যৌবনের অনেকগুলো বছর পেরিয়ে গেল,
এখন শুধু মন চলে যায়
স্মৃতির ক্ষত-বিক্ষত রূপে।
যেদিন হাতে উঠেছিলো অস্ত্র,
সেদিন খুব ইচ্ছে করেছিলো
মৃত্যুকে কাছে থেকে দেখার,
সেদিন নষ্ট হতে নষ্ট করতে
ছিলোনা কোন ভয়,
তবু দেখা হয়নি মৃত্যুকে কাছে থেকে।


এইতো সেদিন ঐ পাড়ার ছেলেরা
মেরে ফেললো প্রিয় বন্ধু সুধীরকে,
আমাদের চলেছিলো অস্ত্রের মহড়া,
সেদিন মৃত্যুকে দেখার খুব ইচ্ছে ছিলো,
কেউ ছিলোনা কাছাকাছি,
পালিয়ে গেল কে কোথায়,
সেদিনও দেখা হয়নি
নরকের নির্যাতিত বসবাস।


ইদানীং ছোট বেলার কথা খুব মনে পড়ে,
ধীরেনদের গাছের কাঁচা-মিঠা আম
চুরি করতে গিয়ে ধরা পরেছিলাম,
মার্বেল খেলেছিলাম বলে
মায়ের মিষ্টি হাতের কানমলা খেয়েছিলাম।
মনে পড়ে কানামাছি খেলতে গিয়ে
জড়িয়ে ধরেছিলাম ঐ বাড়ীর রাধাকে,
বাবা নাটাই ভেঙ্গে ফেলেছিলো বলে
সারাদিন লুকিয়ে ছিলাম রুহীদের বাড়ীতে,
মায়ের আঁচল ধরে বসেছিলাম সারাক্ষণ
লাটিম কিনে দিবে বলে।


দীঘির পাড়ে যাইনি কখনো,
ঠাকুরমা বলতো ঐ খানে বড় বড় ভূত থাকে,
মনে পড়ে ইংলিশ স্যারের বেতের ভয়ে
বেড়া ভেঙ্গে স্কুল পালাতাম প্রতিদিন,
দেওয়ালির দিনে বাজি কেনার
পঁচিশ পয়সা, পঞ্চাশ পয়সা;
বাবার পাঞ্জাবির পকেট থেকে চুরি করেছিলাম।
রুহীর দাদা খুব আদর করতেন আমাকে,
হঠাৎ একদিন তিনিও চলে গেলেন
স্বর্গের সিঁড়ি বেয়ে,
সেদিনও দেখা হয়নি একটা মৃত্যুকে।


এইতো সেদিন প্রিয়ার কানে কানে বলেছিলাম-
ভালোবাসি,
চোখের দুষ্টুমিতে সে বলেছিল, বিশ্বাস করিনা;
শুধু তাকে ভালোবাসি বলে
ছুটে যেতাম প্রতিদিন তারই দুয়ারে,
একদিন ফিরিয়ে দিয়েছিলো বলে
হারানোর বেদনা উপভোগ করেছিলাম,
নিস্তব্ধ কুয়াশা ঘেরা আঁধার নিশীথে।
সেদিন হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়েছিলাম,
তবুও সে দেখিয়েছিলো বিংশ শতাব্দীর
কঠিন নিষ্ঠুরতার প্রতিমূর্তি,
চলে গিয়েছিলো হৃদয়ের শিকল ছিঁড়ে।
সেদিনও হাতে উঠেছিলো অস্ত্র, সুযোগ এসেছিলো;
নিজের মৃত্যুকে উপভোগ করার,
তবুও দেখা হয়নি মৃত্যুকে।