আর বলবেন না মশাই । পেটের তাগিদে সকালের বীভৎস ঠান্ডায় লেপ থেকে বের হলেই মনে হয় সংসারের জন্য আমার মতো স্যাক্রিফাইস মনে হয় কেউ করে নি । গিন্নির দেওয়া গরম চায়ে দুবার চুমুক দিলেই ত্যাগের ইচ্ছেটা প্রবল হয় । সারা দিনে ঐ একবারই মন সাংসারিক বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে ধ্যানে মগ্ন হয়, তা সে এক চিলতে কুঠরীতেই হোক আর মুক্ত পরিবেশেই হোক । ধ্যান ভাঙ্গলে আবার বাস্তবের মাটিতে পা, থলে নিয়ে পড়ি মরি করে বাজার । একটা ৫০০ টাকার নোট কয়েক মিনিটেই শেষ, তখন মনে পড়ে গিন্নি যে শুক্তোর বড়ি নিতে বলেছিল । যাক গে । বাড়িতে ব্যাগটা রেখে ভিতরে কি কি  নষ্ট হবার উপাদান আছে তা নিয়ে একটা ব্রিফ নোট শোনাতে শোনাতেই স্নান সারা । যা হোক কিছু একটা মুখে গুঁজেই ব্যাগ কাঁধে বাইকে স্টার্ট । রাস্তায় পান দোকানে একটা ছোট্ট হল্ট দিয়ে সোজ্জা অফিস । বাব্বা যেন স্বর্গে এলাম । অফিসে বস আছে ষ্টাফ আছে ফাইল আছে অ্যাসাইনমেন্ট আছে কোন দিকে না তাকিয়ে মেশিনটা লগ অন করেই বাংলা কবিতা সমূদ্রে দাও ঝাঁপ । এর মাঝে ডেস্কটপের ওয়ার্ড ফাইলে কাল শেষ বিকেলে লেখা অসমাপ্ত কবিতাটিকে কোনক্রমে সমাপ্ত করে সাড়ে দশটা বাজলেই দাও আসরে পোষ্ট করে । যেন ভাল মন্দ দেখার দায়িত্ব আমার নয় পাঠকের । সময় পেলে দু একটা ভালো বা মাঝারি কবিতায় চিরাচরিত মন্তব্য । ফাঁক পেলেই অফিসের দরকারী কিছু কাজ । এর মধ্যেই গোটা চারেক মন্তব্য । মনটা ভাল হয়ে যায়, কাজে স্পৃহা আসে, মনে নতুন কবিতার প্রথম লাইনটার উঁকিঝুঁকি । একটা জরুরী মিটিং সেরেই মন্তব্যের ঘরে কড়া নাড়া । দরজা খুলেই চমকে উঠি - এ যে নাকি সুরে কথা কয় - আবার নিজেকে বলে শেঁওড়া গাঁছের ভুঁত - কাঁচাভুত মহাকালসংহার । এবার ভুতরাও বুঝি কবিতা আসরে রেজিষ্ট্রি করেছে ! ধুত্তোর, আজ আর কবিতাই লিখব না ।