(১৬ই ডিসেম্বর ২০১২ রাত্রে ভারতের রাজধানী দিল্লীর জনবহুল রাস্তায় একটি বেসরকারী বাসে গণধর্ষিত ছাত্রীর মৃত্যু বিশ্বের প্রতিটি চেতনা সম্পন্ন মানুষকে নাড়া দিয়েছিল । এই কবিতাটি  সেই গণনির্যাতিতা তরুণী "দামিনী"র স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য)


হঠাৎ যেন কন্যার পিতা হিসেবে
নিজেকে বড় অসহায় লাগছে,
মেয়েরা সন্ধ্যের পর বাইরে থাকলে
উৎকন্ঠা সারা মনকে গ্রাস করছে
ট্রেনে-বাসে মেয়েদের একা ছাড়তে
মন এক অজানা আতঙ্কে ভুগছে ।


হঠাৎ যেন নিজেকে পুরুষ ভাবতে
লজ্জায়-ধিক্কারে মাথা নুয়ে পড়ছে,
ভেসে আসছে টিভির পর্দায় দেখা
এক অসহায়া তরুণীর নিষ্পাপ মুখ
রাজধানীর চলন্ত বাসে গণনির্যাতিতা,
একদল পাষন্ড কাপুরুষের শিকার ।


সঙ্কট থেকে সঙ্কটতর অবস্থায়
দামিনীর সেই করুণ বাঁচার আর্তি
গ্রাম থেকে ছুটে আসা ওর অসহায়
পিতা-মাতার বুকফাটা আর্তনাদ
সবশেষে সাদা চাদরে ঢাকা লাশ
জাতীয় লজ্জার কি নির্মম পরিহাস !


আজ সারা বসুন্ধরা তোমার সাথে
দামিনী, তুমিই এবার নেতৃত্ব দেবে
পুরুষতান্ত্রিক সমাজের ডানা ছাঁটতে
গণতন্ত্রের নামে যথেচ্ছাচার রুখতে
বিচার ব্যবস্থার প্রহসন বন্ধ করতে
নারীজাতির সম্মান পুনরুদ্ধার করতে ।


দামিনী, তুমি বীরাঙ্গনা, তুমি মৃত্যুহীণা
তুমি বেঁচে থাকবে আমাদের অন্তঃস্থলে
প্রতিটি পিতা-মাতার গর্বিত কন্যা রূপে,
তামাম বিশ্ববাসীর হৃদয়ের মণিকোঠায় ।


*******