি পাবে, নিঝুম বিজন এক গহীন রাতের বেলায় ॥
একটাই ঘর,
ধীরেধীরে যেন তারপর,
দিনেদিনে তা ভেংগে হলো দশঘর,
যখন একটি করে পার হয়ে যায় ও আসে নতুন বছর,
কাছের মানুষ আপনজন আমরা সবে, ক্রমশঃ হচ্ছি যেন সবে আরও পর,
কজনে তা জানে কেন মাটির দুনিয়ায় মানুষ এক ভ্রান্ত পথিক ও শ্রান্ত মুসাফির যাযাবর,
কবে আসিবে সমন আর কবে কখন কার শেষ হবে এ সফর, গিয়ে কোনঘাটে কোন হাটে-বাটে কোন রংগমেলায় ॥


পর্ব - ০৮


খুব একটা দেখা হয়না,
কেউ কারো তেমন খবরও লয়না,
উঠে গেছে যেন আজ ঐ একসাথে বসে খানা,
কোন অনুষ্ঠানে না গেলে শেষে গৃহকর্তা যেন কথাই কয়না,
এ লোক সমাজে ছোট হতে বলো ভালো লাগে কার, মন চায় হয় বাসনা,
নিমন্ত্রণ খেলে বড় অংকের নগদ টাকা কিবা সুন্দর কোন দামী উপহার দিতে হয় সেতো সবার জানা,  
মোখেমোখে সবে বলে কিছু নাহি চাই,
কোন সমস্যা নাই কিছু দিতে হবেনা ভাই,
ভাল কিছু না দিলে শেষে দেখেছি হয় প্রচুর সমালোচনা,
মানুষ মানুষের কাছে পায়,
এ পাওনা সেতো ছোটদের কাছে বড়দেরই দায়,
হলে তা সাধ্যের আওতায়, এড়িয়ে যেওনা কৃপনতা কিবা অবহেলায়,
কিসের মানুষ কে তারে মানুষ বলে, এগিয়ে না সে এলে ন্বিঃস্ব ও অসহায়ের সহযোগিতায়,
হয়ত পায় বলেই মানুষ আশা করে কিবা মোখ ফুটে কিছু না বলেও চায়, সামাণ্য কিছু দিও ঐ প্রত্যাশায় ॥
যুগের প্রচলিত প্রথা,
কত তার সমস্যা জটিলতা,
কন্টক ঘা ও তার বিষম কষ্টব্যাথা,
কি বলিব ঐ জীবন গল্প সে কিরে অল্প কথা,
এ রেওয়াজ আজ,
হয়েছে যেন সে এক বড় চক্ষুলাজ,
কষ্ট হলেও দায়, দিলে নাকি পাওয়া যায়, দেওয়া উপহার কিবা পাওয়া এবং তা করা পরিশোধ বা আদায় ॥
কাছের মানুষ আত্বার সেই আগেকার সহানুভূতী আর মমতার বন্ধন,
অ আমার ভাইরে আজ কেন নাইরে, ধন আভিজাত্য ও শিক্ষার এ কেমন অভিনব আধুনিক জীবন,
বিত্ত-বিলাস আর বৈভব বুঝি কেড়ে নিয়েছে সব, ধনীদের সবারে করেছে একঘরে মানষিক দীনতা, কৃপনতা নাকি বেশী ধন,
সভ্যতার কাছে বুঝি মানবতা আর করুণার হয়েছে হার,
ছিনিয়ে নিয়েছে এ সমাজ ধনীদের, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে দিয়েছে সড়িয়ে দূরে এই তার উপহার,  
যে যার সংসারে আজ অনেক দূরে দূরে,
সেই আগের মত মায়ার বাঁধনে কেন আর টান পড়েনা আত্বার অন্তঃপুরে,
মাঝেমধ্যে একআধটু হয়ত আলো আঁধারীতে স্মৃতির আরশিতে ডুবেভেসে তা ছায়ার মত বেড়ায় ঘুরে,
সুখের লাগিয়া রজনী জাগিয়া ছিল একদিন গৃহহারা দিশেহারা,
আহারে স্বজনের তরে যারা বুঝেনি কিছু আর শুধু কাজ আর কাজ ও উপার্জন ছাড়া,
আমার পরম আপনজন প্রিয় বাবামা দুইজন কেজানে আছে কেমন আজিকে এখন তারা কে কোথায় কোন দূর অজানায় ॥
দেখা নেই কথা হয়না তবুও তারা কত আপন,
অনেক দূরে দূরে বসত ঘর, হয়েছে সকলে যেন সবার পর তবুও গোপনে কেন কাঁদে মন,
আসলে নিরবে কি সে চায়,
এ জগতে কেউ কিছু পায়না বিনা চেষ্টায়,
এ কোন আজব বন্ধন দিয়েছেন বেধে দয়াময় বিধাতায়,
না ভাবিলে কেউকি বুঝে কোন জবাব মিলে, না খুঁজে কভু কেউকি পথ পায়,
অক্ষমেরা বেঁচে যাবে বেঁচে যায়,
সক্ষম যারা উদাসীন কিবা অসচেতন চাহেনা নিতে দায়,
অদেখায় রাজ-ঋনের এক বিশাল বোঝা নিত্য ভারী হয়ে চাপিছে তাদের ঘারে ও মাথায়,
মনেহয় যেন কেউ কারোনা,
তবুও কেনরে তা কভু ভোলা যায়না,
কভুতো ছিড়েওনা এমন,  ভুলেও কারো পড়েনা স্বরণ, কেউবা তবু শুধু পথ চায়, কোন রেসালায় এ বাঁধন কোন সে সূতায় ॥