আমি জন্মেছি কবে সেটা মার-ও মনে নেই,
ছোটবেলাটা কেটেছে পালবাড়ির বারান্দাতেই

এর ওর থেকে চেয়েচুন্তে মা আর দিদা চালাত আমাদের পেট,
আমি বড়, ভাই ছোট ওর পা ল্যাঙরা আর মাথাটা ছিল নিরেট


বয়স আমার যেই বারো হল, জাদু বলে আমাদের যেন কপালও ফিরল,
শুনতে পেতাম লোকে বলছে মেয়েটা দেখতে হচ্ছে ভাল


মা পেল কয়েকটা বারিতে বাসুন মাজা আর ঘর মোছার কাজ,
দাশ বাবু মাকে বলতেন মেয়েকে বল আমার ঘরটা মুছতে তুই বাসন মাজ


বড্ড দয়ার প্রান ছিল লোকটার, আমায়ে প্রায়েই করত আদর,
বাবাকে দেখিনি তাই ভাল লাগত, মা বলত যাসনা লোকটা একটা বাঁদর


মণিদি, আমাদের পড়াত রাতের বেলায়ে ওদের বারান্দাতে জ্বেলে আলো,
আজ ওর জন্যই বাংলা এংরাজির অক্ষর গুলো চিনি, ও ছিল বড্ড ভাল


পালেদের বারান্দা থেকে আমরা ঢুকেছিলাম কুখ্যাত চাষির মাঠের বস্তিতে,
আমরা তখন বয়স ষোল , বন্ধু বান্ধবদের নিয়ে ছিলাম আমি মস্তিতে


লোকের বাড়ির কাজ, বাবুদের বিশেষ ভালবাসায় আসছিল হাতে দুচার পয়সা,
এগরোল , চাউমিন এর সাথে মাঝে মাঝে পুতু, মুন্না, টুনিদের সাথে দারু খেয়ে করতাম নেশা


এই রখম এক কালরাতে দারু খেয়ে আমি হারিয়েছিলাম আমার হুশ ,
কি হয়েছিল সে রাতে আজ সেটা বুঝি, ওই রাতটাই করেছিল আমাকে অমানুষ


লোভ বাড়ল , সাহস বাড়ল, পাড়ার ছেলে, কাকা , বুড়ো কত কেই না এলো,
একটাই সর্ত, কাউকে বলিসনা প্লিস, এরা ভদ্রলোকের বেশে একএকটা জানোয়ার ছিল


আজ আমি মারন রোগে এই ৩০ বছর বয়সে রোজ যাবার দিন গুনছি,
বাবুরা নেই, নাগররা নেই, মা দিদা ভাই কেউ পাসে নেই, আমি ভাবছি -
কাকে বলে সমাজ, কাকে বলে সভ্যতা, কাকে বলে মনুসত্য, কাকে বলে ভালবাসা ?
কিছু লোকের কাছে শরীরটাই সব, আমার কাছে জীবনের মানে হল জাওয়া আর আসা /