১.
তাহারা কহে :
বন্ধু আমরা খুব টি আপন
দুজনাতেই এইতো জীবন
পাগলামি খুনসুটি,
বাল্য কালের খেলার সাথী
কৈশোরে তে দিবানিশি
আড্ডা টি খুব টি।
মিষ্টি কিছু বিকেল বেলায়
কাটাকুটি ঘুড়ির খেলায়
সঙ্গী আমরা বেশ,
যখন তখন দুষ্টুমি আর
ভীষণ সুখে দিন কেটে যায়
যেন স্বপ্নের দেশ!
এভাবেই দিন কেটে যায়
হঠাৎ বড় অচেনা হয়
চেনা এ পৃথিবী,
ছিলাম দুজন কত আপন
আজ কাছে রয়ে ও হলাম পর
ক্ষণে ক্ষণে ভাবি।
২.
#বালিকা কহে :
বেশ ভালো তুই বন্ধু আমার
খুব টি ভালো লাগে
তবে ইদানীং ভাবলে তোকে
মনে কাঁপন জাগে ।
বাল্য কালের সেই বন্ধু তুই
আজ যে কত বড়
আজ কেন তোর হাতের ছোঁয়ায়
এমন জড়সড় ।
খেলার ছলে সেই সে ছোঁয়ার
আবেশ রয়ে যায়
নেই জানা তোর মনেও কি সেই
দখিন হাওয়া বয় ?
ভীষণ বোকা,অবুঝ খোকা
আবেগ নাহি বুঝিস
যখন তখন করা পাগলামোর
অর্থ নাহি খুঁজিস ।
দিন যাচ্ছে যত বুঝছি তত
সবকিছুরই কারণ
হৃদয় ঘরে বসত গড়ে
হচ্ছে কিছুর লালন ।
ছিঃ ছিঃ সে বলতে মানা
লজ্জা ভীষণ করে
মনের মাঝে রঙের খেলা
কেমনে বলি তোরে ।
সেদিন বৃষ্টি স্নানে হঠাৎ তোর
হাতটি ছুঁয়ে যাই
বৃষ্টি পাগল মাতাল তুই
তার অর্থ খুঁজিস নাই ।
যেদিন দূর্ঘটনায় পা কাটলি,খুব
দিলাম বকা দুখে
সেদিন অশ্রু সিক্ত জায় নামাজ তোর
পড়লো না রে চোখে।
তুই খুব টি আপন বন্ধু আমার
কত কথাই তো বলি
ভীষণ আপন হয়েও পর
হঠাৎ সে তুই হলি ।
আজ মনের মাঝের অবাক আবেগ
মনেই গোপন রয়
আজ সেই সে তোকে কেন এমন
হারানোর ভয়!
৩.
#বালক কহে :
আজ শেষ বিকেলে র আলোয় দেখি
তোর অন্যরকম সাজ
যেন হঠাৎ বড় হয়ে উঠেছিস
শাড়ি তে জড়িয়ে লাজ।
সোনার বরণ অঙ্গে জড়িয়ে নীলাভ বরণ শাড়ি
লাজুক লাজুক দৃষ্টি দেখে অবাক হলাম ভারি!
মায়া শত গুন বাড়িয়ে দিলো
কাজল কালো আঁখি।
খোঁপায় গোজা রক্ত জবা
মুগ্ধ আমি দেখি ।
আনাড়ী হাতে বাঁধা সে খোঁপা
হঠাৎ খুলে যায়
দীঘল কালো সেই সে কেশে
এ মন জড়ালো,হায়!
আমার দিকে চেয়ে তোর সেই
মিষ্টি বোকা হাসি
গালের তিলে ভেসে ওঠা টোল
ভাবাচ্ছে আজ বেশি।
হঠাৎ তখন মেঘ করে বেশ
বৃষ্টি এলো ভারি
পাগলীরে তুই বৃষ্টি স্নানে
নিলি হাতটা ধরি ।
বৃষ্টি শেষে খুব টি হেসে
ছাদের জমা পানিতে
আলতা রাঙা পা ডুবিয়ে
উঠলিরে তুই মেতে!
খিলখিলখিল হাসি আর
নুপুরের ঝঙ্কারে
হাতটি ছুয়ে নাচলি বড়
রাঙালো মনটারে ।
এই প্রথমই ভাবনা জুড়ে
এলি অন্য তুই
কেমন করে এমন মধুর
স্মৃতি ভুলে রই!!
৪.
