তোমাদের কলম আর তুলিতে প্রকাশিত হতো-
স্টেনগান,গ্রেনেড,মর্টার শেল কিংবা গুলির কথা।
কাগজে লিখিত অক্ষরগুলি বিদ্রোহ করতো-
মননে আর মগজে, প্রকম্পিত হতো বাংলা'র হৃদয়ে!


ওদের-
পাক হানাদার আর এ দেশীয় দোসরদের,
ছিল শুধু নিশানা, কাপুরুষোচিত আগ্নেয়াস্ত্র,
ট্রিগ্রার টিপে করতে চেয়েছিল মেধাশূণ্য।
কাপুরুষের চোখ যে  রয় নিচে সবসময়,
তাইতো পিছমুড়ে হাত, পা আর চোখ বেঁধে,
চোখে চোখ রেখে চালাতে পারেনি ট্রিগ্রার।


কারণ-
ওরা শব্দের বুলেটে ভয় পেত,কেঁপে উঠতো-
ওরা শ্লোগান কে গ্রেনেড ভাবতো,বড্ড শঙ্কিত হতো-
ওরা বাংলা ভাষার কাছে হেরে যায়, যেতে হয়েছিল।


কবি-
তুমি কি ঘাতকের ট্রিগার টেপার শব্দে ভয় পেয়েছিল?
কিন্তু তোমার কলমে'র ট্রিগার কত নিঃশব্দ ভয়ংকর ছিল,
মৃত্যু যন্ত্রণা ভুলতে ঘাতকের ট্রিগ্রারে কি 'জয় বাংলা' শুনেছিলে?


ডাক্তার-
ঘাতকের ছুরি যখন তোমার গলায়, মৃত্যু যন্ত্রণা ভুলতে,
মেডিকেল সায়েন্সের নতুন কিছু আবিষ্কারের চিন্তায় মত্ত ছিলে?


আইনজীবী-
তোমাকে যখন বাঁধা হলো, তুমি কি আইনের কোন-
সরল পরিভাষা ভাবছিলে বাংলার সাধারণ মানুষের জন্য?


সাংবাদিক-
তোমাকে যখন ঝাঁঝরা করলো বুলেটের পর বুলেট
পকেটে কি মুক্তিযোদ্ধাদের কালভার্ট উড়িয়ে দেয়ার ঘটনা-
স্বাধীন বেতার কেন্দ্রে পৌঁছালো না ভেবে আফসোস করেছিলে!


ইঞ্জিনিয়ার-
তোমার দেহ  যখন বুটের আঘাতে ভাগাড়ে পড়ে যাচ্ছিলো
তুমিই কি নিজের স্মৃতিসৌধের নকশা নিজেই আঁকছিলে?


এভাবেই কি তোমারা অনাকাঙ্খিত মৃত্যু যন্ত্রনা ভুলতে,
বিজয় উল্লসিত স্বাধীন বাংলাদেশের কথা ভাবছিলে?
এরপর বধ্যভূমিতে তোমাদের বিকৃত লাশের পাশে-
তোমাদের লেখা কোন উপন্যাসে বীরেদে'র জায়গায়,
বাংলার মায়ের কোলে নিজেকেই আবিষ্কার করলে,
তোমাদের ত্যাগেই আমাদের পদচারণা স্বাধীন বাংলার মাটিতে।
তোমারা ছিলে বুদ্ধিজীবী বাংলার মায়ের কোলে কিন্তু শহীদ হলে।



*১৪ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে আমার কাঁচা হাতে লেখা একটি কবিতা শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে।