মা-বাবার আদরের ধন
কিশোরী এক মেয়ে,
ঘটক এসে বললো তাকে
দিতে হবে বিয়ে।


কচি-মেয়ে ছোট-মেয়ে
বিয়ে দিবে না,
ঘটক বললো কোন কথা
আমি শুনব না।


মেয়ে তাদের কম বয়সী
পড়াও হয়নি শেষ,
সময় হলে বিয়ে দিবে
দেখতে লাগবে বেশ।


ঘটক বলে এমন ছেলে
খুজে পাওয়া ভার,
তার প্রস্তাব না মানলে
ভুল হবে বাবার।


বয়স একটু বেশী হলেও
ছেলে মন্দ না,
দুবাই থাকে বেতন ভাল
আনছে সোনা-দানা।


সোজা কথায় বলে দিল
মেয়ের বাবা-মা,
তাদের মেয়ে বয়স কম
বিয়ে দিবে না।


মেয়ের বাবা নরম মানুষ
ঘটক মিয়ার জানা,
আশে-পাশের মুরুব্বীদের
কথা ফেলবেনা।


নাছোড় বান্দা চতুর ঘটক
এদিক ওদিক বলে,
দু-চারজন মুরুব্বীকে
আনলো নিজের দলে।


মেয়ের বাপকে মুরুব্বীরা
চিকন গলায় বলে,
মেয়ে নিয়ে পড়বে ঠেকায়
বিয়ের দেরী হলে।


তোমার আমার দাদী-নানীর
সেই অতীত কালে,
সবার মতেই বিয়ে হতো
আট-দশ বছর হলে।


জেনে দেখ তাদের জীবন
সুখের ছিল কত,
তারা সবাই ছোট ছিলো
তোমার মেয়ের মত।


বৈঠকের পর বৈঠক বসে
চলতে থাকে কথা,
অবশেষে রাজি হলো
মেয়ের পিতা-মাতা।


মহাখুশী বিয়ের বর
খবর যখন পেলো,
বিশ কেজি মিষ্টি নিয়ে
সালাম করতে গেলো।


কানে যখন গেল মেয়ের
বিয়ের খবর,
আকাশ ভেংগে পড়লো তার
মাথার উপর।


কান্না কাটি করার কথা
গিয়েছে সে ভুলে,
কারো কথাই যায়না কানে
কোন জনে কি বলে।


দাদি এসে বলে, ”নাতিন
কাঁন্দার কিছু নেই,
মেয়ে হয়ে জন্ম নিলে
বিয়ে হওয়া চাই”।


মা-বাবা আত্মীয় জন
মত দিয়ে দিলো,
মেয়েটি আর কি বলবে
চুপ হয়ে গেলো।


বধূ বেশে বরের পাশে
দিলো বসায়ে,
মুখের হাসি মনের খুশি
সব গেল হারায়ে।


যে দিকেই তাকায় মেয়ে
সবই দেখে ফাঁকা,
জীবন দেখার আগেই জীবন
পড়ে গেল ঢাকা।


এ-সমাজটার কঠিন হৃদয়
ঢাকা অন্ধকারে,
ভুল নিয়মে বহু মেয়ের
জীবন নষ্ট করে।


কিশোরীকে বউ সাজায়ে
পাঠায় পরের ঘরে,
ঘর-সংসার বুঝার আগেই
বুড়ি হয়ে পড়ে।


মেয়ের উপর এমন জুলুম
করে কেমন করে?
জীবন শুরুর বয়স আসে
যৌবন শেষের পরে।


সমাজের সব ভুল নিয়ম
দূর করা চাই,
ডাক দিলেই সময় মতন
সবকে যেন পাই।


জাগিয়ে দিব সমাজটাকে
শপথ করবো সবে,
সমাজ থেকে বাল্য বিয়ে
উঠিয়ে দিতে হবে।