#বালিকা :
পাজি ছেলে কোথায় গেলি?
আছিস পড়ে কই?
ব্যাটবল আর জুতোটাও নেই
মানে মাঠে তুই।
এম্মা! তুই এত এলোমেলো
ঠিক নেই বইখাতারও
খালামনিটা এতো বকেও তোকে
পারলো না করতে গোছানো।
আরে! এযে সেই নীল ডাইরি
যা দিয়েছিলাম উপহার
এতো যত্নে রাখা এখনো
একি! লেখা নামটি আমার!
"অনুরে,বলি কি করে তোরে
মনেতে ঝড় বইছে
প্রতিনিয়ত এই মনটা বড়
এলোমেলো হচ্ছে।
তোর মনেরই রঙে পাগল
তোর মনেতেই বাস
বাল্য কালের বন্ধু সে তুই
যেন আমার নিঃশ্বাস ।
এমন তো আর আগে ঘটেনি
সব ভাবনাতেই তুই
যখন তখন ভাবনায় আসিস
যদিও খুলি বই ।
ছোট্ট ছিলাম ভালোই ছিলাম
বন্ধু ছিলি ভালো
দিন পেরোলো,হলাম বড়
মনে জানি কি হলো !
তোর আঁখির মাঝে এক দীঘি জল
ঢেউ টলমল করে
সেই মায়াতে স্বপ্ন সঁপে
দুঃখ গেলো মরে ।
তোর পাগল মনে,মন বেঁধেছি
মন তো তাই কয়
তোকে ছাড়া ভাবি না নিজেকে
ভাবনায় তাই ভাবায় ।
আজ এতো কাছে তুই তবুও
মনটি বুঝিসনা
মনের মাঝে শঙ্কা কত
তাই ভালোবাসা অজানা।"
পাগল ছেলে! ও মেঘ,
তুই এত বোকা কেন?
সত্যি এ তোর লেখা ?
আমি স্বর্গে আছি যেন !
তোর ডাইরির পাতায় পাতায়
ভাসা ভাসা কালি
চোখের জলের ছাপ এখনো
কিভাবে তুই ছিলি ?
কি করে তুই এমন কঠিন
কষ্ট লুকালি?
কি করে তুই হাসিমুখে সব, গোপনে রাখলি ?
এতটাদিন কেন তোকে
পারলাম না বুঝতে
এমন খুশির দিনে কান্না
পারছি না থামাতে ।
জানি এতো সেরা দিন
চোখে সুখের কান্না
এ সুখেতেই কাটবে জীবন
পুরবে মনের ভাবনা ।
৫.
#বালিকা কহে :
এ্যাঁই ফাজিল , চশমিষ্ট ছেলে :3
একটু এদিক দেখ না?
সারাজীবন পড়লি কত -_-
আজ তো ছুটি দে না? :/
ঐ চেয়ে দেখ আকাশ কোনে ,
কেমন মেঘের খেলা..:)
প্রকৃতি আজ সেজেছে কেমন..
কত পাখির মেলা ।
বই পাগলা >.< গাঁধা ছেলে >_<
এই যে চেয়ে দেখ? -_- -_-
কত রঙের খেলায় আজ
খেলছে আমার হাত!
দূর আকাশে সাতটি রঙের রংধনুদের ছোঁয়া..
একটু খানি কেড়ে নিয়ে
হলাম মাতোয়ারা।
তাই তো আমার হাতের মাঝের
টুংটাংটাং চুড়ি,
রংধনুদের রঙে রাঙা
রংধনুরা চুরি ! ^_^
তোর জন্যেই দীঘল কালো
কেশ ছেড়েছি আজ
তোর জন্যেই কাজল কালো
চোখেতে আজ সাজ।
পড়ালেখা খুব হয়েছে,
হাতটি এবার ধর?! -_-
এতো শুধাই,কত খারাপ!
এখনও নিরুত্তর । :/ :/
একটুখানি দেখলিও না
আবার মুচকি হাসিস >:(
এইতো গেলাম ,ফিরবো না আর :/
খুজতে যেন না আসিস :3 :3
এবার কেন আঁচল টেনে
ধরলি পাজি ছেলে -_-
বই তো ভারি সঙ্গী আপন :/
:-( খুব তো ছিলি ভুলে। >.<
এম্মা! তোর চোখ ছলছল
ন্যাকা বোকা ছেলে -_-
আচ্ছা তবে দিব্যি দিলাম -_-
যাবো না তোকে ছেড়ে !!!
______সমাপ্ত______