অন্তঃসত্ত্বা করো
অচিন্ত্য সরকার
সম্পূর্ণা, তুমি কি আমাকে একটা চুম্বন দেবে?
শুধু একটা চুম্বন--গভীর, দীর্ঘ, প্রগাঢ় নিবিড়,
সর্পিল ছুঁয়ে অধরে অধরে, ভেসে যাবে সব তীর।
অস্থি-মজ্জা-মাংস পেশি, জাত-ধর্ম-সমাজ, অর্থ-পেশি--
সব বর্ম ভেঙে, যে চুম্বনের উষ্ণ স্রোত, তোমার ঠোঁটের
কমনীয় আদ্রতা বয়ে এনে,আমার উজর মরু মন কে
আবারও উর্বর করবে, কবিতার অঙ্কুর ফোটাবে
হাজারে হাজারে হৃদয়ের নিভৃত কোণে কোণে।
ভালোবাসার জন্য না হয়, সন্তান সৃষ্টির জন্য না হয়,
কবিতা সৃষ্টির জন্য দাও। এক বার দাও।
তোমার দেওয়া হাজার চুম্বন, অবহেলায় অযত্নে
হারিয়ে গেছে কালের গর্ভে, যা তুমি দিয়েছো তোমার
প্রেমিকের আবদার মেটাতে, প্রতিদিন প্রতিক্ষণ,একঘেঁয়ে অভ্যাসে।
নিলয় কে দিয়েছো অনেক চুম্বন, আমি জানি।
যদিও নিলয় তোমাকে একদিনও ভালোবাসেনি,
লেখেনি একটা ছড়াও। আমাকে না হয় মাত্র একটা দিলে,
কেবল কবিতা সৃষ্টির জন্য, মৃত্যুজ্ঞয়ী সহস্র প্রেমের কবিতা।
যে কবিতা তোমার ঠোঁটের যাদু কে ধরে রাখবে
অনাদিকাল বর্ণালী কলাপে, একই রকম আদ্র- উষ্ণতায়,
একই রকম স্পর্শকাতরতায়,সপ্ত সুরের আলাপে।
যদি মধ্যবিত্ত প্রতিবন্ধততায় সে দিনের মতো
এখনও তা সম্ভব না হয়, যদি আগের মতো দূর-কথার ছোঁয়ায়,
এখনও ভোলাতে চাও মোরে, তবে এই জেনে চলে যাও দূরে,
তোমার নারী সত্তার সমস্ত সুষমা কে জলাঞ্জলি দিয়ে,
তোমার সম্পূর্ণা নাম কে কলঙ্কিত করে, কবি মরবে।
নিশ্চয় মরবে।তাই,আর দেরি করো না।
শ্রীঘ্র তোমার চুম্বনে কবিকে অন্তঃসত্ত্বা করো।
তাঁর কবিতায় তোমার সম্পূর্ণতা কে চিরবসন্তে অক্ষয় করো।