নীল-আকাশ চেয়ে থেকে তন্দ্রা হারায়,
প্রতিটি সকাল জাগে শিশির ছুঁয়ায়,
হেসে উঠে সবুজে লালের আভা,
ধানের শিষে ঘেরা সোনালী স্বদেশ।  


কৃষাণ মাটির ঘ্রাণে জমি চষে যায়,
ভ্রমর পরাগ স্নাত গেয়ে মধু খায়,
রূপালি ঝিলিক মাছে জেলের জালে,
কোকিলের কলতানে সুখের আবেশ।


শাপলা মালা গলে দুষ্টু ছেলে,
পাঁতিহাঁস ডুবে-ভাসে শামুক তোলে,
ডানা মেলে উড়ে চলে বালিহাঁসেরা ,
উচ্ছল-চঞ্চলা-বিভুর অশেষ।


দলবেঁধে মাছ ধরে রাখাল জলায়,
কেউবা কাঁদা মেখে হামাগুড়ি খায়,
পুঁটি-শিং-মাগুরের ঝুলছে ঝুলা,  
কেউ নাচে উল্লাসে মাছ ধরা শেষ।    


দু’চালা খড়ের চালে লাউয়ের মাচা,
দোয়েল-চড়ুই-টুনি কবিতা রচে,
মাছরাঙ্গা-চিল-বক নদীর বাঁকে,
এক ঠায় পাহারায় শিকারীর বেশ!  


বাঁধা নেই মাঠে-ঘাটে ঘুরে বেড়াতে,
আনমনা যেন সবে বাড়ি ফিরাতে,
পশু-পাখী কোলাহল গোধূলি বেলায়,
প্রতিদিনই আগামীর রেখে যায় রেশ।


বাবুই গাছের ডালে ঘর বুনে যায়,
কপোতী শালিক উড়ে শান্ত হাওয়ায়,
ডাহুকের রবে মাতোয়ারা বরষা,
কাশফুল সরোবরে সাজানো বিশেষ।


কল-কল-কলতানে নৌকা চলে,
ঘুমায় শিশু দোলে মায়ের কোলে,
উদাসী বাউল মুছে ক্লান্তি সকল,
গৃহিণীর ধুঁয়াতোলা পিঠা-পায়েস।


খেলা-মেলা-হৈচৈ ব্যস্ত সবাই,
রাঙাবউ দীপ জ্বালে সন্ধ্যাবেলায়,
গানে আর উৎসব হৃদয় ভরায়,
গল্প-ধাঁধায় হেসে খেয়ে বলে ‘বেশ’।


আম-বেল-নারকেল পড়ে ধপ ধপ,
শেয়াল-পেচা-বাজ জুড়ে কলরব,                    
স্তব্ধ জোছনা রাতে পাড়া-মোহনায়,
তবু দূরে বাঁশি সুরে কোন প্রতিবেশ।