গ্রীষ্ম যায় বর্ষা যায় যেতে যেতে বসন্তও যায়,
তবুও সে আসে না তো ফিরে ঘরে,
দিবানিশি অন্তর গহিনে করি প্রণয়ের আরাধনা,
তবুও সে দেখে না তো চেয়ে নির্লিপ্ত নয়নে।
সবাই বলে এ কেমন প্রহসনের ভালোবাসা?
ভুলে যাও, শুরু করো পূর্ণ প্রাণের নব ধারায়;
ভালোবাসা কি ক্ষুদ্র কোন জ্বলন্ত মোমবাতি?
হঠাৎ দমকা হাওয়ায় নিভে যাবে অন্ধকারে,
নাকি কোন আগ্নেয়গিরির জ্বলন্ত বিস্ফোরণ?
হঠাৎ সুপ্ত হয়ে যাবে বেদনার নীল রঙে!
আমি তো ভিক্ষুকের মতো ক্ষুধার্ত হয়ে আছি,
তবুও সে দেখে না তো চেয়ে নির্লিপ্ত নয়নে,
প্রণয়ের মোহে এ কোন্ জগতে হারিয়ে যাচ্ছি?
যেথায় প্রতিটি ক্ষণ আকাশ বাতাস মর্ত পাতাল,
আমার প্রতিটি নিঃশ্বাস, আমার প্রতিটি দীর্ঘশ্বাস;
শুধু বলে আয় ফিরে আয় এই শূন্য হৃদয়ে,
তবুও সে আসে না তো ফিরে ঘরে।


গ্রীষ্মের খরতাপে ফেটে চৌচির হয় বুকের জমিন;
তবুও তার মন গলে না তো দুঃখের দহনে,
বর্ষায় বক্ষের নদী নালা পূর্ণ হয় বরিষণের জলে;
তবুও তার কপোল ভিজে না তো দু’নয়নের জলে,
শরতে শিশির ভেজা শিউলি ঝরে অন্তর গহিনে;
তবুও তার মন বাঁধে না তো প্রণয়ের বাঁধনে,
হেমন্তে হৃদয়ের ভরা ক্ষেত শূন্য হয় নবান্ন আয়োজনে;
তবুও তার মন ভরে না তো সুখের আলোড়নে,
শীতে কুয়াশার চাদরে ঢেকে যায় বুকের পাঁজর;
তবুও তার মন মজে না তো বিচ্ছিন্ন আবেগে,
বসন্তে বৃক্ষের ডালে ডালে শিমুল ফোটে রক্তিম হয়ে;
তবুও তার হৃদয় রাঙে না তো প্রণয়ের আহ্বানে।


গ্রীষ্ম যায় বর্ষা যায় যেতে যেতে বসন্তও যায়,
তবুও সে আসে না তো ফিরে হৃদয়ের গহিনে,
হৃদয়ের অগোছালো কষ্ট গুলো গুছিয়ে রেখে
নিস্তব্ধ নিশীথে ছুটে চলি অস্থির মনের অজান্তে,
হারিয়ে যাই চির চেনা লোকালয় ছেড়ে বহুদূরে,
পথে পথে ঘুরে ঘুরে হই যাযাবর পথিক,
খুঁজে ফিরি সুখের ঠিকানা, জানা নেই তবু খুঁজি;
খুঁজে খুঁজে ঘুরে ঘুরে গহিন শূন্যতায় ক্লান্ত হয়ে
সেই আমি তারই দ্বারে বারেবারে আসি ফিরে,
তবুও সে টানে না তো আমায় মায়াবী টানে,
করে না তো আমায় প্রণয়ের মায়াজালে বন্দি।
দিবানিশি তাই নিরন্তর ছুটে চলি আর ভাবি,
নিষ্ঠুর এই ধরিত্রীর বুকে এ কোন্ জলে ডুবি?
সেই দুরন্ত দুর্নিবার চঞ্চল ছুটে চলা আমি,
ভালোবেসে চিত্তের জ্বালায় নিজেকে নিঃস্ব করি,
করি নিশিদিন অন্ধ প্রেমের অমৃত আরাধনা,
তবুও সে দেখে না তো চেয়ে নির্লিপ্ত নয়নে,
গ্রীষ্ম যায় বর্ষা যায় যেতে যেতে বসন্তও যায়,
তবুও সে আসে না তো ফিরে হৃদয়ের অঙ্গনে।