✒ ......


দশমহলা বাড়িটি রঙিন ছিলো;
বিশ গাঁয়ের সবার সেরা!
ঘাড় উঁচু করে দাঁড়িয়ে হাসতো,
নিষ্প্রাণ তবু্ও নিষ্প্রভ নয় এখনো!
আহা এই বাড়িতেই হাসির ফোয়ারা,
আছিলো অনেক মাধুর্য ভরা
- প্রাণময় পাখিদের মিষ্টি কূজন |


ঐতিহ্যের শেকড় ছোঁয়া;
নোনাধরা দেয়াল পলেস্তারা ভেঙ্গেই,
আত্মাভিমানের এই বনেদি ইতিহাস!
গমগম আওয়াজের বিশাখা স্মৃতি,
অনুশাসনের সে কী অনুপ্রভা রেওয়াজ!    
বড়ো বেখেয়ালে দেখি ধূসরিত আজ
- আভিজাত্যের সেই হীরকচূর্ণ দ্যুতি |


পরজীবি আনাগোনা বাড়ছে ক্রমেই;
অস্তিত্বের দৌড়ে, অবহেলিত প্রাণ
কেন যেন ভুলে যাই অতিযত্নের কথা!
সময় বিকিয়ে মমতাহীন দিনে-
আমার বাড়িতে আমিই থাকি না হায়!
সাধের গুলবাগে কে দেবে নজর?
পাঁচিল টপকে আসে পরাশ্রয় জঞ্জাল,
দখিন দুয়ারখানি ধীরে ঢেকে যায়
- চূড়ামুখী আগ্রাসী 'আলোকলতা' |

উৎসর্গের পরাকাষ্ঠায় বিলীন;
অন্তপ্রাণ প্রিয় সন্তগণ চলে যাবার পর,
নিস্তব্ধ বাড়িতে নিসর্গ নামেনি আর!
নিবিড় পরিচর্যার মানসিকতার প্রশ্নে,
দখল প্রাপ্ত এক অর্বাচীন!
দূরে বহুদূরে বিষুবীয় প্রান্তের আমি,
ঠিক জানিনা উত্তর দক্ষিণ দিক!
প্রথাগত নিয়ম সীমানায় দাঁড়িয়ে থাকা
- অথর্ব এই তথাকথিত উত্তরাধিকার |

সুজনহারা দহন ভারেই মলিনতা সাজ!  
যাদের রক্তঘামে বাড়িটির নাম,
অনুচিত বলা হবে, তাঁরা নেই আজ!
কার্ণিশ ঘেঁষেনি আজো পরগাছা দল,
শ্যাওলাও কিছু জমেনি তেমন!
এখনো সময় আছে পরিপাটি যতন,
অনেক খুশিতে বাঁধানো বলেই-
বাড়িটি হাসতে পারে আগেরই মতন!
- যত্নে থাকা, বাড়িটির ন্যায্য অধিকার ||


___________
© আগুন নদী ©
===========