কতদূর পথ পেরিয়ে থমকে দাঁড়াই  
কাছে এক মড়া নদীতে ক্ষীণ স্রোত
মাঝি নেই, নৌকো নেই
এক ধুধু প্রান্তর যেন, বয়সী মেহগিনিতে
কচি পাতার উল্লাস, নবীন ছায়া তার
বড় শান্ত, বড়ই কোমল, খোলামাঠে মনপোড়া রোদ
আমি থমকে দাঁড়াই তাকাই পিছন ফিরে
কেউ কি ডাকছে আমায়- ঠিক আমার মায়ের মতো
মুহূর্তে কোথা থেকে উড়ে আসে কোমল হাওয়া
মন জুড়ায়, প্রাণ কাঁদে- একদিন
এইখানে- এই সবুজ শ্যামল গাঁয়ে জন্মেছিলাম
ধুলো গায়ে মেখে গড়াগড়ি খেয়েছি
পুকুরের পানিতে ডুবসাঁতার, বিকেলে গোল্লাছুট
দাড়িয়াবাঁধা, বউটুবানি... কত বলব আর!
সেই গাঁ ছেড়ে দূরে যেতে মন কাঁদে তবু
যেতে হয়, যেতেই হয়, তাই বার বার
পিছু ফিরে তাকাই-
কেউ কি ডাকছে আমায়!
অব্যক্ত কান্না ভেসে আসে আম্রকাননের
দুর্বাঘাস জড়িয়ে ধরে পা, মাঠ শুকনো কান্নায় বুক ফাটায়
কৃষক তাকে বলেন খরা, হাত বাড়ায় স্বর্ণলতিকা
বেড়ার ফাঁক দিয়ে যে সূর্য্য উঁকি দিত, সে
আজ স্নান করিয়ে দিচ্ছে
পথের ধুলো গায়ে বসে, কাপড় কামড়ে ধরে আছে
ছাড়বে না সেও, তবু যেতে হবে
আমি পিছন ফিরে তাকাই, ডাকছে কি মা!
শুধু ফিরে আসে এক দীর্ঘশ্বাস-
কখন চোখ ভিজে গেছে, গ- বেয়ে নেমে যাচ্ছে বুকের ওপর দিয়ে
জানি না কিচ্ছু জানি না, তবু যেতে হবে!
তবে ফিরব একদিন, সেদিনও প্রকৃতি কাঁদবে
গাছগাছালি কাঁদবে, আলো কাঁদবে, বাতাস কাঁদবে
কাঁদবে স্বজন- সেদিন আর পিছু ফিরে তাকাবো না
এ আমার প্রতিজ্ঞা!
..............................
২৪.০৩.১৫
ঢাকা, বাংলাদেশ