আহা, এত টুকু খাঁচায় এরে মানায় না
সুরেলা ভাষা ছাড়া কথাই যে কয় না
নিয়ে চল এরে বেঁধে ভালো করে
রাখব না হয় ধরে সোনার খাঁচায় ভরে।

ঘটনা টা যা ঘটল ঠিক এরপরে;
ময়না গেল বিদেশী শাসকের
অন্দর মহলে
খাস অন্তঃপুরে;
সুদৃশ্য সুনিপুণ শিল্পীর নিখুঁত
হিরণ্যয় মুড়ে মেহনতে প্রভূত
কষ্টে সৃষ্ট
চক্ষু হয় তৃপ্ত
এমন এক অনুপম মনোময় সুন্দর
মায়াময় খাঁচায় বেড়ায় আর ঘুরে
সেখানেই ওড়ে,
আর প্রাণের গান গায় তারি ভিতরে
শৈশবে শেখানো বাংলা ভাষায়
কণ্ঠটি ছেড়ে।

শাসক বলে বুঝিনে যার এক বর্ণ
বৃথাই ঢেলেছি তাতে অঢেল স্বর্ণ
শেখাও একে বাছা আমাদের ভাষা
সার্থক হবে তবে ধরায় এর আসা।

পাখিটাও হল বড্ড একগুঁয়ে
বারংবার ওঠে একই ভাষায় গেয়ে
এদিকে তা শুনে এদেশি আর্দালি
ঝাঁপি খুলে দেয় ঝুড়ি ঝুড়ি হাততালি।

গফুর মিঞার ছোট্ট ঐ ছেলেটা উপোষ দিয়ে
আকাশ পানে অতৃপ্ত নয়নে থাকে চেয়ে
সেই তো শিখিয়েছিল ছোটবেলায় তারে
বাংলাতে কি ভাবে গান গাইতে হয় সুরে।

হটাত চাইতেই উদ্যানের দিকে
আনন্দে সে লাফায় ক্ষণিকে
আরে ঐ তো আমার পেয়ারের ময়না
পেয়ারা ছাড়া যে আর কিছুই খায়না
বড্ড কাঁপছে জ্বরে থরথর করে
নখ গুলো গেছে পায়ের কাছে ছড়ে
তবুও সে প্রায়
আগের মত গায়
জন্ম হতে শেখা
বাংলা ভাষায় গান
ঊর্ধ্বপানে ওঠা
যেন অগ্নি শিখা
মাতৃভাষায় অম্লান
সে যে রক্তে মেশা
এমনই এক নেশা
বাংলা আমার ভাষা।