( বৃদ্ধনিবাসের অগণিত মা-বাবাকে উৎসর্গ)


তপ্ত দুপুর, পিচঢালা পাকা রাস্তা, জ্বলছে সব
ক্লান্ত পাখিরাও ছোট্ট নীড়ে তার সন্তানকে
বুকে জড়িয়ে হয়তো করছে আদর, শোনাচ্ছে
দূরে কোথাও যাবি না, কোনদিন না, চিরদিন
থাকবি এইখানে, এই ছোট্ট বুকের অলিন্দে
তারপর.....
তারপর হঠাৎ একদিন আপন খেয়ালে সন্তান তার
পাশের ডালে মাকড়সা দেখে চড়াক চোখে তাকায়
আনমনে উড়ে যায় মাকড়সার লোভে, সেই থেকে
শুরু তার উড়াউড়ি, একদিন মাকে না বলে সেই পাখি
উড়ে আসে ইটপাথরের বদ্ধ শহরে, এখানে গাছ নেই
সেই প্রিয় বাগান নেই, মাকড়সা নেই, খোলা মাঠ নেই
নেই পাশের বাড়ির বাচ্চা শালিকের সঙ্গে খিচিরমিচির
আছে লড়াই, প্রতিক্ষণ লড়াই, বেঁচে থাকার লড়াই
প্রজন্ম টিকিয়ে রাখার লড়াই,  খাবার খুঁজে পাওয়ার লড়াই
প্রতিক্ষণ লড়াই করতে করতে সেই শিশু পাখি এখন অনেক বড়
কবে ছেড়ে এসেছে মাকে
মনেও পড়ে না মা দেখতে কেমন ছিলেন
কাল যে বুড়ো শালিকের সঙ্গে ডাস্টবিনে তুমুল ঝগড়া
হতেও পারে সে তার মা
শিশু শালিক এখন থাকার জায়গা পেয়েছে
সুউচ্চ অট্টালিকার কার্নিশে
কে চেনে বুড়ো শালিককে?
বুড়ে শালিকের আজ আর খোঁজ নেয় না কেউ
একা একা বুক ফেটে কাঁদে শালিক
ডাস্টবিনের লড়াইয়ে সে ক্ষীণকায় শক্তিতে
তাকিয়ে থাকে একপেশে হয়ে, কোথায় আমার সন্তান, শিশু শালিক
যাকে বুকের ভিতর সযত্নে আগলে রেখেছিলাম!
..............................................
২৩.০৩-১৫
ঢাকা, বাংলাদেশ