সেদিন ছিলো পহেলা ফাগুনের আলো ঝলমলে সকাল,
ডালে ডালে ফুটে ছিলো পলাশ শিমুল,
আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম ফুলের তোড়া হাতে,
দুচোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে তোমারই প্রতীক্ষায়,
ক্যাম্পাসে ছিলো বসন্ত উৎসব।
তুমি এসেছিলে ফাগুন সাজে আগুন ছড়িয়ে,
মুগ্ধ নয়নে তোমাকেই দেখছিলো সবাই,
সারা দিন তোমার সান্নিধ্যে আমিও,
ক্ষণে ক্ষণে তাকিয়ে ছিলাম মুগ্ধ নয়নে,
তোমার মায়া ভরা অপূর্ব মুখপানে,
তারপর কোলাহল মুখর হিমেল বিকেলে
তোমার হাত ধরে বাড়ি ফেরার স্মৃতি।


কতোইনা আপন ছিলো স্মৃতিময় সেই দিনগুলো,
তুমি ছিলে হৃদয় পৃথিবীতে বাসন্তী রঙে,
সাজানো বাগানের শিশির স্নাত ফুল হয়ে,
হৃদয়ের সমস্ত আঙ্গিনাজুড়ে,
মাতাল করা বসন্ত সমীরণে, পাখীর মতো;
ডানা মেলে উড়ে বেড়াতে আমার আকাশে।


আজ ধুলোয় মাখা স্মৃতির পাতার প্রণয় ফাগুন,
তোমার আমার সবার অজান্তে,
ভালোবাসার নির্মম যন্ত্রণার ব্যর্থ পরিণতিতে,
তুমি আছো আমি আছি
নিঃসঙ্গতায় ভরা একাকীত্ব জীবনে,
হারানোর বেদনা নিয়ে নিষ্ঠুর এই ধরণীতে।


ফুলে এখন আর গন্ধ নেই,
প্রথম যেদিন ফুটেছিলো মনের দুয়ারে,
সেই ফুল আজ ঝরে বিলীন হয়ে গেছে,
হারিয়ে গেছে হৃদয়ে জমা প্রণয়ের সকল উষ্ণতা,
তোমার আমার সবার অজান্তে,
একদিন যখন মনের গহিন বনে
ফুটেছিলো ভালোবাসার নানান রঙের ফুল,
আজ ফাগুন গেছে বুকের মাঝে আগুন জ্বেলে,
নগ্ন দিনের উন্মাদনায় আজ প্রণয় হারায়
দূর নীলিমার ঐ মেঘে ঢাকা প্রন্তরে।


আজ নির্জন সিক্ত আমার পথ, পেছনে ভয় নেই;
সামনে এগুলেই রক্ত কণিকা শিহরিত হয়,
জেগে উঠে শরীরের অদম্য ইচ্ছা শক্তি,
ঘড়ির কাটা থেমে নেই, সময় চলতে থাকে;
পারিপার্শ্বিক নির্জনতা অভ্যর্থনা জানায় ব্যর্থতাকে।


তবুও জীবন যাচ্ছে কেটে প্রকৃতির নিয়মে,
জীবন থেমে নেই ফাগুনের বেড়াজালে,
শুধু হৃদয় থেকে হারিয়ে গেছে নির্মল আনন্দ,
বিদায় নিয়েছে স্বপ্নিল সেই দিনগুলো,
নিষ্ঠুর সমাজের এই নির্মম কষাঘাতে
বিদায় নিয়েছে দু'জনার অশান্ত ভালোবাসা।