মনে পড়ে, সেদিনের সেই ছোট্ট ছেলেটা?
গড়নটা দোহারা,বোকা বোকা চেহারা
সূর্য্যদীপ্ত দু’টি চোখে ভয় আর বিষ্ময়,  
অনটন,অবহেলা,কাজই ছেলেখেলা
রেজাল্ট দেখেনা কেও,উপাহার অনাহার,          
তবু ,মানেনা ক্ষয়,প্রতি ক্লাসে ফাস্ট হয়।


পুরনো হাফ প্যান্ট,শার্টটাও পুরনো
পুরনো বাদপড়াই কেনা ছিল সেগুলো,
ছেড়া চটি ফুড়ে,পায়ে লাগে রাস্তার ধুলো।
শীত ভোরে  ছেড়া শাড়ি ভাঁজ করে জড়ানো
সকালে পান্তার জলে দু’চারটে ভাত ছড়ানো।
তারপর,হাতে বই ধরে পায়ে হেঁটে স্কুল..
তবু, অংক কখনও কোনটা করে না ভুল।


বর্ষায় কলাপাতা-কচুপাতা-বর্ষাতি সম্বল
পচা বিচলির চাল ফুঁড়ে ঘরে ঢোকে জল,
এক তিল ঠাঁই নেই, বই খুলে পড়া যায়
কেরোসিন-লম্ফে তেল নেই, শূণ্য সম্বল
ভিজে সব,ভিজে কাঁথা,ভিজে কম্বল।
বই খাতা অনটন,না জানে কি টিউশন,
তবু মানে না ক্ষয়,প্রতি ক্লাসে ফাস্ট হয়।


ঝরা পাতায়, বৃক্ষ লতায় শৈশব-কৈশোর
অজান্তে নিজেরে চেনা,স্বপ্নের আনাগোনা
পঞ্চমে, অষ্টমে কীর্তি; জিতে নেয় বৃত্তি,
প্রতিভার স্বীকৃতি,মনোবল বেড়ে যায়
দৃঢ় হয়, বিশ্বাসের হিমালয়- ভিত্তি।
দু’টি গভীর চোখে স্বপ্নরা উঁকি দেয়
সত্য,শিব,সুন্দর আর হৃদয় থাকে আগে
        বিবেকানন্দ, নজরুল ও নেতাজী মানে
গ্রাম্য-সরল মনে আর শুধু পড়া জানে।


তবু,হংসা,ঈর্ষা আর অজ্ঞতার বদ্ধ জালে,
খিদে আর পরিবার সবচেয়ে প্রতিকুল।
লাজুক অভিমানী,ক্ষয় হয় প্রানে প্রানে,
তারপর ভাঙে কুল,সজোরে উপড়ে
শিশু-বৃক্ষে ছিন্নমুল,মহাভুল! মহাভুল!