ব্রিটিশ শাসনের মহাভারে ভারতবর্ষ জর্জরিত। এরই মধ্যে ১৯২১ সালের ২১এ নভেম্বর যুবরাজ 'প্রিন্স অব ওয়েলস' অবতীর্ণ হলেন বোম্বাইয়ে(ভাগ্যিস এখানে শিবসেনা নেই, না হলে কেন মুম্বাই লিখিনি তাই নিয়ে কাজিয়া জুড়ে দিত।) গান্ধী ডাকলেন হরতাল। কিন্তু বৃটিশের কুমন্ত্রণায় দাঙ্গা লেগে যায়। গান্ধী অনশন শুরু করলে বৃটিশ সরকার কংগ্রেসের স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীকে বে-আইনী ঘোষণা করে। শত সহস্র দেশনেতা কারান্তরীণ হোন। এতে প্রতিবাদ জানিয়ে সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত লিখলেন চরকার গান। সুকুমার রায় হাতে তুলে নিলেন ব্যঙ্গের চাবুক। তিনি 'আইন কানুন'কে সর্বনেশে বলে, আইন কানুনগুলির অসাধারণ তামাশা করেন।
তিনি তাঁর কবিতায় বিচিত্রভাবে তুলে ধরেন,
পিছলে পরলে পেয়াদা এসে পাকড়ে ধরে কাজির বিচারে একুশটাকা জরিমানা
সন্ধ্যে ছটার আগে হাঁচি ফেললে টিকিট লাগবে, নাহলে পিঠে দমদমাদম মার এবং কোঁটাল এসে একুশদফা হাঁচিয়ে মারবে
দাঁত নড়লে চারটি টাকা মাশুল
গোঁফ গজালে একশো আনা ট্যাকসো, পিঠে খুঁচিয়ে ঘাড় গুজিয়ে একশো বার সালাম ঠোকাবে
ডাঁয়ে-বাঁইয়ে তাকিয়ে চললে একুশ হাতা জল গেলায়
পদ্য লিখলে একুশ উড়ের নামতা আর মুদীর খাতায় হিসেব কষতে হবে (কবি নজরুল ভালোই বুঝেছিলেন প্রত্যক্ষজ্ঞানে)
রাতদুপুরে নাক ডাকলে মাথায় ঘষে গোবর গুলে একুশ পাক ঘুরিয়ে একশ ঘণ্টা ঝুলিয়ে রাখা।
তাই অধুনা উপেক্ষিত আবোল তাবোল প্রকৃত পক্ষে সেযুগের জ্বলন্ত দস্তাবেজ।