এককথায় যদি বলি এবারের কলকাতা বইমেলায় আমার জীবনের প্রথম কাব্যসংগ্রহটি প্রকাশিত হতে চলেছে তাহলে হয়ত সবটুকু বলে দিলাম, আবার হয়ত প্রায় কিছুই বলা হল না।


বিগত ২৮/০৬/২০১৪ তারিখে আমার একটি পোস্ট প্রকাশ হয়েছিল যার মূল বিষয় ছিল একটা আক্ষেপ। আক্ষেপ আমাদের প্রায় সবারই, কমপক্ষে ১বার, কমপক্ষে ১টি কবিতার বই ছেপে বেরোক। নানা নামী প্রকাশনার স্বপ্ন দেখে না কেউ, বই ছেপে বেরোলেই হল। তোমার একটা কবিতার বই না হলেই নয়, দুমলাটে না বেরোলেই আর চলছে না। আর সেই শুভ উদ্দেশ্যে আমার কলেজ স্ট্রীটের অলিতে গলিতে ভ্রমণ। সাথে আমার দুর্দিনের সাথী এই আসরের কবি মিতা চট্টোপাধ্যায়। কাউকেই বাদ দিই নি, অলির ভেতর গলি, তস্য গলির ভেতরের প্রকাশক থেকে শুরু করে নামী পত্রিকার অফিস!


হাল প্রায় ছেড়েই দিতাম যদি না মিতা চট্টোপাধ্যায় শক্তহাতে সেই হালটুকুই চেপে ধরত। কবিতা বাছাই থেকে শুরু করে প্রকাশক খোঁজাখুঁজি, ফোনের পর ফোন, প্রখর রৌদ্রে অক্লান্ত ঘোরাঘুরি... মানে ওঁর মাথায় একরকম রোখ চেপে গিয়েছিল বলেই এই বইটি আজ বইমেলার বইয়ের ভিড়ে একটু জায়গা করে নিতে চলেছ্বে। মিতার কাছে আমি কৃতজ্ঞ বললে কিছুই বলা হয় না।


অবশেষে হাত বাড়ালেন ভবিষ্যৎ প্রকাশনার সরুপ দত্ত মশাই। আমরা তাঁকে খুঁজে বের করলাম, না তিনি আমাদের – সে কথা বলা মুশকিল! কতদিন যে প্রুফ দেখা হয়েছে, কতবার যে ঝাড়াই বাছাই চলেছে সে কথা কি আর বলব। আমি আবার বানানের ব্যাপারে ভীষণ খুঁতখুঁতে। এক্ষেত্রেও আমার উদ্ধারকর্তা সেই মিতা, রীতিমত অভিধান ছড়িয়ে বসে বানান, যতিচিহ্ন সব সব সব মিলিয়ে মিলিয়ে – ও বাবা! সে এক যুদ্ধ ছাড়া আর কিছুই নয়। মুলতঃ এঁদের চেষ্টাতেই এই সংকলন, আমার এলোমেলো ছড়িয়ে রাখা গদ্য কবিতাগুলোর থেকে বাছাই করা কিছু, দুই মলাটের ভেতরে একটু গুছিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। বইটিতে স্থান পেয়েছে মোট ১০১টি কবিতা।


কলকাতা বইমেলা শুরু হচ্ছে ২৮শে জানুয়ারি। আমার বই ‘যাপিত হৃদয়’-য়ের উদ্বোধন ভবিষ্যৎ প্রকাশনার স্টলে হবে ১লা ফেব্রুয়ারী। এছাড়াও কবিতাক্লাবের পক্ষ থেকে একটা অনুগল্পের সংকলন প্রকাশ হতে চলেছে পত্রভারতী প্রকাশনী থেকে যেখানে থাকছে আমার একটা অনুগল্প। আর এছাড়া ২১শে বইমেলায় তো আমাদের প্রানের প্রিয় বাংলা কবিতার সংকলন প্রকাশিত হতে যাচ্ছেই জাগৃতি প্রকাশনীর স্টল থেকে, যেখানে আমারও একটা কবিতা স্থান পেয়েছে।


তাহলে ব্যাপারটা কি দাঁড়ালো? এবার বছরের শুরুতেই আমার ত্রহ্যস্পর্শ!  


সবার ভালোবাসা কাম্য।


শুভায়ূ।